১৯ মার্চ, ২০২৩
ছবি: গত বছর কাজ শুরু করলেও এখন পর্যন্ত শেষ হয়নি রাস্তার কাজ।
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুন্ডা দঃ ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বিশরপাশা থেকে মহিষখোলা সংযোগ সড়কের এগারো শত মিটার রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হলেও অদৃশ্য কারণে বন্ধ হয়ে আছে সংস্কারের কাজ।।যার ফলে চরম ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছে অত্র ওয়ার্ড সহ এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা হাজারো মানুষ।
গত ৮ সেপ্টেম্বর বেশ কয়েকটি পত্র পত্রিকায় মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুন্ডা দঃ ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড চান্দালীপাড়া গুদারা ঘাট থেকে মহিষখোলা বাজার পর্যন্ত এই রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে নড়েচড়ে বসে ছিল উপজেলা এলজিইডি অফিস ও বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষ।
স্থানীয় প্রতিনিধি ও সাংবাদিকদের প্রচেষ্টায় গত সেপ্টেম্বরের ২২ তারিখ রাস্তা সংস্কারের জন্য মালামাল আসতে থাকে এবং ঐ বছরের অক্টোবর মাসের ৮ তারিখ থেকে দুলাশিয়া মোড় থেকে কুতুব বাজার পর্যন্ত রাস্তা পাকা করনের কাজ শুরু হয়। এতে সাধারণ জনমনে স্বস্তি ফিরে আসলেও হঠাৎ করেই কিছু দিন কাজ শুরু হওয়ার পর বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সাধারণ জনমনে হতাশা সহ দুশ্চিন্তার কারন হয়ে দাড়িয়েছে।
রাস্তাটির সংস্কার কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় এতে আরও বেশি ভোগান্তির সম্মুখীন হচ্ছে মহিষখোলা ও দাতিয়াপার থেকে বিশরপাশা ও কলমান্দা গামী রাস্তা ব্যবহারকারীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তা পাকা করনের জন্য দুলাশিয়া মোড় থেকে কুতুব বাজার পর্যন্ত রাস্তা খনন কাজ সম্পন্ন করে বালু দিয়ে ভরাট করা হয়।কুতুব বাজার থেকে রাস্তার ঢালাই কাজ শুরু করে দুই থেকে তিনশত মিটার যাওয়ার পর থেকেই রাস্তার কাজ বন্ধ হয়ে আছে।এমনকি রাস্তা নির্মাণের জন্য ব্যবহত কনস্ট্রাকশন মালামালও নিয়ে গেছে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, যে দিন থেকে রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল এতদিন রাস্তার কাজ শেষ হয়ে যেত। কি কারনে থমকে আছে রাস্তার কাজ তারা কিছুই জানে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, তারা আমাদের সাথে ছিনিমিনি খেলছে, এই রাস্তাটি অনেক আগেই হওয়ার কথা ছিল। চান্দালীপাড়া থেকে দুলাশিয়া মোড় পর্যন্ত যখন পাকা হয়েছিল তখনই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমাদেরকে সহজ সরল পেয়ে তারা ঐ সময় দুলাশিয়া মোড় পর্যন্ত করে বন্ধ করে দেয়। আবার যখন রাস্তার কাজ শুরু হয়েছিল ভেবেছিলাম এবার হয়তো বা রাস্তার কাজ সম্পন্ন হবে। তবে এবার শুনছি মালামালের দাম বাড়ার কারনে না কি রাস্তার কাজ দেরি হচ্ছে। এর সাথে যোগ করে আরও একজন দাবী করেন আমরা শুনতে পারছি এই রাস্তা টি সাব ঠিকাদারের মাধ্যমে করানো হচ্ছে। প্রধান ঠিকাদার দেশের বাহিরে অবস্থান করার কারনে না কি বিল তুলতে পারছে না বলে রাস্তার কাজ হচ্ছে না। মালামাল আনতে ক্যারিং খরচ বেশি পরার কারনে না কি বন্ধ হয়ে আছে রাস্তার কাজ।
গড়াকাটা গ্রামের দেলোয়ার হোসেন নামের এক মোটরসাইকেল আরোহী বলেন, রাস্তা নির্মাণের আগে আমরা অনেক কষ্ট হলেও যাতায়াত করতে পারতাম কিন্তু এখন রাস্তা অর্ধ কাজ ও বালুর কারনে এখন আর এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে পারছি না।
ইজিবাইকের বেশ কয়েকজন যাত্রী বলেন, ‘আমরা এই এলাকার বাসিন্দা। অন্যরা বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু আমাদের সেই উপায় নেই।বিশরপাশা বাজার হতে গড়াকাটা বাজার পর্যন্ত আমরা অটো দিয়ে আসতে পারতাম এখন অটো না চলায় আর যাতায়াত করতে পারছিনা। এখন যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে পায়ে হাটা এছাড়া আমাদের আর উপায় নেই।রাস্তার কাজ শেষ না করায় আমাদের ভোগান্তির সীমা নেই। বাড়িতে খাবারদাবারে ধুলাবালু পড়ে। বিছানাপত্র, বাড়ির আসবাব সব ধুলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেকের শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।
বিশরপাশা হরিশ্চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা বলেন, এই রাস্তার কারনে সবথেকে ভোগান্তি পড়তে হচ্ছে আমাদের। আগে আমরা অটোরিকশা দিয়ে যাতায়াত করতে পারলেও এখন আর পারছি না। এখন আমাদের ৩/৪ কিলোমিটার পথ হেঁটে যাওয়া ছাড়া আর উপায় নেই। যার ফলে এই গরমের মধ্যে নিদারুণ কষ্ট সহ বিদ্যালয়ে যেতে বিড়ম্বনা হচ্ছে।
গড়াকাটা গ্রামের হাজী ফজলুল হক বলেন, রাস্তা নির্মাণের প্রয়োজনীয় মালামালের দাম বৃদ্ধি হওয়ার কারনে রাস্তা নির্মাণ কাজে বিলম্ব হচ্ছে বলে দাবী করেন। তিনি আরও বলেন, আমরা সবসময় রাস্তা নির্মাণকাজে সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ করছি। আশা করছি অতিদ্রুত রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করলে হাজারো মানুষের চলাচলের অনুপযোগী রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী হবে।
এ ব্যাপারে ঠিকাদার বিল্লাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মুঠোফোনে ব্যস্ততা দেখিয়ে বলেন, আমি একটু ব্যস্ত আছি এ বিষয়ে পরে কথা বলবে বলে জানানো হয়।
এ বিষয়ে এলজিইডির ধর্মপাশা উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী, জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সাধারণ জনগনের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে আমরাও দ্রুত কাজটি সম্পন্ন করার জন্য ঠিকাদারকে চাপ প্রয়োগ করছি।ঠিকাদার কে বিল দেওয়া হচ্ছে না এমন টা সঠিক নয়। অন্য কোন কারনে কাজ বন্ধ হয়ে নেই। ঠিকাদার মালামাল পৌঁছাতে বিলম্ব করছে বলে এমনটি হচ্ছে। তবে অতি দ্রুত কাজটি সম্পন্ন করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।
এ বিষয়ে মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান খান বলেন, এ বিষয়টি আমি অবগত ছিলাম না তবে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
Good news
Good