০৩ নভেম্বর, ২০২৪
ছবি: কক্সবাজার বাজারের ইলিশ মাছের
আজ মধ্যরাতেই শেষ হচ্ছে সাগর ও নদীতে মাছ ধরার ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। তাই শেষ সময়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। ট্রলার মেরামত, রং করা, ধোয়া-মোছা ও জাল বুনাসহ ট্রলারে তুলছেন আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম। এভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা।
জেলেসহ মৎস্য সংশ্লিষ্টদের আশা, এবার তাদের জালে ধরা পড়বে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। তবে নিষেধাজ্ঞার ২২ দিনে সরকারি প্রণোদনার চাল প্রকৃত জেলেরা পায়নি বলে দাবি তাদের। এছাড়া মৌসুমজুড়ে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা না পড়ায় ২২ দিনে কর্মহীন অনেক জেলে হয়ে পড়েছেন ধারদেনায় জর্জরিত।
জেলেরা জানান, ২২ দিন কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তারা। সংসারে খরচ যোগাতে অনেকেই অটোরিকশা চালিয়েছেন। নিষেধাজ্ঞার সময় ২৫ কেজি করে চাল পেয়েছেন। কিন্তু একটা পরিবারের এ-ই বরাদ্দ অপ্রতুল। অনেকে দেনা নিয়ে পড়েছেন আর-ও বেকায়দায়। সরকারের কাছে প্রণোদনার চাল বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন জেলেরা।
সমিতি পাড়া এলাকার জেলে সৈয়দ নুর বলেন, ২২ দিন বন্ধের আগেও পর্যাপ্ত মাছ ধরা পড়েনি। তিনি আশা করছেন নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে ইলিশ পাওয়া যাবে।
জেলে মোহাম্মদ করিম বলেন, সরকারি প্রণোদনার তালিকায় প্রকৃত অনেক জেলের নাম নেই। যাদের জেলে কার্ড হয়েছে এদের অনেকেই মারা গেছেন। তাদের চালগুলো কারা নিচ্ছে ? তিনি বলেন, জেলে কার্ড সংশোধন করতে হবে। যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত জেলেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
জেলে মোহাম্মদ আবছার বলেন, রোববার রাতে আমরা গভীর সাগরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবো। ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। ট্রলারে জাল ও বরফসহ আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম তুলছি।
ইলিশের বাধাহীন প্রজননের জন্য গত ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন সাগর ও নদীতে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মৎস্য অধিদপ্তর। এ সময় সামুদ্রিক মাছ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ ছিল। ২২ দিনের অবরোধ সফল করতে তৎপর ছিলো মৎস্য বিভাগসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সাগর ও নদীতে অভিযান চালিয়ে অনেক জেলেকে জরিমানা ও কারাদণ্ড দিয়েছে মৎস্য বিভাগ।
জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৬৬ হাজার ১০৯ জন। অবরোধ চলাকালে প্রত্যেককে ২৫ কেজি করে সরকারি প্রনোদনার চাল দেওয়া হয়েছে। অবরোধ শতভাগ সফল করতে সাগর ও নদীতে অভিযান পরিচালনা করেছেন। গত শুক্রবার বাকখালী, নাজিরারটেক ও সোনাদিয়া মোহনায় অভিযান পরিচালনা করে ২টি ফিশিং বোট, ১ টি বেহুন্দি জাল ও অবৈধ ভাবে বন্ধকালীন সময়ে বরফ পরিবহনের দায়ে ১টি গাম বোট আটক করা হয়। এর আগে অবৈধ ভাবে বন্ধকালীন সময়ে বরফ পরিবহনের দায়ে ৪ টি বোট আটক করে এবং ২ টি বরফ কল ৩ নভেম্বর পর্যন্ত উৎপাদন ও বিক্রি বন্ধসহ ৮৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: বদরুজ্জামান জানান, জেলেরা আগের চেয়ে অনেক সচেতন হয়েছে। আমাদের অভিযানের কারনে কেউ সাগরে যেতে চাইলেও সাহস করেনি। আমরা কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেছি। জাল, বোট,বরফ জব্দ করে জরিমানা করা হয়েছে।
জেলা বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো দেলোয়ার হোসেন বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেদের যে চাল দেওয়া হয় তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। প্রণোদনার চাল আর-ও বাড়াতে হবে। এছাড়া পুরোনো জেলে কার্ডে সংশোধন করতে হবে। প্রকৃত হাজার হাজার জেলেরা কার্ড পায়নি। তাঁদের নতুন কার্ডের আওতায় আনতে হবে।
Good news
Good