০৮ অগাস্ট, ২০২৩
ছবি: ভোলাহাটে মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগের ৩০ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় তালাবদ্ধ সুপার ও সহ-সুপারকে দেখতে ভিড় করছে স্থানীয় জনগণ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে চতুর্থ শ্রেণির তিনটি শূন্য পদের নিয়োগে ৩০ লাখ টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগে মাদ্রাসা সুপার ও সহ-সুপারকে অফিস কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখেন স্থানীয় লোকজন। ৭ আগষ্ট সোমবার উপজেলার ময়ামারি দাখিল মাদ্রাসায় এই ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এসে ওই দুজনকে উদ্ধার করে। অবরুদ্ধ দুজনকে উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মোঃ ইকবাল পাশা। তিনি বলেন, ‘সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেয়ার পর অবরুদ্ধ মাদ্রাসা সুপার ও সহ-সুপার পুলিশের মাধ্যমে মুক্ত হন।’
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, চতুর্থ শ্রেণির ৩টি শূন্য পদে নিয়োগের টাকা মাদ্রাসার উন্নয়ন তহবিলে জমা দেয়ার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। মাদ্রাসার সভাপতি মোঃ মোসলেম উদ্দিন ও সুপার মোঃ নুরুল ইসলাম ৩০ লাখ টাকার মধ্যে মাত্র সাড়ে ৪ লাখ টাকা মাদ্রাসার তহবিলে জমা দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আজ (সোমবার) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাদ্রাসার সুপার মোঃ নুরুল ইসলাম ও সহ-সুপার মোঃ আজিজুল ইসলামকে অফিস কক্ষে তালা মেরে অবরুদ্ধ করে রাখেন এলাকার লোকজন। এ সময় মাদ্রাসার উন্নয়নে কাজ করার জন্য মাদ্রাসার তহবিলে বাকি টাকা জমা দেয়ার দাবি জানান তাঁরা।
স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ আব্দুল হালিম টুটুল বলেন, ‘তিনটি পদে নিয়োগ দিতে তৎপরতা শুরু করেন মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি, মাদ্রাসার সুপার ও সহ-সুপার। গত ২৭ মে ৩ প্রার্থীর কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা নিয়ে নিয়োগ দেন তাঁরা। নিয়োগের টাকা মাদ্রাসার উন্নয়নের কথা বলে নেয়া হয়েছে।’
মোঃ আব্দুল হালিম টুটুল আরো বলেন, ‘কয়েক দিন আগে স্থানীয় লোকজন মাদ্রাসার সুপারের কাছে নিয়োগের টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় নেন তিনি। আজ (সোমবার) আমরা সুপারের কাছে জানতে চাইলে সুপার বলেন, “আমি পারবো না কমিটি আমার কথা শোনে না। তাই তাঁকে ও সহ-সুপারকে অফিসে তালা মেরে অবরুদ্ধ করা হয়।”
মোঃ সাইরুল ইসলাম নামের আরেক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা মাদ্রাসার দাতা সদস্য। এখনো মাদ্রাসা আমাদের প্রায় ১৫ লাখ টাকার জমি কাগজপত্র ছাড়াই ভোগ করছে। জমির বিনিময়ে আমার ছোট ভায়ের চাকরি দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু কমিটি টাকার বিনিময়ে অন্যজনকে নিয়োগ দিয়েছে এবং আমাদের জমিও বুঝিয়ে দিচ্ছে না। ওই টাকা মাদ্রাসার ব্যাংক হিসাবে জমা দেয়ার কথা থাকলেও তাঁরা দেননি।’
এ বিষয়ে মাদ্রাসা সুপার মোঃ নুরুল ইসলাম ও সহ-সুপার মোঃ আজিজুল ইসলাম কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোঃ মুসলিম উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে সংবাদ প্রচার না করার অনুরোধ জানান।