০৪ ডিসেম্বর, ২০২২
ছবি: নদী ভাঙনের শিকার পরিবারের দৃশ্য
নদ'গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে
বসত ভিটা-ফসলী জমি বাস্তুহারা হয়ে মানবেতরের সহিত জীবন যাপন করছেন। প্রায় এক হাজার পরিবার। ভুক্তভোগীরা আশ্রয়ের সন্ধানে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ব্রহ্মপুত্র নদের তীব্র ভাঙনের শিকার হয়ে বসত ভিটা হারিয়ে। বাস্তুহারা হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার। গতকাল রবিবার ৪ ডিসেম্বর সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর আগ্রাসনে গত
৫ মাসের ব্যবধানে বাস্তুহারা হয়েছে ওই এলাকার অন্তত ১ হাজার মানুষ। এছাড়াও, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মোল্লারহাট (কড্ডার মোড়) আংশিক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গনের মুখে পড়ে শতাধীক বাড়ী-ঘর
সরিয়ে নিয়েছেন তাদের কোন জায়গা জমি না থাকায় কোথায় থাকবে এচিন্তায় ঘুম হয় না। বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মোল্লারহাট সংলগ রসুলপুর, সরকার পাড়া ও ভূগোলের কুটি, গ্রামে বাস্ত হারা হয়ে অনেক পরিবার অন্যের বাড়িতে কেউ আবার বিভিন্ন চরে মানবতার জীবন যাপন করছেন। তাদের বসতভিটা, গাছপালা, আবাদি জমি, কবরস্থান ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে । থাকার জায়গা নাই।
স্থানীয় মোকদম আলী (৭০) বলেন নয় বছরে তিনবার, বাড়ি ভিটা বিলীন হয়ে গেছে। এখন কোথায় আশ্রয় নেব জায়গা নেই। অতি কষ্টে আছি।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে একই কথা বললেন, ঐ এলাকার পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সী হাসান আলি দর্জি ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে সর্বহারা হয়ে এখন ফকির হতে হয়েছে। পাশাপাশি আত্মীয়র বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। ভুক্তভোগী, এরশাদুল, আব্দুল খালেক, পাষাণ, সোনাউল্লা, রুবেল, মজিবর, আব্দুল মান্নান ফকির , দুলাল ফকির,সেকেন্দার, আব্দুল বারেক ফকির, রফিকুল ইসলাম, মহুবর, আজিজুল হক সহ অনেকে জানান আমরা পৈতৃক বসত ভিটা হারিয়ে নিরুপায় হয়ে আছি। সকলের বসত ভিটা নদীর বুকে দেখান। তাছাড়া বলেন আমাদের থাকার জায়গা নেই। সরকারি বা বেসরকারি ভাবে কোন প্রকার সাহায্য সুবিধা এ পর্যন্ত পাইনি। ব্রহ্মপুত্রের ও ধরলার ভাঙনে বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড, ৪ নম্বরওয়ার্ড ২নং ওয়ার্ড ৩ নং ওয়ার্ড ৬ নং ওয়ার্ড এবং ৫ নং ওয়ার্ড বেশির ভাগ অংশ মানোচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে। গত পাঁচ মাসে অন্তত সহস্রাধিক পরিবার বাস্তুহারা হয়েছে। আবাদি জমি বিলীন হয়েছে অন্তত দুই হাজার একর।
বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বাবলু মিয়া বলেন আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর, ইউনিয়নে ‘গত পাচ মাসে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার ভাঙনে প্রায় ১ হাজার পরিবার বাস্তুহারা হয়েছে। বর্তমানে তাদের কোন পূর্ণবাসনের ব্যবস্থা করা হয়নি। ভাঙ্গন রোদে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ও ক্ষতিগ্রস্তদের পূর্ণবাসনের জন্য কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম জানান, ক্ষতিগ্রস্ত বাস্তহারা পরিবারের তালিকায় ইতিপূর্বে জমা দেওয়া হয়েছে ।হাল নাগাদ তালিকা তৈরি করা হয়েছে চেয়ারম্যান কর্তৃক উপজেলা পর্যায়ে জমা দেওয়া হবে।