৩০ এপ্রিল ২০২৫
হোম স্বাস্থ্য সারাদেশ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি ও বাণিজ্য খেলাধুলা বিনোদন আন্তর্জাতিক ধর্ম ও জীবন লাইফ স্টাইল শিক্ষা প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান পরিবেশ চাকরি বা ক্যারিয়ার মতামত আইন-আদালত কৃষি ও প্রযুক্তি বিশেষ সংবাদ অপরাধ সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিশ্বকাপ ফুটবল
সারাদেশ / কৃষি ও প্রযুক্তি

সুন্দরগঞ্জের ছয়ঘরিয়া গ্রাম পানের স্বর্গরাজ্য

১০ ডিসেম্বর, ২০২২

মো:তৌহিদুল ইসলাম,
পলাশবাড়ী উপজেলা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি

ছবি: পান বাছাই করেছে কৃষকরা।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কঞ্চিবাড়ি ইউনিয়নের এ গ্রামটির অবস্থান। ছয়ঘরিয়াকে বলা হয় পানের স্বর্গরাজ্য। 

গ্রামে ঢুকতেই চোখে পড়ে সারি সারি পানের বরজ। গ্রামের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে কেবল পান আর পান। কমপক্ষে সাড়ে তিন'শ পানের বরজ রয়েছে সেখানে। গ্রামের সাড়ে তিন'শ পরিবারের সবাই কোনো কোনোভাবে পান চাষের সঙ্গে যুক্ত। পান চাষের আয় দিয়েই চলে হাজার পরিবারের সংসার। পান চাষে তারা ঘুরিয়েছে ভাগ্যের চাকা। একই সঙ্গে পানের দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। 

গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের বাসিন্দাদের কেউ পান বরজের পরিচর্যা করছেন। কেউ বা পরিপক্ক বরজ থেকে পান সংগ্রহ করে বাড়ির উঠানে এনে জড়ো করে রাখছেন। সেখানে পরিবারের সদস্যরা পান বাছাই করে আলাদা করে রাখছেন।

জানা যায়, প্রায় দুই যুগ আগে এ এলাকায় দেশিয় জাতের পানের চাষ হতো। কিন্তু  প্রতিযোগিতার বাজারে সেই পান টিকতে পারেনি। সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলো এলাকায় নদী ভাঙন। আর এ দুই কারণে টানা পাঁচ বছর পান চাষ হয়নি এ এলাকায়। 

পরে ২০০৩ সালের দিকে তালতলি ও বিক্রমপুরি এ দুই জাতের পান দিয়ে আবারও শুরু হয় পান চাষ। এরপর থেকে অধিক পরিমাণ পান উৎপাদন করে লাভের মুখ দেখে তারা। ধীরে ধীরে কৃষক-শ্রমিক সকল পরিবারে ফিরে এসেছে আর্থিক স্বচ্ছলতা। বর্তমানে ছয়ঘরিয়া গ্রামের উৎপাদিত পান স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে জেলার বাহিরে। 

চাষিদের অভিযোগ, এ বছরে সারের সংকটে পান আবাদে হিমসিম খেতে হচ্ছে। কৃষি বিভাগের কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে জানান। পান চাষে টিকে রাখতে হলে টিএসপি সারের দাম কমানোসহ পর্যাপ্ত সরবরাহের ব্যবস্থা থাকা দরকার বলে কৃষকদের অভিমত।

পানচাষি খলিল মিয়া ও আমজাদ হোসেন বলেন, পানের বরজ থেকে সারা বছরই পান সংগ্রহ করা যায়। তবে শীতকালে তুলনামূলক কম পান উৎপাদন হয়। কারণ শীতকালে পান পাতা বাড়ে কম। এ সময় উৎপাদন কম হলেও বাজারে পানের দাম থাকে বেশি।

মমিনা বেওয়া নামের এক নারী জানান, কয়েক বছর আগে তার স্বামী মারা গেছে। পান বিক্রি করেই দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। বড় ছেলে দিনাজপুর হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেজো ছেলে গাইবান্ধা সরকারি কলেজে অনার্স এবং ছোট ছেলে এবার এসএসসি দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমার বসতবাড়িসহ মোট জমি ৪০ শতক। এর মধ্যে ১৭ শতকে পানের বরজ রয়েছে। প্রতি সপ্তাহে বাজার থেকে পান সংগ্রহ করা হয়। যা বিক্রি হয় ৪-৫ হাজার টাকা। তবে বর্ষাকালে আরও বেশি পান তোলা যায়। মূলত পান বিক্রির অর্থ দিয়েই আমার সংসার ভালো চলছে।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. রাশিদুল কবির বলেন, অন্যান্য ফসল আবাদের তুলনায় পান চাষ অত্যান্ত লাভজনক। ওই গ্রামের কৃষকদের লাভবান করতে সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

Related Article