৩০ এপ্রিল ২০২৫
হোম স্বাস্থ্য সারাদেশ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি ও বাণিজ্য খেলাধুলা বিনোদন আন্তর্জাতিক ধর্ম ও জীবন লাইফ স্টাইল শিক্ষা প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান পরিবেশ চাকরি বা ক্যারিয়ার মতামত আইন-আদালত কৃষি ও প্রযুক্তি বিশেষ সংবাদ অপরাধ সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিশ্বকাপ ফুটবল
স্বাস্থ্য / জাতীয়

একই ঔষধ পরিমানও একই পার্থক্য শুধু দামের

২৫ অক্টোবর, ২০২২

মোঃ আলমগীর হোসেন,
নওগাঁ জেলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি

ছবি: ঔষধ

পাইকারি বাজারে কিটোরোলাক ১০মিলিগ্রাম একটা ট্যাবলেট ১টাকা থেকে ১১টাকা পর্যন্ত। প্যাকেটের দাম ১২টাকা। ৫০০ এম,জি সিপ্রোফ্লকসাসিন ট্যাবলেট ৩ টাকা থেকে ১৩ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়।

দৈনন্দিন জীবনযাপনে ঔষধ একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। এই পণ্যের বাজার এখন বাংলাদেশের একটি বৃহৎ বাজার। তাছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারি পন্যের মধ্যে ঔষধ বর্তমানে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। রপ্তানিতে শীর্ষে থাকা ঔষধ পণ্যের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চলছে ১৯৮২সালে প্রণীত ঔষধ আইনে।
বাজারে প্রচলিত আছে প্রায় তিনশো এর অধিক ঔষধ প্রস্তুতকারি কোম্পানি। একই প্রিপারেশনের ঔষধ অনেক কোম্পানি তৈরি করে। বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন রকম নাম। খুচরা বিক্রয় মূল্য প্রায় কোম্পানির একই। পাইকারি ঔষধ বাজারে ঘুরে দেখা গেছে তিন টাকা থেকে শুরু করে তেরো টাকা পর্যন্ত একটি এ্যান্টিবায়োটিক সিপ্রোফ্লকসাসিন ৫০০এমজি ট্যাবলেট পাওয়া যায়।   কিটোরোলাক ১০ এমজি ট্যাবলেট যার প্রতিটি ট্যাবলেটের খুচরা বিক্রয় মূল্য ১০ টাকা থেকে ১২ টাকা প্যাকেটের গায়ের মুল্য অনুযায়ী। কিন্তু পাইকারী বাজারে ১টাকা থেকে শুরু করে ১১টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়। সিপ্রফ্লকসাসিন জাতীয় ঔষধ প্রতিটি ট্যাবলেটের খুচরা বিক্রয় মূল্য ১৫ টাকা। এছাড়া বহুল ব্যবহৃত এ্যান্টিবায়োটিক এ্যাজিথ্রোমাইসিন ৫০০ এমজি ট্যাবলেট বেশিরভাগ কোম্পানির খুচরা বিক্রয় মূল্য ৩৫ টাকা। অথচ পাইকারি বাজারে দশ বারো টাকা। একই ধরনের ঔষধ আবার একই পরিমান কিন্তু দামের এতো পাথক্য কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে এক পাইকারি ঔষধ ব্যবসায়ি বলেন, ”পেট খারাপ হলে সিপ্রোফ্লক্সাসিন দিলেও রোগী ভালো হয়, আবার মেট্রোনিডাজল দিলেও ভালো হয়। হতেপারে গায়ে লেখা আছে সিপ্রোফ্লক্সাসিন কিন্তু এর মধ্যে আছে মেট্রোনিডাজল। আবার এমনও হতে পারে গায়ে দেওয়া আছে ৫০০এমজি কিন্তু ট্যাবলেটের ভিতর আছে ১০০এমজি উপাদান। তাছাড়া এতো দামের পার্থক্য হয় কি করে?কোম্পানির মালিকদের কাছে যান আসল ঘটনা তারাই বলতে পারবেন।

কম দামের ঔষধের ক্রেতা সাধারণত কারা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের পল্লী চিকিৎসকরা কম দামের ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন বেশি।" প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষগুলো তাদের কাঙ্কিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পল্লী চিকিৎসরা রোগীকে দ্রুত সুস্থ করার জন্য এসকল কম দামের ঔষধ ব্যবহার করেন। আবার এই পল্লী চিকিৎসকগণ অনুমতি ছাড়াই এ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। শুধু মান্দা নয় পুরো বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এই ভোগান্তির স্বীকার। ১০ টাকা খরচ করে সাধারন মানুষ পাচ্ছে ১টাকা মুল্যমানের সেবা।

ভোক্তা অধিকার আইন, রাষ্ট্র, ঔষধ প্রশাসন, এনজিও সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে, কিভাবে এবং কেমন করে ভোগান্তির স্বীকার প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারন মানুষের স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান করা যায় এবং সঠিক মূল্য মানের সেবা দেওয়া যায়। মাত্রাতিরিক্ত মুনাফার লোভে দেশের সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারনা করছি।

Related Article