২৪ ডিসেম্বর, ২০২২
ছবি: সম্মেলনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
স্মার্ট বাংলাদেশ উপযোগী করে দেশের অর্থনীতি ‘ই-ইকোনমি’ হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ২২ তম জাতীয় সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, যে যে দলই করুক, যিনি মুক্তিযোদ্ধা তিনি সম্মানীয় এটাই আমরা করেছি।
এ সময় বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন সরকার প্রধান।
তিনি বলেন, যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। ওই ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ করেন। তাদেরকে উস্কানি দেয়া বন্ধ করেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ইতিমধ্যে আমরা ১০ টি জেলা ছাড়া বাকি জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন সম্মেলন করতে পেরেছি। রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা গঠনতন্ত্র মেনে কার্যক্রম করতে পেরেছি।
নিজের জীবদ্দশায় বাংলাদেশের স্বার্থ কখনো নষ্ট হতে দেবেন না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন ‘বাংলাদেশে এতটুকু স্বার্থ আমার জীবন থাকতে নষ্ট হবে না। কারো হাতে তুলে দেব না। আমার এই প্রতিজ্ঞাই ছিল। হয়তো সে কারণে আমরা আবার আসতে পারিনি। তাতে আমার কোনো আফসোস নেই।’
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘খালেদা জিয়া ভোট চুরি করে নিজেকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু কারও ভোট চুরি করলে বাংলাদেশের মানুষ তা মেনে নেয় না। এদেশের মানুষ মেনে নেয়নি। তখন গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল, আন্দোলন হয়েছিল। খালেদা জিয়া ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল। আর ৩০ মার্চ পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিল। বাংলার জনগণ তাকে বাধ্য করেছিল।’
টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই দেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও যুদ্ধের জের ধরে দেয়া নিষেধাজ্ঞায় অর্থনৈতিক সংকটের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্ব ক্ষতিগ্রস্ত। উন্নত ধনী দেশগুলো আজকে অর্থনৈতিক মন্দায় ভুগছে। বাংলাদেশে আমরা এখনও আমাদের অর্থনীতি সচল রাখতে পেরেছি। কিন্তু তারপরেও এর আঘাতটাতো আমাদের ওপরে আসবে।’
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর দেশের মানুষের ওপর আবার শোষণ, বঞ্চনা শুরু হয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা কী চেয়েছিলেন? তিনি চেয়েছিলেন, এ দেশটি হবে ক্ষুধা-দারিদ্র মুক্ত সোনার বাংলাদেশ। অর্থ্যাৎ প্রতিটি মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা এই সুযোগটা তিনি করে দিয়ে এদেশটাকে উন্নত সমৃদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। দুর্ভাগ্যের বিষয় তিনি তা পারেননি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাধীনতা যাতে ব্যর্থ না হয়, স্বাধীনতার সুফল যেন বাংলার মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছায়, তৃণমূলের মানুষ যেন সেই সুযোগ পায়, সেটা নিশ্চিত করাই ছিল আমার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সরকার গঠন করার পর থেকে এই বাংলাদেশকে আমরা কিন্তু এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছি।’
শেখ হাসিনার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষ হয়।
বেলা তিনটায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে বসবে কাউন্সিল অধিবেশন। শুরুতে বর্তমান নির্বাহী কমিটির মুলতবি বৈঠক হবে। এরপর নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন মঞ্চে আসবে। শুরু হবে নেতা নির্বাচন।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পৌঁছান। জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত এবং শান্তির প্রতীক পায়রা ওড়ানোর মধ্যে দিয়ে তিনি উদ্বোধন করেন এই সম্মেলনের। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এসময় শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিলেন। ‘জয় বাংলা’, জয় বঙ্গবন্ধু’, স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে সম্মেলনস্থল।
সম্মেলনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সেই সঙ্গে ৮৭টি সাংগঠনিক ইউনিটের পক্ষ থেকেও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
কাউন্সিলর ও ডেলিগেটরা সকাল ৭টা থেকে সম্মেলনস্থলে আসতে শুরু করেন। সকাল ৮টার পর থেকে দীর্ঘ সারি তৈরি হয় সম্মেলনে প্রবেশের প্রতিটি গেটে।