০৯ ডিসেম্বর, ২০২২
ছবি: নাইটিঙ্গেল মোড়ে ব্যারিকেড বসিয়েছে পুলিশ। (গত বৃহস্পতিবার তোলা ছবি)
রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকার প্রবেশমুখগুলোতে ফের ব্যারিকেড বসিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার সকাল থেকে নাইটিঙ্গেল ও ফকিরাপুল মোড় দিয়ে যৌক্তিক কারণ ছাড়া ভেতরে কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না পুলিশ। বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর পুরো নয়াপল্টন নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ।
গত বুধবার নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিকেল পৌনে ৩টার দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সংঘর্ষ চলে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। এ ঘটনায় ‘ছররা’ গুলিতে মকবুল নামে এক যুবক নিহত হন। মকবুল নিজেদের কর্মী বলে দাবি করছে বিএনপি। এ ঘটনায় আহত হন এক পুলিশ সদস্য ও এক গণমাধ্যমকর্মীসহ অর্ধশতাধিক। এ সময় দলটির বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতাসহ তিন শতাধিক নেতা-কর্মীকে আটক করে পুলিশ।
১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ সামনে রেখে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বুধবার সকাল থেকেই নেতা-কর্মীরা উপস্থিত হন। সকালে তারা দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে জড়ো হতে থাকেন। দুপুরের দিকে জমায়েত বড় হয়। এ সময় সড়কের এক পাশে যান চলাচল বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে চাইলে উভয় পক্ষের মধ্যে বিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে। তখন বিএনপির নেতা-কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পুলিশও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
সংঘর্ষের পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তল্লাশি চালিয়ে দলটির অনেক নেতা-কর্মীকে আটক করে পুলিশ। সেখান থেকে চাল, খিচুড়ি, ১৫টি ককটেলের পাশাপাশি বোতলজাত পানি ও টাকা উদ্ধারের কথা জানায় পুলিশ। পরে উদ্ধার করা ককটেল বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বিস্ফোরণ ঘটায় পুলিশের বোম ডিসপোজাল ইউনিট।
সংঘর্ষের ঘটনায় গত বুধবার পুলিশ বাদী হয়ে পল্টন ও মতিঝিল থানায় মামলা করেছে। মামলায় ৪৭৩ জনকে এজাহারনামীয় আসামি ও দেড় হাজার থেকে দুই হাজার জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্ত্রী রাহাত আরা সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডিবি পুলিশ বাসার আশপাশে গাড়ি নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকেই অপেক্ষমাণ ছিল। রাস্তার লাইটও বন্ধ করে দিয়েছিল। বাসার নিচের লোকদের সঙ্গে খারাপ আচরণও করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব বেশ রাত করেই বাসায় ফিরেছেন। শরীরটা তার ভালো ছিল না। তাই এসে সঙ্গে সঙ্গেই ঘুমিয়ে যান। পরে ওরা (ডিবি) আসলে কিছু ওষুধপত্র নিয়ে চলে যান।’
মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাসের অভিযোগ, সমাবেশের ভেন্যু পরিদর্শন শেষে বাসায় জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মির্জা আব্বাস। পরে নেতারা বাসা থেকে বের হয়ে গেলে সাদা পোশাকের পুলিশ একটি গাড়িতে করে তাকে নিয়ে যায়।
তবে এখনো ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে কিছুই জানানো হয়নি।