৩০ এপ্রিল ২০২৫
হোম স্বাস্থ্য সারাদেশ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি ও বাণিজ্য খেলাধুলা বিনোদন আন্তর্জাতিক ধর্ম ও জীবন লাইফ স্টাইল শিক্ষা প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান পরিবেশ চাকরি বা ক্যারিয়ার মতামত আইন-আদালত কৃষি ও প্রযুক্তি বিশেষ সংবাদ অপরাধ সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিশ্বকাপ ফুটবল
অপরাধ

নওগাঁয় স্বামী ও  পরিবারের লোকজন মিলে গৃহবধূকে  নির্যাতনের অভিযোগ

০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

রইচ উদ্দীন আহম্মেদ,
মান্দা উপজেলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি

ছবি: নির্যাতিত গৃহবধু

নওগাঁর সদর  উপজেলার বলিহার ইউনিয়নে এক গৃহবধূকে  অমানুষিক ভাবে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।  ভুক্তভোগী গৃহবধূর  তার স্বামী, শ্বশুর ও দুই ননদী মিলে দুই হাত রশিতে বেঁধে তাকে বেধড়ক মারধর করেছেন।

গত শনিবার  দুপুরে ইউনিয়নের মাখনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে  গ্রামের লোকজন ঘটনা দেখতে পেয়ে তাদের হাত থেকে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে। তার বাবা কে ফোনে জানায় ঘটনাস্থলে তার বাবা উপস্থিত হয়ে   মেয়েকে উদ্ধার করে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স  ভর্তি করেন।

ভুক্তভোগী গৃহবধূর নাম মাহফুজা বেগম (৩৫)। তার স্বামীর নাম মোঃ মামুন সরদার  (৩৯), শ্বশুর সাওার সরদার এবং দুই ননদী  মোছাঃ মাহমুদা (৩০)ও মোছাঃ পরি (৩৩)। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গৃহবধূর বাবা বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে শনিবার রাতে ভীমপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র নওগাঁয় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। 

ভুক্তভোগী গৃহবধূ জানান, তার ২০ বছরের সংসারে দুই সন্তান রয়েছে। গত দুই বছর থেকে তার স্বামী মামুন সরদার কোন কাজ কর্ম করেন না বাবার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসতে বলে  ভুক্তভোগীর স্বামী।  তার বাবা একবার দোকান করার জন্য ৪ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা দিয়েছিল দোকান ও বেঁচে খেয়ে ফেলেছে আবার ওর দোকান করবে বলে এক লক্ষ পঁচিশ হাজার টাকার দাবি করে। তার শ্বশুর-শাশুড়ি, চাচা শ্বশুর ও ননদীরা ও অশ্লীল কথাবার্তা সহ লাঞ্ছিত করে টাকা দিতে অস্বীকার করলে  এরপর থেকে তার ওপর নির্যাতন বাড়তে থাকে। এর জের ধরে গত তিন-চার দিন থেকে তাকে ধারাবাহিক নির্যাতন করা হচ্ছিল। শনিবার স্বামী, শ্বশুর ও ননদীরা মিলে বাঁশের খুঁটির সঙ্গে তার দুই হাত বেঁধে মারতে থাকে

এবং নাক ফুল জুর করে খুলে নেই তার স্বামী  এবং ডান হাতে ও পায়ে লোহার রড দিয়ে থেতলিয়ে রক্তাক্ত ও মাথায় প্রচুর আঘাত করে ।

তিনি আরও জানান, এ সময় তার শ্বশুর কীটনাশক ও গোবর নিয়ে তাকে জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। নির্যাতনে তার শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম হয়। নির্যাতনের কষ্টে চিৎকার করতে থাকলে স্বামী আরও পেটাতে থাকেন। তার শাশুড়ি, চাচা শ্বশুর ও দুই ননদী ঘটনাস্থলে থাকলেও নির্যাতন না থামিয়ে তারাও মারতে  থাকেন। বাড়ির গেট লাগিয়ে নির্যাতন চালানোর কারণে বাইরে থেকে কেউ এগিয়ে আসতে পারেনি। সবাইকে ছিটকে ফেলে বাইরে বের হলে প্রতিবেশীদের কাছে যাই  সেখান থেকে  তাকে উদ্ধার করে তার বাবার হাতে দেয় স্হানীয়রা সেখান থেকে  হাসপাতালে নিয়ে যায়। 

  

মাহফুজা  বলেন, ‘আমার স্বামী, শ্বশুর ও ননদীরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ  করে ও পেটাতে থাকেন। তারা আমাকে পেটায় আর বলে তোর বাপকে ডাক। শ্বশুর নিজে আমার চুল ধরে পেটাতে থাকে ।  পশুকেও এমন নির্যাতন করে না কেউ।  আমি এই নির্যাতনের বিচার চাই।’

স্ত্রীকে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত মামুন সরদার তবে তার দাবি, তিনি নিজে স্ত্রীকে পেটালেও তার বাবা ও ননদী  স্পর্শ করেননি।

মামুন সরদার  বলেন,  আমার বোন কে গালিগালাজ  করছে এ জন্য তাকে বেঁধে রেখে মেরেছি। এতে আমার জেল ফাঁসি যাই হয়, হোক।’

তবে মাহফুজা তার স্বামীর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন ওদের কাউকে গালিগালাজ করি নাই তারা টাকার জন্য বিভিন্নভাবে আমাকে অত্যাচার করে এর আগেও একবার চেয়ারম্যানের কাছে আমার বাবা বিচার দিয়েছিলো কয়েকদিন থেমে থাকার পরও  আবার ও টাকার জন্য মারধরু করে। ওরা যা বলছে এটা তাদের সাজানো গল্প।’

ভিমপুর তদন্ত কেন্দ্রের কর্মকর্তা  মোঃ মাহাবুর আলম  জানান,  একটা অভিযোগ পেয়েছি  অভিযোগে  প্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে  সম্পূর্ণ সত্যতা  পেলে তাদের আইনের আওতায়  নিয়ে বিচারের ব্যবস্থা নেওয়া  হবে।

Related Article