১৭ Jun ২০২৫
হোম স্বাস্থ্য সারাদেশ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি ও বাণিজ্য খেলাধুলা বিনোদন আন্তর্জাতিক ধর্ম ও জীবন লাইফ স্টাইল শিক্ষা প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান পরিবেশ চাকরি বা ক্যারিয়ার মতামত আইন-আদালত কৃষি ও প্রযুক্তি বিশেষ সংবাদ অপরাধ সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিশ্বকাপ ফুটবল
পরিবেশ / সারাদেশ

নওগাঁর মান্দায় বন্যায় পাঁজরভাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পানি শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত

২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

রইচ উদ্দীন আহম্মেদ,
মান্দা উপজেলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি

ছবি: পাঁজরভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাঠ এখন হাঁটুপানিতে

গত কয়েক দিন অবিরাম বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারনে মান্দা উপজেলায় আত্রাই নদী বিপদ সীমার ২০ সেন্টিমিটার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বন্যার পানি। ফলে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিভিন্ন এলাকার হাট বাজার ঘর-বাড়িসহ স্কুল  তলিয়ে যাচ্ছে।

 বৃষ্টি চলমান থাকার কারনে  উপজেলার কয়েকটি বিদ্যালয়েও পানি প্রবেশ করেছে। বিশেষ করে উপজেলার কশব ইউনিয়নে আত্রাই নদীর তীরে অবস্থিত পাঁজরভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টির কারনে স্কুলটিতে হু-হু করে বেড়েই চলছে পানি। ব্যাহত হয়ে পড়ছে পাঠদান কার্যক্রম।

সরেজমিনে পাঁজরভাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয় গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মাঠেই হাঁটু পানি বিরাজ করছে। তাছাড়া ডুবে গেছে একটি ক্লাস রুম। এতে শিক্ষার্থীরা স্কুলের কক্ষে যেতে পোহাতে হচ্ছে হাটু পানি। 

কেউ আবার পিছলে পড়ে যায় পানিতে। বন্যার পানি পাড়ি দিয়ে বিদ্যালয় যাতায়াত করতে হয় তাদের। এতে করে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে গেছে। এদিকে স্কুলের নেই পর্যাপ্ত ভবন এবং বিদ্যালয়ের  মাঠে খেলতে না পারায় শিক্ষার্থীরাও পড়েছেন চরম বিপাকে।  

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯০১ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। চারটি ক্লাস রুম ও একটি অফিস কক্ষ রয়েছে। বর্তমানে স্কুলটিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৪৮ জন  এবং শিক্ষক রয়েছেন ৫ জন । এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতি বছরই পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে থাকেন। পিছিয়ে নেই খেলাধুলায়ও।

শিক্ষার্থীরা জানায়, পাশে আত্রাই নদী থাকার কারনে বন্যার পানি হু-হু করে বেড়ে যাওয়ায় স্কুল মাঠে প্রবেশ করছে পানি। মাঠে পানি থাকায় ক্লাস রুমে যাওয়ার সময় প্যান্ট-শ্যার্ট ভিজে এবং পানিতে পিছলে পড়ে যাওয়ার ফলে আমাদের ক্লাস করতে সমস্যা হচ্ছে। 

শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোঃ আব্দুর রকিব বলেন, এ স্কুলটি আত্রাই নদীর তীরে অবস্থান করায় বহু আগে থেকেই বন্যার পানি এলে মাঠ ডুবে যায়। এই স্কুলে আমার মেয়ে শিশু শ্রেণীতে পড়ে। সে সাঁতার জানেনা। একারণে মেয়েকে স্কুল আসতে নিষেধ করেছি। 

এরকম আরও সাঁতার না জানা শিক্ষার্থী রয়েছে। তারাও স্কুলে আসতে চাইবে না। ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যঘাত ঘটছে। তবে স্কুলের পাশ দিয়ে যে বেঁড়িবাধ রয়েছে সেটা পুনরায় সংস্কার করা হলে হয়তো বন্যার পানি মাঠে ঢুকবে না।

এ ব্যাপারে ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক মোছাঃ নাজনীন বেগম বলেন, উজান থেকে ধেয়ে আসা পানি ক্রমেই বেড়ে চলেছে। যে কারণে স্কুলের মাঠ ডুবে এবার ক্লাস রুমে প্রবেশ করছে পানি। ফলে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নাই বললেই চলে। যে কয়েকজন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে এসেছিল। পরে বাবা-মা বিদ্যালয়ে এসে ওই শিক্ষার্থীকে বাসায় নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সহসভাপতি মোঃ গোলাম বলেন, আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন থেকেই দেখে আসছি, বন্যা এলেই স্কুলের মাঠে পানি ঢুকে। ফলে পাঠদান ব্যহত হয়। এ ব্যপারে বহুবার ঊর্ধ্বোতন কর্মকর্তাকে বলা হলেও  এখন পর্যন্ত এর কোন সুরাহা হয়নি । তবে আত্রাই নদীর তীরে এই স্কুল পর্যন্ত সীমানা অনুযায়ী প্রতিরক্ষা মৃলক বাঁধ অথ্যাৎ ব্লক বসানোর কথা থাকলে তা এখন পর্যন্ত হয়নি।  

এ ব্যাপারে মান্দা উপজেলার শিক্ষা অফিসার মোঃ আবুল বার্সার বলেন, বন্যার কারনে মাঠ এবং ক্লাস রুম যে, ডুবে গেছে এ বিষয়ে আমি জানিনা। মাঠে পানি থাকলে ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের ক্লাস রুমে যেতে সমস্যা হবে। তাছাড়া বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে এবিষয়ে কি করা যায় তা দেখছি। 

অন্য দিকে, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে উপজেলার আত্রাই নদীতে বন্যা দেখা দিয়েছে। ফলে স্বাভাবিক জীবন যাত্রা মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। নদীতে পানির স্রোতে বিভিন্ন স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রাত জেগে মানুষ ঝুকিপূর্ণ বাঁধ পাহারা দিচ্ছে। নদীর এক পাশে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধ না থাকায় উপজেলার অন্ততঃ ১০ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। 

নদীর অপর পাশের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধেরও বিভিন্ন স্থান রয়েছে হুমকির মুখে। যে কোন সময় একাধিক ভাঙন সৃষ্টি হয়ে ফসলাদি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে  লক্ষ্মীরামপুর, বানডুবি, খুদিয়াডাঙ্গা, পশ্চিম নুরুল্লাবাদ, গোয়ালমান্দা, পারনুরুল্লাবাদ করাতিপাড়া, পাঁজরভাঙ্গা, চকরামপুর, কয়লাবাড়িসহ অন্তত ৩০ টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

এ ব্যাপারে নওগাঁ উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) প্রবীর কুমার পাল বলেন, উপজেলার ইউনিয়নের সকল চেয়ারম্যান ও মেম্বারদেরকে নিয়ে সবসময় পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের ঊর্ধ্বোতন কর্মকর্তার নির্দেশনায় কাজ করে যাচ্ছি এবং এবিয়ষে তাদেরকে অবহিত করছি। 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লায়লা আঞ্জুমান বানু বলেন, পরিস্থিতি মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতি নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট গুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সার্বক্ষনিক মনিটরিং করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

 

Related Article
comment
মোঃ মনির হোসেন বকাউল
29-Sep-23 | 10:09

Good news

মোঃ মনির হোসেন বকাউল
10-Dec-23 | 04:12

Good