৩০ এপ্রিল ২০২৫
হোম স্বাস্থ্য সারাদেশ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি ও বাণিজ্য খেলাধুলা বিনোদন আন্তর্জাতিক ধর্ম ও জীবন লাইফ স্টাইল শিক্ষা প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান পরিবেশ চাকরি বা ক্যারিয়ার মতামত আইন-আদালত কৃষি ও প্রযুক্তি বিশেষ সংবাদ অপরাধ সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিশ্বকাপ ফুটবল
সারাদেশ

মায়ের সাথে থাকা হলো না শামীমের, পরিবারে স্বচ্ছলতায় কাজ করা হলো না সোনা মিয়া ও আলমগীরের

১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

ছবি: বাম দিক থেকে নিহত শামীম, আলমগীর ও সোনা মিয়া।

বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয় আঠারো-বিশ বছর আগে। বড় ভাই এনামুল শ্রবণ প্রতিবন্ধী চলে যায় বাবা আবুল হোসেনের কাছে। শৈশব থেকে মায়ের সঙ্গে মামার বাড়ি থেকে বড় হয় ওয়্যারিং মিস্ত্রি শামীম। রোজগার করে মায়ের খরচ মেটাতেন তিনি। ছুটি বা অসবর পেলেই চলে যেতেন ধনবাড়ি উপজেলার শ্রী হরিপুর বাড়ইপাড়া গ্রামে মায়ের কাছে। গতকাল বুধবার শামীম মায়ের কাছে গিয়েছে ঠিকই তবে লাশ হয়ে।
নিহত শামীমের মা চায়না বেগম তারুণ্য টোয়েন্টিফোরকে বলেন, শামীমরে নিয়াই বাঁইচা ছিলাম এখন কেমনে বাঁচমু। কেরা আমার খোঁজখবর নিবো।
দুই বছর বয়সে মারা যায় মা। বড় বোনের কাছে বেড়ে উঠে ইঞ্জিন মিস্ত্রি আলমগীর। বাবা আব্দুল বাছেদ মারা গেছেন সাত বছর আগে। একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দেয়ার পর সংসারের উন্নতি করা ছিলো আলমগীরের লক্ষ্য। সে লক্ষ্য চিরতরে চুকিয়ে পারি জমিয়েছেন পরপারে। আলমগীর হোসেন ঘাটাইলের অষ্টোচল্লিশা গ্রামের বাসিন্দা।
নিহত আলমগীরের ভগ্নিপতি শফি জানান, ছোট বেলায় মা হারিয়ে আলমগীর খুব কষ্টে বড় হয়েছে। আলমগীর অনেক কাজই পারতো। বিদ্যুতের কাজ, ট্রাক্টর চালানো, লেয়ার ফার্ম দেখাশোনা, হাইড্রোলিক চালানো, গার্মেন্টস অপারেটর। যখন যেটা পেতো, যেটাতে শান্তি পেতো, ভালো লাগতো সেটাই করতো। অলসতা করতনা। সংসারের উন্নতির জন্য হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করতো।
স্প্রিং মিস্ত্রি সোনা মিয়া পরিবারের উন্নতি করতে বাবা শহিদ মিয়া ও বড় ভাই নাসিরের সাথে হাল ধরেন গ্যারেজের। কিশোর সোনা মিয়ার শক্ত হাত আর পরবেনা সংসারের হালে। সোনা মিয়া ঘাটাইলের লাউয়াগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা।
নিহত সোনা মিয়ার বাবা শহিদ মিয়া জানান, গ্যারেজে সবসময় কাজ লেগেই থাকতো। সবসময় মিস্ত্রিও পাওয়া যেতোনা। মিস্ত্রিকে বেতনও দিতে হবে তাই সোনা মিয়াও কাজ শিখে। গ্যারেজের কাজে যোগ দিয়ে আমার কাঁধের সংসারের বোঝাটা হালকা করে। সংসারের আয়-উন্নতির জন্য মনোযোগ দিয়ে কাজ করতো। 
টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের গুণগ্রাম হাজিনগর এলাকায় গত মঙ্গলবার ১৪ ফেব্রুয়ারি রাত সোয়া দশটায় অজ্ঞাত গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারান তরুণ মিস্ত্রি শামীম (২২), সোনা মিয়া (২০) ও আলমগীর হোসেন (৩২)। তাঁরা কাজ শেষে বেড়ানোর পর মোটরসাইকেল যোগে ফেরার পথে হাজীনগর এলাকায় আঞ্চলিক সড়ক থেকে মহাসড়কে ওঠার সময় পাশ দিয়ে যাওয়া অজ্ঞাত ময়মনসিংহমুখী গাড়ির ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। স্থানীয়রা বলছেন, অজ্ঞাত গাড়িটি প্রাইভেটকার অথবা মাইক্রোবাস হবে। গত বুধবার ১৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টায় সোনা মিয়ার জানাযা নামাজ শেষে ঘাটাইলের লাউয়াগ্রাম কবরস্থানে দাফন করা হয়। দুপুরে জানাযা নামাজ শেষে শামীমের মরদেহ ধনবাড়ির শ্রী হরিপুর বাড়ইপাড়া ও আলমগীরের মরদেহ ঘাটাইলের অষ্টচল্লিশা কবরস্থানে দাফন করা হয়।
ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম সরকার জানান, ধাক্কা দেওয়া পরিবহনটিকে সনাক্ত করা যায়নি। নিহতদের পরিবারের কোনও অভিযোগ না থাকায় কোনও মামলাও হয়নি। একারণেও ওই রাতেই বিনা ময়নাতদন্তে নিহতদের মরদেহ নিজ নিজ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়।

Related Article
comment
মোঃ মনির হোসেন বকাউল
29-Sep-23 | 10:09

Good news

মোঃ মনির হোসেন বকাউল
10-Dec-23 | 04:12

Good