১৮ অক্টোবর, ২০২৩
ছবি: মান্দা বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট
১০ বছর অভিজ্ঞতা ছাড়াই হয়ে যান অধ্যক্ষ। আর এই অভিজ্ঞতা ছাড়াই ২৩ বছর ধরে শিক্ষকতা করার অভিযোগ উঠেছে নওগাঁর মান্দায় উপজেলার "মান্দা বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের" অধ্যক্ষ রমজান আলী সাকিদারের বিরুদ্ধে।
এছাড়াও নিজের নিয়োগ বোর্ডে অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি নিজেই সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। এ সংক্রান্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০০৯ সালের ১ আগস্ট এ বিষয়ে সরজমিনে তদন্ত করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (সাঃ প্রাঃ) কেএম কায়সার আলী।
তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জয়পুরহাট জেলার মঙ্গলবাড়ী ময়েজ মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজে সমাজ বিজ্ঞানে ১৯৯৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর প্রভাষক পদে অধ্যক্ষ রমজান আলী যোগদান করেন। ১৯৯৫ সালের ১ মে তিনি উক্ত কলেজে এমপিওভূক্ত হন।
সেখানে চাকরিরত অবস্থায় ১৯৯৮ সালে তিনি "মান্দা বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট" নামে একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত করেন। এই প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ নিয়োগ কমিটির ১৯৯৮ সালের ৭ অক্টোবরের সভা ও ১৯৯৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর নিয়োগ অনুমোদনের সভায় অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি নিজেই সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেন।
এ সময় তাঁর ১০ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা ছিল না। এরপর ২০০০ সালের ৩ জানুয়ারি তিনি এই প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। মাউশি’র সহকারী পরিচালক কেএম কায়সার আলীর তদন্ত প্রতিবেদনে অধ্যক্ষ পদে রমজান আলীর অবৈধভাবে নিয়োগ, এছাড়ও দুটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি ও বেতন ভাতার সরকারি অংশের টাকা উত্তোলনসহ বিভিন্ন অনিয়ম উঠে আসে।
এসব বিষয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়। কিন্তু প্রায় ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও অধ্যক্ষ্য রমজান আলী সাকিদারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এ অবস্থায় অধ্যক্ষ রমজান আলীর নিয়োগ বাতিলসহ অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট করেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার চকসিদ্ধেশরী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল জলিল।
এর প্রেক্ষিতে পত্র প্রাপ্তির ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর দ্বৈত বেঞ্চ।
এ আদেশের প্রেক্ষিতে বিষয়টি আগামি বৃহস্পতিবার ১৯ অক্টোবর ২০২৩ তদন্তের জন্য "মান্দা বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট"এর অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে পত্র দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা ড. রেজা হাসান মাহমুদ।
এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ রমজান আলী সাকিদার বলেন, এটি প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তণীয় বিষয়। নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিস্পত্তি করে নিয়ে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
এ বিষয়ে ওই ইনস্টিটিউটের ইসভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা আঞ্জুমান বানু বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এখন পর্যন্ত এ সংক্রান্ত কোনো পত্র পাইনি।