১৮ অক্টোবর, ২০২৪
ছবি: ফাইল
জলবিষুব সংক্রান্তি উপলক্ষে কক্সবাজারে বিভিন্ন অঞ্চলে সনাতন ধর্মাবলম্বী বা হিন্দুদের মধ্যে ‘ব্রতের ভাত’ নামে তিন দিনের একটি লৌকিক পার্বণ পালনের রেওয়াজ রয়েছে।
এই অনুষ্ঠানে আশ্বিনের শেষ দিন রাতে ভাত রান্না করা হয়। আশ্বিনের শেষ দিনে অনুষ্ঠিত হয় পূজার্চনা। আর পরের দিন অর্থাৎ কার্তিক মাসের প্রথম সকালে সেই ভাত নারিকেলের পুর, কলা ও তিলের লাড্ডুসহ নানা মিষ্টিজাত উপকরণ দিয়ে খাওয়া হয়। ‘ব্রতের ভাত’ নিয়ে এই অঞ্চলের লোকসমাজে একটি মিথ রয়েছে- নিয়ত করে ব্রতের ভাত খেলে মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয়। ‘আশ্বিনে রাঁধে কার্তিকে খায়, যে বর মাগে সে বর পায়।’ কক্সবাজারসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘরে এই ‘ব্রতের ভাত’ অনুষ্ঠানটি পালিত হলেও অন্য ধর্মাবলম্বীদের অনেকে সাগ্রহে এই ব্রতের ভাত গ্রহণ করে থাকেন।
ব্রতের ভাত রান্না ও পূজার ক্ষণ সম্পর্কে ব্রাহ্মণ পল্লব তারুণ্য২৪কে বলেন, কাল বৃহস্পতিবার মহাদেব ও অশ্বিনী কুমারের পূজা হয়েছে এবং আজ শুক্রবার পহেলা কার্তিক সবাই সকালে স্নান করে ব্রতের ভাত গ্রহণ করবেন।
এই পার্বণের উৎপত্তি সম্পর্কে ধর্মীয় চিন্তাবিদ ও ধর্মীয় বক্তা পলাশ কান্তি নাথ রনী তারুণ্য২৪কে বলেন, আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের প্রবক্তা অশ্বিনী কুমার ও রেবন্ত কুমার দুই যমজ ভাই জন্মেছিলেন ঘোড়ার মাথা নিয়ে। তাদের পিতামাতা ছিলেন সূর্যদেব ও সংজ্ঞা। ঘোড়ার মাথা নিয়ে জন্মগ্রহণ করায় তাদের মা সন্তানের সুস্থ, সুন্দর দেহ ফিরে পাওয়ার আশায় গেলেন মহাদেবের কাছে। মহাদেব এই সমস্যা সমাধানের জন্য সূর্যদেব ও সংজ্ঞাকে পাঠালেন দেবী পার্বতীর কাছে। পার্বতীর কাছে গিয়ে সূর্যদেব ও সংজ্ঞা সমস্ত ঘটনা বর্ণনা করলেন এবং দুই সন্তানকে মানুষে রূপান্তরের জন্য প্রার্থনা জানান। দেবী পার্বতী সংজ্ঞাকে এক মুঠ চাল দিয়ে বলেন আশ্বিন মাসের শেষ দিবসের আগের রাতে এই চাল ভক্তিপূর্বক রান্না শেষে মহাদেবের অর্চনা করতে হবে এবং কার্তিক মাসের প্রথম দিবসে সেই অন্ন খেলে মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হবে। দেবীর আজ্ঞা মতে সংজ্ঞা তাই করেছিলেন এবং দুই সন্তান মানুষরূপ লাভ করেছিলেন। সেই বিশ্বাস থেকেই মূলক ব্রতের ভাতের প্রচলন। ‘ব্রতের ভাত’ পার্বণ উপলক্ষে গত কয়েকদিন শহরে বিভিন্ন বাজার ও গলির মোড়গুলোতে বিক্রেতারা নারিকেল, কলা, তিল ও গুড়সহ পার্বণ সংশ্লিষ্ট নানা দ্রব্যের পসরা সাজিয়ে বসেন। কেউ কেউ আবার ভ্যানগাড়িতে করে এসব উপকরণ বিক্রি করেন।
এ ব্যাপারে শহরের কোর্ট বিল্ডিংয়ে, বড় বাজারে, হাসপাতাল রোড এবং কাঁচাবাজারের বিক্রেতা সুনীল দাশ তারুণ্য২৪কে বলেন, এবার দেশের পরিস্থিতি ভাল না, দ্রব্য মূল্যের বৃদ্ধি হওয়ায় মানুষের মনে আনন্দ একটু কমে গেছে। তবুও যাদের পূজা রয়েছে তারা নানা উপকরণ কিনেন। আমাদের বিক্রিও ছিল মোটামুটি ভালো। তবে জিনিসপত্রের দাম বেশি। ছোট-বড় আকারের নারিকেল প্রতিটি ছোট ৫০-৭০ টাকা, বড় নারিকেল ১০০-১২০ টাকা, গুড় কেজিপ্রতি ১২০ টাকা থেকে ১০০ টাকা, বাংলা কলা ডজন ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়।
Good news
Good