২৯ Jul, ২০২৫
ছবি: জমি ও কক্সবাজার সাব-রেজিস্টার অফিস
কক্সবাজার জেলাব্যাপী জুলাইয়ের শুরু থেকে ধস নেমেছে জমি নিবন্ধন কার্যক্রমে। জমি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সরকারি কোডে স্ট্যাম্প শুল্ক, নিবন্ধন ফি, স্থানীয় সরকার কর, উৎস কর, স্থাপনা থাকলে স্থাপনার উপর উৎস কর, ভ্যাট, হলফনামার স্ট্যাম্প, এন.ফি., ও.ফি., ই.ফি. ও কোর্ট ফি দিয়ে দলিল নিবন্ধন করতে হতো। কিন্তু চলতি জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে দলিল নিবন্ধনে নতুন করে যুক্ত হয়েছে—নাল জমির ক্ষেত্রে প্রতি শতকে ২৫ হাজার টাকা, আবাসিক জমি হলে প্রতি শতকে ৫০ হাজার টাকা, এবং বাণিজ্যিক জমি হলে প্রতি শতকে দিতে হচ্ছে ১ লক্ষ টাকা করে!
এর বাইরেও দলিলে লিখিত মূল্যের উপর রেজিস্ট্রেশন খরচ দিতে হবে—স্ট্যাম্প শুল্ক, নিবন্ধন ফি, স্থানীয় সরকার কর, আবাসিক হলে উৎসের আয়কর ও ভ্যাট এবং স্থাপনা থাকলে স্থাপনার উপর উৎসের আয়কর, ভ্যাট, হলফনামার স্ট্যাম্প, এন.ফি., ও.ফি., ই.ফি. ও কোর্ট ফি এবং দলিল লিখনের খরচ। অধিকহারে এই শুল্ক মফস্বল এলাকার সাধারণ মানুষের জন্য মাথায় বাজ পড়ার মতো।
এদিকে কক্সবাজার জেলাব্যাপী হঠাৎ এভাবে রেজিস্ট্রেশন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। অনেকে বলেছেন, রেজিস্ট্রেশন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষের পক্ষে জমি কেনাবেচা কঠিন হয়ে পড়েছে। রেজিস্ট্রেশন ফি বৃদ্ধির ফলে আবাসন খাত এবং জমি বেচাকেনায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এইভাবে খরচ বৃদ্ধির ফলে জমি বেচাকেনা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। তাই এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে রেজিস্ট্রেশন খরচ কমানো দরকার বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
জেলা রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (আয়কর) গত ২৪ জুন একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে, যা কার্যকর হয়েছে চলতি মাসের ১ জুলাই থেকে। ওই প্রজ্ঞাপন অনুসারে বর্তমানে রেজিস্ট্রেশন খরচ দিতে হচ্ছে ক্রেতাপক্ষকে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে—কোন উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এলাকায় এবং কক্সবাজার জেলা সদরের পৌরসভার অন্তর্গত সকল মৌজায়:
‘ক’ শ্রেণির জমি হলে দলিলে লিখিত মূল্যের উপর প্রতি লাখে উৎস কর ৩% বা সর্বোচ্চ শতকপ্রতি ১ লক্ষ টাকা,
‘খ’ শ্রেণিতে ৩% বা শতকপ্রতি ৫০ হাজার টাকা,
‘গ’ শ্রেণিতে ৩% বা শতকপ্রতি ১ লক্ষ টাকা,
‘ঘ’ শ্রেণিতে ৩% বা শতকপ্রতি ৫০ হাজার টাকা,
‘ঙ’ শ্রেণিতে ৩% বা শতকপ্রতি ৫০ হাজার টাকা এবং
‘চ’ শ্রেণিতে ৩% বা শতকপ্রতি ২৫ হাজার টাকা উৎস কর প্রযোজ্য।
কক্সবাজার জেলা রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে আরও জানা যায়, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) একটি তালিকা দিয়েছে জেলা রেজিস্ট্রারকে। ওই তালিকায় ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির অধিকাংশ দাগ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। যদি দাগটি তালিকাভুক্ত হয়, তবে বিক্রয় সংশ্লিষ্ট দাগ নাল জমি হলে প্রতি শতকে ২৫ হাজার টাকা, আবাসিক হলে ৫০ হাজার এবং বাণিজ্যিক হলে ১ লক্ষ টাকা করে উৎস কর দিতে হবে। আর তালিকায় না থাকলে পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন খরচ প্রযোজ্য হবে।
কক্সবাজার সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে দেখা যায়, জমি নিবন্ধন কার্যক্রম অনেক কমে গেছে। গত ৩ সপ্তাহে খুব কম সংখ্যক দলিল নিবন্ধন হয়েছে। যেসব দলিল হচ্ছে তা মূলত বায়নানামা, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি, হেবা ঘোষণা, দানপত্র ইত্যাদি—যা সরাসরি সরকারের রাজস্ব আয়ের উৎস নয়। সরকারের রাজস্ব আদায়ের একমাত্র দলিল হলো সাফ কবলা দলিল। এই সাফ কবলা দলিল নিবন্ধনের সময়ই সাধারণ মানুষকে উচ্চ হারে উৎস কর দিতে হচ্ছে, ফলে দলিল নিবন্ধন ও রাজস্ব আদায়ে ধস নেমেছে।
ঈদগাঁও বোয়ালখালী থেকে দলিল নিবন্ধনের জন্য আসা করিম উল্লাহ বলেন, “গত ১ জুলাইয়ের পর থেকে সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ঘুরছি জমি নিবন্ধনের জন্য। কিন্তু অতিরিক্ত নিবন্ধন ফি কার্যকর হওয়ায় দলিল নিবন্ধন করতে পারছি না। আমাকে ৫ শতক জমি রেজিস্ট্রি করতে গেলে শুধুমাত্র উৎস কর দিতে হচ্ছে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। এর বাইরে প্রতি লাখে স্ট্যাম্প শুল্ক ১.৫%, নিবন্ধন ফি ১%, স্থানীয় সরকার ফি ৩% দিতে হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি ৫ শতক ধানি জমি কিনেছি ১ লক্ষ টাকায়, অথচ রেজিস্ট্রেশন খরচ পড়ছে ১ লক্ষ ৩০ হাজার ৫০০ টাকা! জমির মূল্যের চেয়ে রেজিস্ট্রেশন খরচ বেশি—এটা কেমন নিয়ম?”
সুবল দেব নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, “আগে প্রতি লাখে উৎস কর ছিল ২ হাজার টাকা (২%)। এখন দিতে হচ্ছে শতকপ্রতি ২৫ হাজার টাকা। আমি ১০ শতক জমি নিবন্ধন করতে চাই, কিন্তু শুনলাম উৎস কর লাগবে ২.৫ লক্ষ টাকা! ভাবা যায়, কোন দেশে বাস করছি?”
পি.এম. খালীর সাইদুর রহমান খোকন বলেন, “ছেলের চিকিৎসার জন্য জমি বিক্রি করতে চেয়েছিলাম। অনুমতিও নিয়েছি জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে। কিন্তু শতকপ্রতি ২৫ হাজার টাকা করে উৎস কর দিতে হবে—এটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। জমি ব্যক্তিমালিকানাধীন, সরকারি খাস নয়—তবু কেন এত কর দিতে হবে?”
২০ হাজার টাকার জমিতে ২৫ হাজার টাকা উৎস কর:
২০২০ সালের গেজেটে বলা হয়েছিল প্রতি শতকে ২৫ হাজার টাকা উৎস কর দিতে হবে, কিন্তু তা কার্যকর হয়নি এতদিন। হঠাৎ চলতি জুলাই থেকে কার্যকর হওয়ায় দ্বীপাঞ্চলে বিপর্যয় নেমে এসেছে। কোথাও শতকের দাম ১৫-২০ হাজার টাকা হলেও উৎস কর ২৫ হাজার টাকা!
কুতুবদিয়ার রাজাখালী মৌজার খুদিয়ারটেক এলাকা ৩ দশক আগে সাগরে বিলীন হয়ে গেছে—সেখানে গত ২০ বছরে কোনো দলিল হয়নি। তবু সেখানে একই উৎস কর আরোপ! উত্তর জোনের চরধুরুং মৌজার অর্ধেক এলাকা এখন সাগরের বাইরে—সেখানেও একই নিয়ম!
দলিল লিখক নুরুল আবছার বলেন, “আমার নিজেরই ৫০টি দলিল জমা পড়ে আছে। উৎস করের কারণে কবলা হচ্ছে না। পুরনো গেজেট হঠাৎ কার্যকর করায় জমি বিক্রেতা, ক্রেতা, এমনকি পেশাজীবীরাও চরম বিপাকে পড়েছেন।”
কুতুবদিয়া সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সহকারী সজীব কুমার দে বলেন, “গড়ে মাসে ১৪০-১৫০টি রেজিস্ট্রি হয়। এখন ২৩ জুলাই পর্যন্ত মাত্র ২৫টি দানপত্র, হেবা দলিল হয়েছে। একটি সাফ কবলাও হয়নি। এতে সরকারই বঞ্চিত হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকার রাজস্ব।”
জেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আবুল হোছাইন বলেন, “এই উচ্চ হারে উৎস কর কার্যকরে অনেকে জমি রেজিস্ট্রি করতে পারছেন না। আমরাও জনস্বার্থে পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছি, কিন্তু এখনো কোনো ফল আসেনি। এতে সাধারণ মানুষ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সরকারও হারাচ্ছে বিপুল রাজস্ব।কক্সবাজার জেলাব্যাপী জুলাইয়ের শুরু থেকে ধস নেমেছে জমি নিবন্ধন কার্যক্রমে। জমি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সরকারি কোডে স্ট্যাম্প শুল্ক, নিবন্ধন ফি, স্থানীয় সরকার কর, উৎস কর, স্থাপনা থাকলে স্থাপনার উপর উৎস কর, ভ্যাট, হলফনামার স্ট্যাম্প, এন.ফি., ও.ফি., ই.ফি. ও কোর্ট ফি দিয়ে দলিল নিবন্ধন করতে হতো। কিন্তু চলতি জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে দলিল নিবন্ধনে নতুন করে যুক্ত হয়েছে—নাল জমির ক্ষেত্রে প্রতি শতকে ২৫ হাজার টাকা, আবাসিক জমি হলে প্রতি শতকে ৫০ হাজার টাকা, এবং বাণিজ্যিক জমি হলে প্রতি শতকে দিতে হচ্ছে ১ লক্ষ টাকা করে!
এর বাইরেও দলিলে লিখিত মূল্যের উপর রেজিস্ট্রেশন খরচ দিতে হবে—স্ট্যাম্প শুল্ক, নিবন্ধন ফি, স্থানীয় সরকার কর, আবাসিক হলে উৎসের আয়কর ও ভ্যাট এবং স্থাপনা থাকলে স্থাপনার উপর উৎসের আয়কর, ভ্যাট, হলফনামার স্ট্যাম্প, এন.ফি., ও.ফি., ই.ফি. ও কোর্ট ফি এবং দলিল লিখনের খরচ। অধিকহারে এই শুল্ক মফস্বল এলাকার সাধারণ মানুষের জন্য মাথায় বাজ পড়ার মতো।
এদিকে কক্সবাজার জেলাব্যাপী হঠাৎ এভাবে রেজিস্ট্রেশন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। অনেকে বলেছেন, রেজিস্ট্রেশন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষের পক্ষে জমি কেনাবেচা কঠিন হয়ে পড়েছে। রেজিস্ট্রেশন ফি বৃদ্ধির ফলে আবাসন খাত এবং জমি বেচাকেনায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এইভাবে খরচ বৃদ্ধির ফলে জমি বেচাকেনা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। তাই এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে রেজিস্ট্রেশন খরচ কমানো দরকার বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
জেলা রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (আয়কর) গত ২৪ জুন একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে, যা কার্যকর হয়েছে চলতি মাসের ১ জুলাই থেকে। ওই প্রজ্ঞাপন অনুসারে বর্তমানে রেজিস্ট্রেশন খরচ দিতে হচ্ছে ক্রেতাপক্ষকে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে—কোন উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এলাকায় এবং কক্সবাজার জেলা সদরের পৌরসভার অন্তর্গত সকল মৌজায়:
‘ক’ শ্রেণির জমি হলে দলিলে লিখিত মূল্যের উপর প্রতি লাখে উৎস কর ৩% বা সর্বোচ্চ শতকপ্রতি ১ লক্ষ টাকা,
‘খ’ শ্রেণিতে ৩% বা শতকপ্রতি ৫০ হাজার টাকা,
‘গ’ শ্রেণিতে ৩% বা শতকপ্রতি ১ লক্ষ টাকা,
‘ঘ’ শ্রেণিতে ৩% বা শতকপ্রতি ৫০ হাজার টাকা,
‘ঙ’ শ্রেণিতে ৩% বা শতকপ্রতি ৫০ হাজার টাকা এবং
‘চ’ শ্রেণিতে ৩% বা শতকপ্রতি ২৫ হাজার টাকা উৎস কর প্রযোজ্য।
কক্সবাজার জেলা রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে আরও জানা যায়, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) একটি তালিকা দিয়েছে জেলা রেজিস্ট্রারকে। ওই তালিকায় ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির অধিকাংশ দাগ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। যদি দাগটি তালিকাভুক্ত হয়, তবে বিক্রয় সংশ্লিষ্ট দাগ নাল জমি হলে প্রতি শতকে ২৫ হাজার টাকা, আবাসিক হলে ৫০ হাজার এবং বাণিজ্যিক হলে ১ লক্ষ টাকা করে উৎস কর দিতে হবে। আর তালিকায় না থাকলে পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন খরচ প্রযোজ্য হবে।
কক্সবাজার সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে দেখা যায়, জমি নিবন্ধন কার্যক্রম অনেক কমে গেছে। গত ৩ সপ্তাহে খুব কম সংখ্যক দলিল নিবন্ধন হয়েছে। যেসব দলিল হচ্ছে তা মূলত বায়নানামা, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি, হেবা ঘোষণা, দানপত্র ইত্যাদি—যা সরাসরি সরকারের রাজস্ব আয়ের উৎস নয়। সরকারের রাজস্ব আদায়ের একমাত্র দলিল হলো সাফ কবলা দলিল। এই সাফ কবলা দলিল নিবন্ধনের সময়ই সাধারণ মানুষকে উচ্চ হারে উৎস কর দিতে হচ্ছে, ফলে দলিল নিবন্ধন ও রাজস্ব আদায়ে ধস নেমেছে।
ঈদগাঁও বোয়ালখালী থেকে দলিল নিবন্ধনের জন্য আসা করিম উল্লাহ বলেন, “গত ১ জুলাইয়ের পর থেকে সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ঘুরছি জমি নিবন্ধনের জন্য। কিন্তু অতিরিক্ত নিবন্ধন ফি কার্যকর হওয়ায় দলিল নিবন্ধন করতে পারছি না। আমাকে ৫ শতক জমি রেজিস্ট্রি করতে গেলে শুধুমাত্র উৎস কর দিতে হচ্ছে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। এর বাইরে প্রতি লাখে স্ট্যাম্প শুল্ক ১.৫%, নিবন্ধন ফি ১%, স্থানীয় সরকার ফি ৩% দিতে হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি ৫ শতক ধানি জমি কিনেছি ১ লক্ষ টাকায়, অথচ রেজিস্ট্রেশন খরচ পড়ছে ১ লক্ষ ৩০ হাজার ৫০০ টাকা! জমির মূল্যের চেয়ে রেজিস্ট্রেশন খরচ বেশি—এটা কেমন নিয়ম?”
সুবল দেব নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, “আগে প্রতি লাখে উৎস কর ছিল ২ হাজার টাকা (২%)। এখন দিতে হচ্ছে শতকপ্রতি ২৫ হাজার টাকা। আমি ১০ শতক জমি নিবন্ধন করতে চাই, কিন্তু শুনলাম উৎস কর লাগবে ২.৫ লক্ষ টাকা! ভাবা যায়, কোন দেশে বাস করছি?”
পি.এম. খালীর সাইদুর রহমান খোকন বলেন, “ছেলের চিকিৎসার জন্য জমি বিক্রি করতে চেয়েছিলাম। অনুমতিও নিয়েছি জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে। কিন্তু শতকপ্রতি ২৫ হাজার টাকা করে উৎস কর দিতে হবে—এটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। জমি ব্যক্তিমালিকানাধীন, সরকারি খাস নয়—তবু কেন এত কর দিতে হবে?”
২০ হাজার টাকার জমিতে ২৫ হাজার টাকা উৎস কর:
২০২০ সালের গেজেটে বলা হয়েছিল প্রতি শতকে ২৫ হাজার টাকা উৎস কর দিতে হবে, কিন্তু তা কার্যকর হয়নি এতদিন। হঠাৎ চলতি জুলাই থেকে কার্যকর হওয়ায় দ্বীপাঞ্চলে বিপর্যয় নেমে এসেছে। কোথাও শতকের দাম ১৫-২০ হাজার টাকা হলেও উৎস কর ২৫ হাজার টাকা!
কুতুবদিয়ার রাজাখালী মৌজার খুদিয়ারটেক এলাকা ৩ দশক আগে সাগরে বিলীন হয়ে গেছে—সেখানে গত ২০ বছরে কোনো দলিল হয়নি। তবু সেখানে একই উৎস কর আরোপ! উত্তর জোনের চরধুরুং মৌজার অর্ধেক এলাকা এখন সাগরের বাইরে—সেখানেও একই নিয়ম!
দলিল লিখক নুরুল আবছার বলেন, “আমার নিজেরই ৫০টি দলিল জমা পড়ে আছে। উৎস করের কারণে কবলা হচ্ছে না। পুরনো গেজেট হঠাৎ কার্যকর করায় জমি বিক্রেতা, ক্রেতা, এমনকি পেশাজীবীরাও চরম বিপাকে পড়েছেন।”
কুতুবদিয়া সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সহকারী সজীব কুমার দে বলেন, “গড়ে মাসে ১৪০-১৫০টি রেজিস্ট্রি হয়। এখন ২৩ জুলাই পর্যন্ত মাত্র ২৫টি দানপত্র, হেবা দলিল হয়েছে। একটি সাফ কবলাও হয়নি। এতে সরকারই বঞ্চিত হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকার রাজস্ব।”
জেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আবুল হোছাইন বলেন, “এই উচ্চ হারে উৎস কর কার্যকরে অনেকে জমি রেজিস্ট্রি করতে পারছেন না। আমরাও জনস্বার্থে পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছি, কিন্তু এখনো কোনো ফল আসেনি। এতে সাধারণ মানুষ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সরকারও হারাচ্ছে বিপুল রাজস্ব।
Good news
Good