২২ অক্টোবর, ২০২৩
ছবি: দূর্গা মায়ের প্রতিক ছবি
সারা দেশে ৩২ হাজার ৪০৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কক্সবাজারে ১৫১টি প্রতিমা ও ১৬৪টি ঘট পূজা মিলিয়ে জেলায় ৩১৫টি মণ্ডপে পূজা হচ্ছে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এই পূজাকে কেন্দ্র করে হাজারো দেশি-বিদেশি ভক্ত ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত কক্সবাজার পূজা মণ্ডপ। ১৫১ টি বিভিন্ন দেব-দেবীর( শিব ঠাকুর, মা দুর্গা, কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী ও সরস্বতী) প্রতিমা তৈরি করে সরস্বতী বাড়ীতে। কক্সবাজার সহ সারা দেশের বৃহৎ দুর্গাপূজা পালিত হচ্ছে। এক এক মণ্ডপে দেব-দেবীর প্রতিমা দেখে আনন্দ প্রকাশ করেন দর্শনার্থীরা।
শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুর থেকে কক্সবাজার শহরজুড়ে চলে র্যাব এর টহল।
একই সঙ্গে পূজামন্ডপগুলোর আশপাশে জোরদার করা হয় নিরাপত্তা। দুর্গাপূজা উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এমন কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়েছে সনাতন ধর্মালম্বীরা।
ঘোনারপাড়ার স্বপর দে বলেন, গেলো বছর ধরে দুর্গাপূজার সময় নাশকতার আশঙ্কা থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু এবার প্রশাসনের নিরাপত্তা বেশ জোরদার। দেখছি, প্রতিদিনই পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও টহল দিচ্ছে এবং খোঁজ-খবর রাখছে। এটাতে স্বস্তি পাচ্ছি, এবারও নিরাপদে পূজা উৎসব উদযাপন করতে পারব।
কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকাজুড়ে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। মন্দিরের যত কাছে যাওয়া যায় ভিড় তত বাড়তে থাকে। নির্ধারিত ফটক দিয়ে প্রবেশ করে মণ্ডপে প্রতিমা দেখে বের হয়ে যাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। দর্শনার্থীদের অনেককেই দেবী দুর্গাসহ অন্যসব প্রতিমার সঙ্গে সেলফি তুলতে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়।
পরিবার-পরিজন নিয়ে সরস্বতী বাড়ি, কালী বাড়ি, বঙ্গপাহাড় মন্দির, হরি মন্দির, ইন্দ্রসেনের দূর্গা বাড়ি, শ্রীশ্রী কৃষ্ণানন্দ ধাম, কমিশনার রাজ বিহারি বাড়ি ও সৈকত মন্ডপ-সহ বিভিন্ন মন্দিরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পেরে খুশি ভক্ত ও দর্শনার্থীরা।
মন্দিরের প্রতিমা দেখতে মহেশখালী থেকে আসা পার্বতী বালা বলেন, প্রতিমা দেখতে পেরে অনেক ভালো লাগছে। এই বছরের প্রতিমা গুলো আসলে সনাতন ধর্মের অনেক সুন্দর হয়েছে গত বছরের ন্যায়। কক্সবাজার ভিন্ন ভিন্ন মণ্ডপ তৈরী করার জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান।
শ্রী শ্রী কৃষ্ণানন্দ ধাম দূর্গা পূজা কমিটির সভাপতি বিবেক পাল জানান, শুক্রবার সকাল ৯টায় দেবীর ষষ্ঠাদি কল্পারম্ভে ষষ্ঠী পূজা শুরু হয়েছে। ষষ্ঠী তিথিতে বেলতলায় বিহিতপূজার পর দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে হয়েছে মূল দুর্গোৎসবের সূচনা।
তিনি বলেন, শনিবার দেবীর সপ্তমী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং আজ রোববার (২২ অক্টোবর) বেলা ১১টায় মহাষ্টমী তিথিতে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
বিবেক পাল আরও জানান, হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, দশভূজা দেবী দুর্গা অসুর বধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রতি শরতে কৈলাস ছেড়ে কন্যারূপে মর্ত্যলোকে আসেন। সন্তানদের নিয়ে পক্ষকাল পিতার গৃহে কাটিয়ে আবার ফিরে যান দেবালয়ে। আশ্বিন শুক্লপক্ষের এই ১৫ টি দিন দেবীপক্ষ, মর্ত্যলোকে উৎসব। মঙ্গলবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে এবারের দুর্গোৎসবের শেষ হবে। একটি বছরের জন্য ‘দুর্গতিনাশিনী’ দেবী ফিরে যাবেন কৈলাসে দেবালয়ে।
শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিবারের মতো এ বছরও পর্যটন নগরী কক্সবাজারে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে র্যাব। কক্সবাজারের প্রবেশদ্বার গুলোতে বসানো হয়েছে বিশেষ চেকপোস্ট। একই সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল কার্যক্রম।
এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে কোনো সুযোগসন্ধানী, দুষ্কৃতকারী ও অশুভ চক্র যাতে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কোনোরূপ হামলা, পূজামণ্ডপ ভাঙচুর বা কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটাতে পারে, সে জন্য চেকপোস্ট ও নজরদারি কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। যেকোনো পরিস্থিতি কঠোরভাবে প্রতিহত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে র্যাব।
শারদীয় দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে করতে কক্সবাজারজুড়ে ‘বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা’ জোরদার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। শুধু কক্সবাজার শহর নয়, পুরো জেলার পাশাপাশি বান্দরবান জেলায়ও চেকপোস্ট, গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল কার্যক্রম বাড়িয়েছে বিশেষ এই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
Good news
Good