৩০ অক্টোবর, ২০২৪
ছবি: কক্সবাজার নারী ও শিশু আদালতের বিচারকের সাইনবোর্ড
কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ (জেলা ও দায়রা জজ) এর বিচারক এস.এম জিললুর রহমান মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) এ রায় প্রদান করেন।
একই আদালতের স্টেনোগ্রাফার উত্তম কুমার দে এ তথ্য জানিয়েছেন। দন্ডিত আসামীরা হলেন-বান্দরবান জেলার আলীকদম উপজেলার পূর্ব পাল পাড়ার মৃত ফাতেমা খাতুন ও ফয়েজুল ইসলাম ফয়েজের পুত্র মোঃ নুর প্রকাশ নুর এবং অপরজন কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার চেয়ারম্যান পাড়ার মোক্তার হোসেন ও তসলিমা জান্নাতের পুত্র মোঃ আবু ছিদ্দিক প্রকাশ তানজিদ। রায় ঘোষণার সময় দন্ডিত আসামীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্র পক্ষে একই আদালতের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট বদিউল আলম, বাদী পক্ষে অ্যাডভোকেট মোস্তাক আহমদ চৌধুরী এবং আসামীদের পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইউনুস ও অ্যাডভোকেট সাজ্জাদ হোসেন মামলাটি পরিচালনা করেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ২০২০ সালের ১১ ডিসেম্বর দুপুর ১২ টার দিকে কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার চিরিঙ্গা বায়তুশ শরফ সড়ক সংলগ্ন নজরুল ইসলামের বাড়ির গেইট থেকে তার ৩ বছর বয়সী শিশু কণ্যা খাদিজাতুল কোবরা-কে পাচারের উদ্দেশ্যে অপহরণ করে নিয়ে যায়। একইদিন রাত সাড়ে ৮ টার দিকে চকরিয়া সিটি সেন্টারের পূর্ব পাশে একটি পরিত্যক্ত দোকানে অবস্থান করা পাচারকারী মোঃ নুর প্রকাশ নুর এর কাছ থেকে অপহৃত শিশু খাদিজাতুল কোবরা-কে উদ্ধার এবং পাচারকারী মোঃ নুর প্রকাশ নুরকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় খাদিজাতুল কোবরার পিতা নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে পাচারকারী মোঃ নুর প্রকাশ নুর সহ কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে চকরিয়া থানায় একটি শিশু অপহরণ মামলা দায়ের করেন। যার চকরিয়া থানা মামলা নম্বর : ১৫, তারিখ : ১২/১২/২০২০ ইংরেজি, জিআর মামলা নম্বর : ৫০৫/২০২০ ইংরেজি (চকরিয়া) এবং নারী নির্যাতন দমন মামলা নম্বর : ৩০৮/২০২১ ইংরেজি।
বিচার ও রায়মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মামলার এজাহারনামীয় আসামী মোঃ নুর প্রকাশ নুর এবং মোঃ আবু ছিদ্দিক প্রকাশ তানজিদকে অপহরণের সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ এনে আদালতে মামলাটির চার্জশীট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন। ২০২২ সালের ২৯ মার্চ কক্সজবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলাটির চার্জ (অভিযোগ) গঠন করে বিচার কাজ শুরু করা হয়। মামলায় রাষ্ট্র পক্ষে ৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামীদের পক্ষে তাদের জেরা, আসামীদের পক্ষে একজন সাফাই সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, আলামত প্রদর্শন, আসামীদেরকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ মামলার সকল বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে মামলাটি বিচারের জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য্য করা হয়।
ধার্য্য দিনে কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ (জেলা ও দায়রা জজ) এর বিজ্ঞ বিচারক এস.এম জিললুর রহমান আসামী মোঃ নুর প্রকাশ নুর ও মোঃ আবু ছিদ্দিক প্রকাশ তানজিদকে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭/৩০ ধারায় দোষী সাব্যস্থ প্রত্যেককে ১৪ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড, একইসাথে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
একই আদালতের স্টেনোগ্রাফার উত্তম কুমার দে জানান, মামলাটি চার্জ (অভিযোগ) গঠন করার ২ বছর ৭ মাসের মধ্যে রায় ঘোষণা করা হয়েছে।
এ রায় সম্পর্কে রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট বদিউল আলম বলেন, আদালতে মামলাটি যথেষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ উত্থাপন করে আসামীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ রাষ্ট্র পক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। বাদী পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী অ্যাডভোকেট মোস্তাক আহমদ চৌধুরী আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এ রায়ে শিশু পাচারকারী ও অপরাধ কর্মে জড়িতদের কাছে একটা ম্যাসেজ যাবে।
Good news
Good