০৫ ডিসেম্বর, ২০২৩
ছবি: ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অভিযানে আটককৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার ল্যাপটপ, মোবাইল ও অন্যান্য ডিভাইস
ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অভিযানে পর্নোগ্রাফিক সাইট পরিচালনা ও সংরক্ষণ করার ঘটনায় ০৪ টি ল্যাপটপ, ০২টি মোবাইল ও অন্যান্য ডিভাইসসহ সংঘবদ্ধ চক্রের ১২ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত রবিবার (০৩ ডিসেম্বর) আনুমানিক রাত ২ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ময়মনসিংহ শহরের কোতোয়ালি থানাধীন কেওয়াটখালী পাওয়ার হাউস রোডের ওয়াপদা অফিসের পিছনে জনৈক সেলিনা আক্তার নামে এক ব্যক্তির তিনতলা ভবনের নিচতলার পশ্চিম পাশের কক্ষে অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে আটক করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা শাখার আভিযানিক দলের মাধ্যমে অনলাইনে পর্নোগ্রাফি সম্পর্কিত প্রতারক চক্রের আটককৃতরা ১২ সদস্য সবাই পার্শবর্তী টাংগাইল জেলার বাসিন্দা ।
গ্রেফতারকৃতরা হল: ১। মধুপুর থানার দামপাড়ার মোঃ আঃ বাছেদের ছেলে মোঃ হাসান আলী (২৩),২।ঘাটাইল থানার সত্তরবাড়ীর মোঃ দুদু খানের ছেলে মোঃ সবুজ খান (২০), ৩। ধনবাড়ী থানার কিসমত সরদারপাড়ার মোঃ এনামুল হকের ছেলে মোঃ সজল (২৩), ৪।মধুপুর থানার গোলাবাড়ির মোঃ সফিকুল ইসলাম ছেলে মোঃ হুসেন আলী (২১), ৫। ঘাটাইল থানার সত্তরবাড়ীর —মোঃ আলম কাজির ছেলে মোঃ মনির হোসেন (২৩), ৬। ধনবাড়ী থানার ধোপাখালির মোঃ সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে মোঃ জুয়েল মিয়া (২১), ৭। ঘাটাইল থানার সত্তরবাড়ীর — মোঃ নজরুল ইসলামের ছেলে মোঃ নাজিম উদ্দিন (২৪), ৮। ।মধুপুর থানার মধুপুর দামপাড়ার আঃ হালিমের ছেলে মোঃ রানা মিয়া (২১), ৯। মধুপুর থানার মধুপুর দামপাড়ার মোঃ আঃ বাছেদের ছেলে হুমায়ুন কবির (২৯), ১০।মধুপুর থানার আউশনারার মজিবুর রহমানের ছেলে মোঃ আরিফুল ইসলাম (২০), ১১।মধুপুর থানার হলদিয়ার মোঃ মিনহাজ উদ্দিনের ছেলে মোঃ মাজহারুল ইসলাম (২০) এবং ১২। মধুপুর থানার কাইতকােইয়ের মোঃ হাফিজুর রহমানের ছেলে মোঃ জাকারিয়া (২৫)।
আটককৃত আসামীদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে, তারা দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন দেশী বিদেশী নারী পুরুষের ফেইক আইডি'র মাধ্যমে নানা শ্রেণির ভুক্তভোগীদেরকে একাধিক পর্ণোগ্রাফিক সাইটে আমন্ত্রণ জানিয়ে সেখানে তাদের দুর্বল মুহুর্তের ছবি ও ভিডিও ধারণ করতো এবং পরবর্তীতে এসব ছবি ও ভিডিও দ্বারা তাদেরকে ব্ল্যাকমেইল করে বড় অঙ্কের অর্থ আত্মসাত করে নিতো এবং পর্নোগ্রাফিক ভিডিও সংরক্ষণ, অশ্লীল ছবি ও ভিডিও আদান—প্রদান, বিক্রয়, বিতরণ ও সরবরাহ করে যুব সমাজের নৈতিক অবক্ষয় ও গণ—উপদ্রব সৃষ্টি করতো।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে এসব পর্ণোগ্রাফিক আলামতসহ ০৪(চার) টি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ, ০২ (দুই) টি মোবাইল এবং পর্ণোগ্রাফির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস জব্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
পুলিশ জানায় ময়মনসিংহের বাইরেও রয়েছে এই চক্রের কার্যক্রম, প্রবাসীরাও তাদের প্রতারণার স্বীকার হয়েরছ বিভিন্ন সময় ।
ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইন চার্জ (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ) ফারুখ হোসের জানান, তারা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন আইডি ব্যবহার করে মেয়েদেরকে ছেলে, এবং ছেলেদেরকে মেয়ে সাজিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে ব্ল্যকমেইল করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে ।
জেলা পুলিশ সুপার মাসুম আহমেদ ভুঞা (পিপিএম) বলেন, আটককৃত চক্রের সাথে দেশের বিভিন্নস্থানে পরিচালিত বিভিন্ন গ্রুপের লিংক খুজে পাওয়া গেছে, বাকিদেরকেও গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলছ। আমরা সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসব।