০১ অক্টোবর, ২০২৩
ছবি: স্বাধীনতা ৭১
টাঙ্গাইলের গোপালপুরে মাহমুদপুর গণহত্যা দিবস উপলক্ষে, মাহমুদপুর বটতলায় নির্মিত 'স্বাধীনতা ৭১' স্মৃতিস্তম্ভ সংলগ্ন উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকাল তিনটায় প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায়, ইউএনও আসফিয়া সিরাতের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ইউনুস ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু, কাদেরিয়া বাহিনীর কোম্পানী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ূন বাঙ্গাল, গোপালপুর থানা অফিসার ইনচার্জ জিয়াউল মোর্শেদ, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও আলমনগর ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মোমেন, প্রেসক্লাব সভাপতি জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।
এসময় ধনবাড়ীর ইউএনও মো. আসলাম হোসাইন, শহীদ পরিবারের সদস্য, উপজেলার সকল মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয়রা অংশ নেন।
জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পাকহানাদার বাহিনী দুই শতাধিক রাজাকার ও আলবদর সদস্যদের নিয়ে গোপালপুর উপজেলা সদর থেকে মাহমুদপুর গ্রামে আসে। হানাদাররা প্রথমে বঙ্গবন্ধুর সহচর ও নির্বাচিত এমএনএ হাতেম আলী তালুকদারের বাড়িতে লুটপাটসহ অগ্নিসংযোগ করে বাড়িঘর ভস্মীভূত করে দেয়। পরে হানাদার বাহিনীর দল চাতুটিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে পৌঁছলে ধনবাড়ী উপজেলার পানকাতা হাইস্কুল প্রাঙ্গণে অবস্থান করা কাদেরিয়া বাহিনীর কোম্পানী কমান্ডার হুমায়ুন বাঙ্গালের নেতৃত্বে স্বল্প সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লিপ্ত হয়। কিন্তু যুদ্ধের রসদ ফুরিয়ে গেলে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। এরপর হানাদার বাহিনী এলাকায় নরহত্যা শুরু করে। এসময় তারা গ্রামের নিরীহ মানুষকে আটক করে মাহমুদপুর বটতলা নিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে। এতে ১৭ জন শহীদ হন। অবশিষ্টরা গুরুত্বর আহত হয়। নিহতদের মধ্যে এমএনএ হাতেম আলী তালুকদারের কনিষ্ঠ ভ্রাতা হায়দার আলী তালুকদার ছিলেন অন্যতম। হতাহতরা পঙ্গু হয়ে অনেকেই এখনো বেঁচে রয়েছেন।
২০২২সালে একটি জাতীয় দৈনিকে শহীদ রমজান আলীর স্ত্রী ইফাতন বেওয়াকে নিয়ে একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে ইফাতন বেওয়ার স্বামী রমজান আলী ১৯৭১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মাহমুদপুর গণহত্যার দিন শহীদ হওয়ার স্বীকৃতি হিসাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি চিঠি পান। ১৯৭২ সালের ডিসেম্বর মাসে বঙ্গবন্ধুর পাঠানোর ওই চিঠি ইফাতন বেওয়া ৫০ বছর ধরে সংরক্ষণ করে আসছেন। অভাব অনটনে ইফাতন বেওয়া পেট চালাতে ভিক্ষাবৃত্তি অবলম্বন করছিলেন। প্রকাশিত খবরটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিতে আসে। পরে জেলা প্রশাসককে গণহত্যার শিকার ইফাতন বেওয়াসহ শহীদ ১৭ পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেন।
সাবেক জেলা প্রশাসক ড. আতাউল গণি সেসময় জানান, ইফাতন বেওয়াসহ ১৭ শহীদ পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা হিসেবে ১টি করে বীর নিবাস নির্মাণ করে দেওয়া হবে। তাঁরা যাতে শহীদ পরিবারের সদস্য হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পান, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সেই ধারাবাহিকতায় আগে স্থানীয়ভাবে দিবসটি পালন করে আসলেও, এখন রাষ্ট্রীয়ভাবে দিবসটি পালন করা হচ্ছে।
Good news
Good