৩১ মার্চ, ২০২৩
ছবি: সংগৃহিত
বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ হিসাবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত। আগ্নেয়গিরি আর দাবানল ছাড়া অন্যসব প্রাকৃতিক দুর্যোগের অভিজ্ঞতা আমাদের ফি বছরের।
ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, ভূমিধস ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেশের অনেক এলাকার জন্যই নিয়মিত অভিজ্ঞতা। এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতিকর প্রভাবের কথা আমাদের সবারই জানা
তবে হঠাৎ বা নীরবে ঘটে যাওয়া নদী ভাঙন কত মানুষকে যে প্রতিনয়ত নিঃস্ব করেছে বা করছে, তার খোঁজ আমরা অনেকেই জানি না। পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ঢাকাসহ বড় শহরে যত বস্তি রয়েছে, তার একটা বড় অংশে থাকে এই নদী ভাঙনের শিকার মানুষ, যারা সব হারিয়ে জীবিকায়নের জন্য সেখানে নতুন ঠিকানা করেছে।
আজকাল অহরহ ঘটছে বজ্রপাত আর তাতে প্রাণহানিও ঘটছে অনেক। বিষয়টি উপলব্ধি করে সরকার ইতোমধ্যে বজ্রপাতকে জাতীয় দুর্যোগ হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আশার কথা, সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা বজ্রপাত বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও ঝুঁকিহ্রাস কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
দুর্যোগ বিষয়ে সর্বসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি ও দুর্যোগ মোকাবিলায় কার্যকর প্রস্তুতি গ্রহণের লক্ষ্য সামনে রেখে আজ পালিত হচ্ছে জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস। বিপদাপন্ন মানুষের মধ্যে দুর্যোগের ঝুঁকি ও ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে মানুষের দুর্দশা অনেকাংশে কমানো সম্ভব। এ বছর জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘মুজিববর্ষের সফলতা, দুর্যোগ প্রস্তুতিতে গতিশীলতা’।
বাংলাদেশ দুর্যোগপ্রবণ দেশ হিসাবে পরিগণিত হলেও দুর্যোগ প্রস্তুতিতে আমাদের সফলতা অনেক, যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। এর সফল উদাহরণ হলো ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কমাতে সিপিপির সফলতা আজ বিশ্বব্যাপী অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত বা রোল মডেল হিসাবে স্বীকৃত। ১৯৭০-এর ১২ নভেম্বর সংঘটিত ঘূর্ণিঝড় গোর্কিতে ৫ লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু হয়, কারণ তখন তা মোকাবিলায় কোনো পরিকল্পনা বা কার্যকর উদ্যোগ ছিল না। ফলে স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশ রেড ক্রস সোসাইটির উদ্যোগে ঘূর্ণিঝড়ের আগাম সতর্কবার্তা প্রচারের লক্ষ্যে সিপিপি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
পরবর্তীকালে রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সিপিপিকে অনুমোদন দেন এবং তা পরিচালনার জন্য রাজস্ব খাতে অর্থ বরাদ্দ করেন। সেই থেকে সিপিপি বাংলাদেশ সরকার ও রেড ক্রসের (বর্তমান রেড ক্রিসেন্ট) যৌথ উদ্যোগে উপকূলীয় এলাকায় একটি টেকসই দুর্যোগ প্রস্তুতি কর্মসূচি হিসাবে পরিচালিত হচ্ছে।
সিপিপি উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতা জাগাতে সক্ষম হয়েছে, যার ফলে সাম্প্রতিককালে ঘটে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ে মৃতের সংখ্যা একক ডিজিটে নেমে এসেছে, এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা শূন্যের কোঠায় থাকে।
মনে আছে, ২০০৯ সালে মিয়ানমারে সংঘটিত সাইক্লোন নার্গিসে সেদেশের প্রায় এক লাখ মানুষের মৃত্যু হলে ঢাকায় কর্মরত মিয়ানমারের তখনকার রাষ্ট্রদূত রেড ক্রিসেন্ট সদর দপ্তরে এসে জানতে চেয়েছিলেন আমরা কীভাবে সাইক্লোনে মৃতের সংখ্যা বিস্ময়করভাবে একক ডিজিটে নিয়ে আসতে সক্ষম হলাম।
আমরা তাদের কীভাবে সাহায্য করতে পারি, সে বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। যা হোক, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ঘূর্ণিঝড়ের গতি-প্রকৃতি প্রতিনিয়তই পরিবর্তিত হচ্ছে। ফলে নতুন নতুন এলাকাকে সিপিপির কর্ম এলাকাভুক্ত করা হচ্ছে। বর্তমানে ৪২টি উপকূলীয় উপজেলায় ৭৬,০২০ স্বেচ্ছাসেবক (যার অর্ধেক নারী) ঘূর্ণিঝড়ের বিভিন্ন পর্যায়ে বিপদাপন্ন মানুষের মধ্যে সতর্ক সংকেত প্রচার ও তাদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তরসহ বিভিন্ন মানবিক সেবা প্রদান করছেন।
উল্লেখ্য, সিপিপিতে অধিকসংখ্যক নারী স্বেচ্ছাসেবকের অন্তর্ভুক্তি ও তাদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে দুর্যোগ প্রস্তুতিতে সম্পৃক্তকরণের স্বীকৃতিস্বরূপ ডিসেম্বর ২০২১-এ দুবাইয়ে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশকে জাতিসংঘ জনসেবা পদক (ইউএন পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড) প্রদান করা হয়, যা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের জন্য আরও একটি অর্জন।
আমাদের দেশে অনেক ঘটনা রয়েছে, যা দুর্যোগের সংজ্ঞায় না পড়লেও ক্ষতিকর প্রভাব অকল্পনীয়। জানা যায়, দেশে প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ থেকে ৬ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে। আর কত মানুষ যে আহত আর অঙ্গহানির শিকার হয়ে পরিবারের বোঝা হয়ে ওঠে, তার সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া দুষ্কর।
এছাড়া লঞ্চ, ট্রলার আর নৌকাডুবিও একরকম নিয়মিত ঘটনা, যদিও এসবকে দুর্ঘটনা বলে এড়িয়ে যাওয়া হয়। সাম্প্রতিক সময়ে কখনো কখনো দেশে ছোট আকারের ভূমিকম্প হলেও আমাদের সৌভাগ্য যে এখন পর্যন্ত তা মানুষের ক্ষতির কারণ হয়নি, তবে একে সতর্ক সংকেত বলা যেতে পারে।
গেল শতাব্দীর শেষদিকে এ দেশে ঘন ঘন কয়েকটি মাঝারি আকারের ভূমিকম্প হয়। এমন একটি ভূমিকম্পে রাঙ্গামাটির বরকলে বড় আকারের ফাটল ধরেছিল। মনে আছে, তখন ভূমিকম্প সচেতনতা নিয়ে আমরা অনেকেই মেতে উঠেছিলাম।
সেমিনার, কর্মশালা, প্রশিক্ষণ, সচেতনতা কার্যক্রম, বিল্ডিং কোড মানার তাগিদ ইত্যাদি কত আয়োজন। সবশেষ ২০১৬ সালে নেপালে ভূমিকম্প এবং বাংলাদেশে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া-কম্পন আমাদের আরেকবার নাড়া দিয়েছিল। একমাত্র অধিক সচেতনতা আর ভবন-স্থাপনা নির্মাণে বিল্ডিং কোড মেনে চলাই এ বিষয়ে ঝুঁকিহ্রাসের যথার্থ সমাধান।
প্রাকৃতিক এতসব দুর্যোগ ছাড়াও রোহিঙ্গা সংকট মানবসৃষ্ট এক মহাদুর্যোগ। মানবিক কারণে বাংলাদেশ সরকার প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিলেও তাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়টি থমকে আছে। দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার না করা হলে এ দুর্যোগ থেকে কবে বাংলাদেশ পরিত্রাণ পাবে তা অনিশ্চিত।
এতদসত্ত্বেও বাংলাদেশের মানুষ প্রকৃতিগতভাবেই দুর্যোগ সহনশীল। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে প্রতিবছর বন্যায় যে বিপুলসংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়, সে তুলনায় আমাদের প্রাণহানি নগণ্য। এর কারণ আমাদের অনেক কার্যকর উদ্যোগ। এমনই একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ হলো ২০১৯ সালে প্রণীত সরকারের ‘দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলি’ (Standing Orders on Disaster-SOD), যেখানে দুর্যোগের বিভিন্ন পর্যায়ে সরকার ও বিভিন্ন সংস্থার ভূমিকা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া ইউনিয়ন, এমনকি ওয়ার্ড পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি (ডিএমসি) এ আদেশের একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন, কারণ এসব কমিটি স্থানীয় পর্যায়ে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে কার্যকর ভূমিকা রাখছে।
উল্লেখ্য, এই এসওডি প্রথমে ১৯৯৭ সালে প্রণীত হয় এবং পরবর্তীকালে সময় ও প্রেক্ষাপট বিবেচনায় পরিবর্তিত ও সংশোধিত হয়ে ২০১৯ সালে সর্বশেষ সংস্করণ প্রকাশিত হয়। পৃথিবীর অনেক দেশ তাদের দেশে একই ধরনের ডকুমেন্ট তৈরির জন্য বাংলাদেশের এসওডিকে রেফারেন্স হিসাবে বিবেচনা করে থাকে।
মনে আছে, ইন্দোনেশিয়ায় রেড ক্রস মিশনে থাকাবস্থায় (২০০৫-২০০৭) বাংলাদেশের চেয়েও অধিক দুর্যোগপ্রবণ দেশটির সরকার দুর্যোগ বিষয়ে আদেশ বা আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে বিভিন্ন সভা ও কর্মশালায় অংশগ্রহণকালে আমি বাংলাদেশের এসওডির (তখনকার সংস্করণ) অধীনে জাতীয় থেকে স্থানীয় (ওয়ার্ড) পর্যায়ে বিভিন্ন ডিএমসি গঠনের ধারণা জানাই, ইন্দোনেশিয়াসহ এসব সভা-কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী অন্য দেশের প্রতিনিধিরাও যার প্রশংসা করেন। তারা উপলব্ধি করেন বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীর দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ও তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় কমিটি কীভাবে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। যা হোক, দুর্যোগ প্রস্তুতিতে বাংলাদেশের আরও একটি কার্যকর উদ্যোগ হলো ২০১২ সালে প্রণীত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন।
আরও রয়েছে ২০০৯ সালে প্রণীত ‘জলবায়ু পরিবর্তন কৌশলপত্র’। এসব আদেশ ও আইনের মাধ্যমে আমাদের দুর্যোগ প্রস্তুতি দৃঢ় হয়েছে, যার ফলে দুর্যোগে মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা গেছে। এছাড়া বাংলাদেশে রয়েছে দুর্যোগবিষয়ক পৃথক মন্ত্রণালয়, যা অনেক দেশেই নেই।
দুর্যোগ প্রস্তুতি থেকে বাদ পড়েনি ৩৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পও। কারণ ক্যাম্পে অহরহ দুর্যোগ-দুর্ঘটনা লেগেই আছে। ২০২১ সালে ক্যাম্পে একবার ঘূর্ণিঝড় ও দুবার বন্যা হয়েছে। এছাড়া গত বছরের ২২ মার্চ ঘটে যাওয়া ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ফলে ক্যাম্পে এক মহাদুর্যোগ নেমে আসে। এ বছর ২ ও ৯ জানুয়ারি দুটি ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ড ঘটে, যাতে প্রায় পাঁচশ ঘর এবং একটি কোভিড হাসপাতাল পুড়ে যায়। সবশেষ গত মঙ্গলবারও ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ড ঘটে চার শতাধিক ঘর পুড়ে গেছে। এসব পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রতিটি ক্যাম্পে রয়েছে ১০০ সদস্যের সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক দল, যারা দুর্যোগ মোকাবিলা ইউনিট (ডিএমইউ) হিসাবেও স্বীকৃত। এসব স্বেচ্ছাসেবক প্রতিনিয়তই ক্যাম্পে সংঘটিত বিভিন্ন দুর্যোগ বা জরুরি পরিস্থিতিতে উদ্ধার ও জরুরি সেবা কাজে অংশগ্রহণ করে থাকে। ডিএমইউ মূলত ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি ও সাড়া প্রদানের উদ্দেশ্যে গঠিত হলেও স্বেচ্ছাসেবকরা ক্যাম্পে সংঘটিত যে কোনো জরুরি মূহূর্তেই সেবা প্রদান করে থাকে।
বাংলাদেশ দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে অভাবনীয় সফলতা দেখিয়েছে একথা অনস্বীকার্য। এটা শুধু আমাদের নিজস্ব মূল্যায়ন নয়, আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন ফোরামে বহুবার বহুভাবে আমাদের এ স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক ডিআরআর সম্মেলনসহ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে এমন মূল্যায়ন শুনে গর্ব হয়েছে। দুর্যোগ প্রস্তুতিতে সরকার ও সহযোগী প্রতিষ্ঠানের জনসম্পৃক্ততামূলক কার্যক্রম আমাদের এ সফলতা এনে দিয়েছে। আশার কথা, আজকাল প্রায় সব দেশীও এনজিও ক্ষুদ্রঋণ তথা নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কার্যক্রম তাদের পরিকল্পনাভুক্ত করছে।
এতসব সফলতার পরও দেশে দুর্যোগ প্রস্তুতি ও সাড়াদান উদ্যোগে ব্যক্তি ও বাণিজ্যিক-করপোরেট সংস্থার অংশগ্রহণ তথা অবদান উল্লেখ করার মতো নয়। বিশ্বের অনেক দেশে এ ধরনের কাজে ব্যক্তি ও বাণিজ্যিক-করপোরেট প্রতিষ্ঠানের অবদান বা অংশগ্রহণ নিয়মিত ব্যাপার হলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এর দেখা মেলা ভার। বরং যেখানে অনুদান দিলে অধিক প্রচার হবে, আমাদের করপোরেট জগতের সেদিকেই নজর বেশি। অবশ্য ব্যতিক্রম যে নেই তা নয়। বেশকিছু প্রতিষ্ঠান রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মানবিক কাজে যে সহযোগিতা করছে, তা স্বীকার করতেই হবে। তবে বিভিন্ন দাতাগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে তাদের দেশে দুর্যোগ প্রস্তুতি ও সাড়াপ্রদান উদ্যোগে ব্যক্তি বা করপোরেট পর্যায়ে অবদানের কথা জানতে পেরে রীতিমতো বিব্রতই হতে হয়। বলা বাহুল্য, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা সরাসরি অথবা স্থানীয় এনজিওর মাধ্যমে বাংলাদেশে যে মানবিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে তার একটা বড় আর্থিক উৎস তাদের দেশের ব্যক্তি করপোরেট সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান। ইন্দোনেশিয়ায় আমেরিকান রেড ক্রসের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে জেনেছি কয়েকটি বহুজাতিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান কীভাবে তাদের আয়ের একটা বড় অংশ সামাজিক দায়বদ্ধতার (সিএসআর) অংশ হিসাবে সেদেশের রেড ক্রসসহ বিভিন্ন মানবিক প্রতিষ্ঠানকে অনুদান হিসাবে নিয়মিতভাবে দিয়ে থাকে। বাংলাদেশেও এ বিষয়ে অধিক ব্যক্তি-করপোরেট উদ্যোগের প্রত্যাশা করি। এর ফলে আমাদের দেশ দুর্যোগ প্রস্তুতিতে আরও সক্ষমতা অর্জন করতে পারবে। এর মধ্য দিয়ে সার্থক হবে জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি।
Good news
Good