১৮ অগাস্ট, ২০২৪
ছবি: ধুনট মহিলা কলেজ
বগুড়ার ধুনটের মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ এস এম জিয়াউল হক ও সাবেক সভাপতি আসিফ ইকবাল সনির বিরুদ্ধে নিয়োগ বানিজ্য ও অভ্যন্তরীন আয়ের কোটি টাকার আত্মসাৎ এর অভিযোগে শিক্ষক কর্মচারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন।
বিক্ষুব্ধরা রবিবার অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। ২৪ ঘন্টার মধ্যে অধ্যক্ষ পদত্যাগ না করলে আন্দোলনত শিক্ষকরা ক্লাস বর্জনের ঘোষনাও দিয়েছেন।
শিক্ষক হায়দার আলী ও নুরে আলম ও মোজাহেরুল আনোয়ার জানান, আওয়ামলীগের টানা তিন মেয়াদের বগুড়া ৫ আসনের সাবেক এমপি হাবিবর রহমানের ছেলে আসিফ ইকবাল সনি ক্ষমতার দাপটে ধুনট মহিলা ডিগ্রী কালেজের সভাপতি হন।
তিনি ২০১৫ সালে এস এম জিয়াউল হককে কালেজের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেন। নিয়োগ লাভের পর থেকে অধ্যক্ষ জিয়াউল হক ও সভাপতি আসিফ ইকবাল সনি বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে অবৈধ নিয়োগ নিয়োগ বানিজ্য , কালেজের অভ্যন্তরীন আয় , শিক্ষকদের টিউশন ফির অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষকরা জানান, গত ১০ বছর ধরে শিক্ষকদের টিউশন ফি বাবদ প্রায় ১০ লাখ টাকা শিক্ষকদের মাঝে বন্টন না করে অধ্যক্ষ ও সভাপতি আত্মসাৎ করেছেন। কালেজের ল্যাব নির্মান বাধ্যতামুলক হলেও ল্যাব নির্মান না করেই সভাপতি এমপি পুত্র সনি ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ৪ জন ল্যাব সহকারী নিয়োগ দিয়ে অধ্যক্ষ ও সভাপতি প্রায় ৮০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
উপাধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম বলেন, সনির বাবা হারিবর রহমান তিন মেয়াদে এমপি থাকার সুবাদে আসিফ ইকবাল সনি ক্ষমতার প্রভাব খাটি একই সাথে ধুনট মহিলা ডিগ্রি কলেজ,গোশাইবাড়ি ডিগ্রি কালেজ ও জোড়খালি সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার সভাপিতর পদ দখল করে নিয়োগ বানিজ্যের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
আসিফ ইকবাল সনি ও অধ্যক্ষ জিয়াউল হক তার কাছ থেকে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে আত্মসাত করেছেন।
কালেজের ১৬জন শিক্ষক ৫জন প্রদর্শক ও ৯ কর্মচারীর উচ্চতর বেতন স্কেল দেওয়ার সময় এক লাখ ৫২ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন। ২০২৩ /২৪ শিক্ষা বর্ষের ছাত্রীদের উপবৃত্তি দেওয়ার নামে প্রতিজনের থেকে ১০০ টাকা হিসাবে প্রায় ২০ হাজার আদায় করে আতœসাত করেছেন। গত তিন বছরের এইচ এসসি পরীক্ষার ব্যবহারিক খাতা অবৈধ ভাবে বিক্রি করে সমুদয় অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
২০২৩ সালের এইচ এস সি ব্যবহারিক পরীক্ষার ফি বাবদ দুই লক্ষ টাকা শিক্ষকদের মাঝে বন্টন না করে সভাপতি ও অধ্যক্ষ আত্মসাৎ করেছেন।
শিক্ষক মোজাহেরুল আনোয়ার বলেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এমপি হাবিবর রহমান আওয়ামীলীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হলে ভুক্তভোগী শিক্ষকরা জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দেই।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর হারুন উর রশিদ সরেজমিনে তদন্ত করে সভাপতি সাবেক এমপি পুত্র সনির ও অধ্যক্ষ জিয়াউল হকের নিয়োগ বানিজ্য , অনিয়ম দুর্নীতির সত্যতা পেয়ে আসিফ ইকবাল সনিকে সভাপতির পদ থেকে অপসরন করেন এবং অধ্যক্ষকে সতর্ক করেছেন।
এরপর অধ্যক্ষ বেপরোয়া হয়ে শিক্ষক কর্মচারীদের সাথে অসৌজন্য মুলক আচারন ও নানা ভাবে হয়রানী করেন।
অধ্যক্ষ এসএম জিয়াউল হক তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি বর্তমানে পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছি।