০৭ ডিসেম্বর, ২০২৩
ছবি: রোবেল পারভেজ
ধামরাইয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বিসিএস কর্মকর্তা রোবেলের গ্রামে শোকের মাতম থামছেনা। সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ প্রাপ্ত রোবেল পারভেজের মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি মির্জাপুর উপজেলার বন্ধ্যে কাওয়ালজানি পৌছালে পরিবার সহ গ্রামজুড়ে শোক নেমে আসে। রোবেলের অসুস্থ্য মা ও তার দেড় বছরের কন্যা শিশুর আহাজারিতে সেই শোক গ্রামজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।রুবেল পারভেজ ওই গ্রামের মৃত মোকাদ্দেসের ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান রোবেল। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি বড়। ছোটবেলা থেকেই তিনি মেধাবী। লেখাপড়ায় বরাবরই প্রথম। প্রাথমিক ও জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছেন তিনি। বাবার সাথে নৌকা চালানো এবং দিনজুরের কাজ করে লেখাপড়া চালিয়েছেন।
২০০৭ সালে উপজেলার বন্দে কাওয়ালজানী খাদেম আলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সুনামের সাথে এসএসসি পাস করে ২০০৯ সালে সাভার সরকারি কলেজ থ্যেকে এইচ এসসি পাস করেন।
জাহাঙ্গীরনগগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে সম্মানসহ স্নাতকোত্তর পাস করেন। ছাত্রজীবনেই দায়িত্ব নেন পুরো পরিবারের। বাবার মৃত্যুর পর নিজে টিউশনি করে ছোট ভাইদের লেখাপড়া এবং সংসার খরচ যোগান। চাকুরী শুরু করেন মার্কেন্টইল ব্যাংক মানিকগঞ্জের ঝিটকা শাখায়। এরই মধ্যে অংশ নেন ৪১ তম বিসিএস পরীক্ষায়। সেখানে তিনি শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হন। প্রশাসন ক্যাডারের আশায় ৪২ তম বিসিএস এর মৌখিক পরীক্ষা দিয়েছেন।
রোবেল পারভেজ পরিবার নিয়ে ধামরাইয়ে ভাড়া বাসায় থেকে চাকরি করতেন। প্রতিদিনের মত বৃহস্পতিবার সকালেও রোবেল অফিসে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হন। ধামরই বাসস্ট্যান্ডে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিরেন। হঠাৎ সেলফি পরিবহন নামের একটি বাস অপেক্ষমান যাত্রীদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই রোবেলসহ দুইজন মারা যান।
রুবেলের মৃত্যুর খবর তার গ্রামে ছড়িয়ে পরলে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। বেলা আড়াইটা দিকে রুবেলের মরদেহ বাড়িতে এসে পৌছালে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। তার বৃদ্ধ মা কুলসুম বেগম বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন। রোবেলের স্ত্রী ফারজানা আফরিন বার বার মুর্চা যািেচ্ছলেন। শিশু কন্যাকে বুকে জড়িয়ে শুধু বিলাপ করছেন আর বলছেন, তোকে নিয়ে আমি কোথায় যাবো?
বিকেল সাড়ে ৪টায় বন্দ্যে কাওয়ালজানি খাদেম আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে সামাজিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
মির্জাপুর শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারি কলেজের শারিরিক শিক্ষা বিভাগের শিক্ষক ওই গ্রামের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, মেধাবী রোবেল তার পরিবারের প্রধান ভরসা ছিলো। তার মৃত্যুতে পরিবারটির অভিভাবক হারা হলো।
মির্জাপুর উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মীর্জা শামীমা আক্তার শিফা বলেন, রুবেল আমার পরিবারের খুব কাছের একজন ছিলো। তার মৃত্যুতে পরিবারটির অপুরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল।
Good news
Good