১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
ছবি: মাটির ঘর
গাইবান্ধার জেলার সাদুল্লাপুরের ধাপেরহাট ইউনিয়ন এটি উঁচু এলাকা। এঁটেল মাটির অধিকাংশ বাড়িতে ছিল মাটির ঘর। কয়েক বছর আগেও নজরে পড়তো এসব ঘর। একসময় এ ঘরগুলোকে ‘শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘর’ বলা হতো। প্রচণ্ড গরম ও শীতে বসবাসের উপযোগী ছিল এই মাটির ঘর। কিন্তু এখন আর মাটির ঘর নির্মাণে কারও আগ্রহ নেই। ফলে এ অঞ্চলে আর তেমন চোখে পড়ে না ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর।
প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ মাটির ঘরে বসবাস করে আসছে। এসব ঘরগুলো গ্রামের মানুষগুলোর কাছে এসি ঘর। ঝড়-বৃষ্টি থেকে বাঁচার পাশাপাশি প্রচণ্ড গরম ও শীতে বাস-উপযোগী এসব ঘর। আধুনিকতার ছোঁয়া আর কালের আবর্তে সাদুল্লাপুর উপজেলার ওই ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রামের ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর এখন হারিয়ে যেতে বসেছে।
মাটির সহজলভ্যতা, প্রয়োজনীয় উপকরণ আর শ্রমিক খরচ কম হওয়ায় আগের দিনে মানুষ মাটির ঘর বানাতে বেশ আগ্রহী ছিল। একটি মাটির ঘর তৈরি করতে কারিগরদের সময় লাগতো দেড় থেকে দুই মাস। কিন্তু চাহিদা না থাকায় মাটির ঘর তৈরির কারিগররাও এখন এই পেশা ছেড়ে অন্য অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়ছেন।
বোয়ালীদহ গ্রামের আমজাদ হোসেন জানান, এঁটেল বা আঠালো মাটি কাদায় পরিণত করে দুই-তিন ফুট চওড়া করে দেয়াল তৈরি করা হতো। ১০-১৫ ফুট উঁচু দেয়ালে কাঠ বা বাঁশের সিলিং তৈরি করে তার ওপর খড়কুটা অথবা ঢেউটিনের ছাউনি দেওয়া হতো। মাটির ঘর অনেক সময় দোতলা পর্যন্ত করা হতো। সব ঘর বড় মাপের হয় না। গৃহিণীরা মাটির দেয়ালে বিভিন্ন রকমের আলপনা একে ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতেন।
ধাপেরহাট ইউনিয়নের বড় ছত্রগছা গ্রামের আকলিমা বেগম (৬০) নামের এক নারী বলেন, প্রায় ২৫ বছর আগে আমরা মাটির ঘর নির্মাণ করছি। এখনও এই ঘর ভাঙেনি। আর এই ঘরগুলোত বসবাসে অনেক শান্তি পাওয়া যায়।
হিংগারপাড়া গ্রামের খয়রাজ্জামান সরকার বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বর্ষা মৌসুমে মাটির ঘরের ক্ষতি হয় বলে ইট-সিমেন্টের ঘর নির্মাণে এখন উৎসাহী হচ্ছে মানুষ।
ধাপেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মিন্টু বলেন, মাটির ঘর বসবাসের জন্য আরামদায়ক হলেও যুগের পরিবর্তনে আধুনিকতার সময় অধিকাংশই মানুষ মাটির ঘর ভেঙে মানুষ এখন ইটের ঘর তৈরি করে দালানে বসবাস করছে।
Good news
Good