০৯ মে, ২০২৩
ছবি: ধূলিয়া হাই এটাস্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ধূলিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিরুদ্ধে পাশের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনের শ্রেণিকক্ষ দখলের অভিযোগ উঠেছে। আজ মঙ্গলবার উপজেলার ধূলিয়া হাই এটাস্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ধূলিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং ধূলিয়া হাই এটাস্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পাশাপাশি অবস্থিত।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনটি ২৭ মার্চ হস্তান্তরের পর সেখানে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছিল। কলেজের শিক্ষকদের নির্দেশে সেই ভবনের শ্রেণিকক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জোর করে বের করে কলেজের শিক্ষার্থীরা দখলে নেয় বলে অভিযোগ ওঠে। এ জন্য আজ প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের পাঠদান হয়নি। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ভবনের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেয় স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ।
কলেজের শিক্ষার্থীরা বলছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি কলেজের জায়গায় নির্মিত। এ জন্য শিক্ষকদের নির্দেশে তারা এখন থেকে সেখানে ক্লাস করবে।
ধূলিয়া হাই এটাস্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. মাসুমা আক্তার বলেন, সকাল সাড়ে আটটার দিকে বিদ্যালয়ে এসে দেখেন, তাঁর শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষের বাইরে।
শিশুশিক্ষার্থীরা তাঁকে জানায়, তাদের শ্রেণিকক্ষ থেকে বের করে দিয়েছে। পরে তিনিসহ শিক্ষকেরা শ্রেণিকক্ষে গিয়ে দেখেন, সব কক্ষে ধূলিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা বসে আছে। পরে তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। বেলা দুইটার দিকে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ওয়ালী উল ইসলাম ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আতিকুল ইসলাম পরিদর্শন করেন। তাঁরা চলে যাওয়ার পর সাড়ে তিনটার দিকে কলেজের অধ্যক্ষের উপস্থিতিতে ভবনের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়।
প্রধান শিক্ষক মাসুমা আক্তার আরও বলেন, তাঁর বিদ্যালয়ে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী আছে। শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও শিক্ষকদের কার্যালয়সহ মোট ১৪টি কক্ষের প্রয়োজন। সদ্যনির্মিত ভবনসহ ৩টি ভবনে মোট ১১টি কক্ষ আছে। নতুন ভবনটি ২৭ মার্চ তাঁদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ভবনটি কলেজের অধ্যক্ষ গায়ের জোরে দখল করতে চান বলে তিনি অভিযোগ করেন।
ধূলিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ এস এম জহিরুল ইসলাম বলেন, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে তাঁদের জমিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে। নতুন ভবনটিতে ক্লাস শুরু হয়েছে। অথচ তাঁকে জানানো হয়নি।
তাঁর শিক্ষার্থীদের পাঠদানের কক্ষসংকট আছে। এ জন্য প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের নতুন ভবনে ক্লাস করতে না আসার জন্য বলেছিলেন, যা ঠিক হয়নি। এ জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করছেন। ভবনের মূল ফটকে তালা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাল (বুধবার) সকালে খুলে দেওয়া হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধূলিয়া হাই এটাস্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বহুমুখী দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের আগে নিজস্ব সম্পত্তিতে ভবনটি নির্মিত হচ্ছে মর্মে লিখিতভাবে প্রত্যয়ন দিয়েছিলেন ধূলিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ এস এম জহিরুল ইসলাম।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, যথাযথ নিয়ম মেনেই ধূলিয়া হাই এটাস্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে ভবন নির্মিত হয়েছে। সেখানে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পাঠদান করার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, শ্রেণিকক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়ার সত্যতা পেয়েছেন। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তাঁদের নির্দেশ মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল আমিন বলেন, ‘শিশুশিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়ার ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।,
Good news
Good