১৮ অগাস্ট, ২০২৩
ছবি: নৌকা নির্মানের পর
টাঙ্গাইলে নাগরপুর উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নে চেচুয়াজানী গ্রামে তৈরি করলেন ঐতিহ্যবাহী গৌরবময় ৭২ হাত খেল্লা নৌকা।
মরহুম সোবাহান মিয়া এর ছেলে ও ভাতিজারা মিলে নৌকা তৈরি করেছন। সোবাহান মিয়া, আরজু মিয়া নামকরন করা হলেও চাচা-ভাতিজা নামে পরিচিত। আজ ১৮/০৮/২০২৩ ইং রোজ- শুক্রবার কাজ সম্পন্ন করে গ্রামবাসীর কয়েক শতাধিক নৌকা প্রেমি মানুষ একত্রিত হয়ে নৌকাটি নদীতে নামালেন।
নৌকা তৈরির কাজগুলো করেছেন চেচুয়াজানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোঃ সেকান্দার আলী এর বাড়ির আঙিনায়। মিস্ত্রি দিনরাত হাতুড়ি-বাটালের ঠুকঠুকানিতে মুখর হয়ে উঠেছে এই ঐতিয্যবাহী নৌকা। নৌকা’টি নির্মিত করতে ৫/৬ জন মিস্ত্রি ও কর্মচারী মিলে প্রায় দুই থেকে আড়াই মাস প্ররিশ্রম করে নৌকার কাজ সম্পন্ন করেছেন।
দিনরাত কাঠ চিরানো, তক্তা ও গুড়া বানানো, রান্দা দিয়ে কাঠ মসৃণ করা, তারকাঁটা (ছোট লোহা) ও পাতাম (লোহার পাত) দিয়ে তক্তা জোড়া লাগানো ইত্যাদি কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। হাতুড়ি আর বাটামের আঘাতে নৌকার কাঠ প্রস্তুত করছেন সুতার।
নৌকা তৈরিতে ব্যবহার করেছেন শাল, কড়ই, বাউলা ও মেহগনি কাঠ দিয়ে তৈরি করেছেন। দাম একটু বেশি হলেও সব থেকে টেকসই হয় শাল কাঠ দিয়ে এজন্যই এই কাঠ দিয়ে তৈরি করেছেন।
এ ছাড়া নৌকাকে বিভিন্ন আঘাত থেকে রক্ষায় এখন পাশে লোহার পাতও যুক্ত করা হয়েছে। তাতে খরচ বাড়লেও নৌকা সুরক্ষিত থাকে।
স্থানীয়রা জানায় এক যুগ আগেও তাদের বিশাল ঐতিয্যবাহী নৌকা তৈরি করে বিভিন্ন স্থানে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান করেও অনেক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। দূর দূরান্তে নৌকা বাইচে অংশগ্রহণ করে একাধিকবার প্রথম স্থান অর্জন করে পূর্বে বেশ সুনাম অর্জন করেছিলো নৌকাটি।
বেশ কয়েক বছর যাবৎ নৌকা’টি নষ্ট হয়ে যায়, যার ফলে গ্রামবাসীরা নৌকাটি মেরামত কথা চিন্তা করে। নৌকাটি অনেক বেশি ক্ষতি হওয়ার কারনে মেরামত না করে নতুন করে তৈরি হয় ৭২ হাত নৌকা।
নৌকার মালিক আরও জানান, নৌকার দাম নির্ধারণ করা হয় আকার ও ব্যবহৃত কাঠের ওপর নির্ভর করে। বর্তমানে লোহা ও কাঠের দাম বেশি হওয়ায় এই নৌকায় প্রায় ৭-৮ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে।