৩০ এপ্রিল ২০২৫
হোম স্বাস্থ্য সারাদেশ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি ও বাণিজ্য খেলাধুলা বিনোদন আন্তর্জাতিক ধর্ম ও জীবন লাইফ স্টাইল শিক্ষা প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান পরিবেশ চাকরি বা ক্যারিয়ার মতামত আইন-আদালত কৃষি ও প্রযুক্তি বিশেষ সংবাদ অপরাধ সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিশ্বকাপ ফুটবল
সাহিত্য ও সংস্কৃতি

সুখের গল্প! - অনুপ্রেরণামূলক রচনা

২০ মে, ২০২৩

তারুণ্য ২৪,
নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি: সংগৃহীত


যা অবশ্যম্ভাবী, যা ঘটবেই বা যা ঘটে গেছে, তাই নিয়ে দুশ্চিন্তা করে অহেতুক জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলবেন না। জীবনকে উপভোগ করতে শিখুন। প্রতিকার-প্রতিরোধের বিফল পরিস্থিতি মনে না রেখে, মেনে নিন। এতে যন্ত্রণা কমবে, সুখী হবেন। 
.
আমাদের জন্য শরীর ও  মন দুটোই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু আমরা বেশিরভাগ মানুষই ইতর প্রাণীর ন্যায় কেবল শরীরকেই গুরুত্ব দেই। শরীর চোখের সামনে দৃশ্যমান বলেই একে খাবার দিয়ে পরিপুষ্ট করে তুলি, অসুস্থতায় চিকিৎসা দেই। অথচ মনেরও খোরাক দরকার, সেও পুষ্টিহীনতায় ভোগে। কেবল তাকে চোখে  দেখতে পাইনা বলেই আমরা তার অস্তিত্ব অস্বীকার করি। 
.
সৃষ্টিকর্তা আপনার চারপাশে অসংখ্য সুখ উপকরণ ছড়িয়ে রেখেছেন, তারপরও আপনি অসুখী। আমরা ভাল থাকার জন্য অর্থোপার্জন করি কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ সেই অর্থোপার্জন করতে গিয়েই জীবনকে অতিষ্ট করে তুলে। যে কাজ করতে ভাল লাগেনা, যে কাজে মন টানেনা; যদি বছরের পর বছর আপনি  তাই করতে থাকেন; তবে শোনে রাখুন, মনকে আপনি সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। 
.
কী নেই তার হিসেব না করে, যা আছে তাই নিয়ে নিজের মধ্যে আত্মতৃপ্তিবোধ সৃষ্টি করুন। মনে রাখবেন, সুখ সম্পূর্ণ আপেক্ষিক ব্যাপার!
.
জীবনকে অতিষ্ট করে তুলবেন না। কেবল ভাবুন... ভাল থাকতে হবে, ভাল রাখতে হবে। এজন্য চাই একটু অবসর । অবসরে মানুষের উপকার হয় এমন কিছু কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখুন। হয়তো  ভাবছেন, মানুষের উপকার করতে তো লাখ-লাখ টাকার প্রয়োজন, আর  তা তো আপনার কাছে নেই। আপনি ভুল ভাবছেন। চলতিপথে পড়ে থাকা ইটের টুকরোটা ফেলে দেয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতেও মানুষের উপকার হবে। ঐ ইটের টুকরো গাড়ির চাকার নিচে পড়ে বড় কোন এক্সিডেন্ট হতে পারতো, বহুমানুষ তাতে হতাহত হতে পারতো। ঐ এক্সিডেন্টে পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তিটিকে হারিয়ে কোন পরিবার অসহায় হয়ে পরতে পারতো।
.
আকাশের চাঁদটাকে সুখ ভেবে বাঁশের আঁকড়ায় তা পারতে যাওয়া বোকামি। শূণ্যে সুখ নেই....সেখানে কেবলই শূণ্যতা........সুখ খুঁজুন হাতের নাগালের মাটিরপ্রদীপে।
.
মানুষের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলুন। মানুষকে চেনার চেষ্টা করুন। যত মানুষের সাথে মিশবেন, তত জীবনবোধের সৃষ্টি হবে। তবে কিছু মানুষ হয় জন্মগতভাবে নেতিবাচক, তাদের সঙ্গ এড়িয়ে চলুন। বয়োজ্যেষ্ঠ, জ্ঞানী-গুণী মানুষের সান্নিধ্যে যান, তারা অনেকেটাই সুশীতল ছায়াদানকারী বটবৃক্ষের মতো।

কিছু অবসর কাটান তৃণমূল মানুষের সাথে, তাদের কাছে যে গল্প আছে, তা পৃথিবীর কোন গল্প-উপন্যাসে পাবেন না। তাদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলুন, তাদেরকে নিঃস্বার্থভাবে ভালবাসুন, তাদের জীবনমান সম্পর্কে সুপরামর্শ দিন। এতে করে একদিন দেখবেন, আপনিও তাদের আপনারজন হয়ে গিয়েছেন। এর মতো নিখাঁদ সুখ জগতে নেই।
.
প্রকৃতির সাথে মানুষের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। প্রকৃতির সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলুন। একটু জায়গা থাকলে কিছু গাছ রোপন করুন। প্রতিদিন না-হলেও অন্তত সপ্তাহে দু-একদিন গাছগুলির পরিচর্যা করুন। আপনি কি জানেন, গাছেরাও হাসে-কাঁদে, তারাও কথা বলতে পারে?
.
মনে রাখবেন, আমরা প্রাণহীন রোবট নই; আমরা মানুষ। জীবনের জন্য কাজ, কাজের জন্য জীবন নয়। অবসরে বই পড়ুন, গল্প করুন........প্রাণ খুলে হাসুন। ভোরে ঘুম থেকে ওঠুন, হাঁটুন.. ভোরের শিশির দেখুন, প্রাণভরে ভোরের নির্মল প্রকৃতিটা উপভোগ করুন।

জীবন তো একটাই......এ নিয়ে এত ভাববার কিছু নেই। সদাচারী, সদালাপী আর সদচিন্তা করুন....এতে আর যাই হোক, সুখ আপনাকে ফাঁকি দিতে পারবেনা।

রচনায়: মো: তারেকুল ইসলাম 
প্রভাষক ( বাংলা) 
বল্লা করোনেশন হাই স্কুল এন্ড কলেজ।

Related Article