৩০ এপ্রিল ২০২৫
হোম স্বাস্থ্য সারাদেশ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি ও বাণিজ্য খেলাধুলা বিনোদন আন্তর্জাতিক ধর্ম ও জীবন লাইফ স্টাইল শিক্ষা প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান পরিবেশ চাকরি বা ক্যারিয়ার মতামত আইন-আদালত কৃষি ও প্রযুক্তি বিশেষ সংবাদ অপরাধ সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিশ্বকাপ ফুটবল
সারাদেশ / কৃষি ও প্রযুক্তি

সরিষার ভালো ফলনে কৃষকের স্বস্তি

০৪ জানুয়ারী, ২০২৩

জুয়েল রানা,
স্টাফ রিপোর্টার

ছবি: মাঠজুড়ে সরিষা খেত।

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে এবার সরিষা ফলন ভালো হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং দেশে ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা আগ্রহ ভরে সরিষা চাষ করেছেন। উপজেলার মাঠজুড়ে সরিষা খেত। মাঠে সরিষা ফুলের মনোরম দৃশ্য চোখ জুড়িয়ে যায়। রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণও কম হয়েছে এবার। কৃষকরা আশা করছেন ফলনে লাভবান হবেন। এতে করে কৃষকের স্বস্তি ফিরে এসেছে।
স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগে স্থানীয় জাতের সরিষা চাষ করায় ফলন কম হতো এবং উৎপাদনে সময়ও বেশি লাগতো, কৃষকরা লাভবান হতো না। বর্তমানে উচ্চফলনশীল জাত আসায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। কম জীবনকালের বারি-১৪ জাতের সরিষা ৮০-৮৫ দিনেই ঘরে তোলা যায়। প্রতি হেক্টরে ফলন হয় প্রায় দেড় মেট্রিক টন। সরিষা চাষ করে ওই জমিতে নির্বিঘেœ বোরো আবাদ করে চাষিরা। সরিষা খেতে বোরো চাষে সারও কম লাগে এবং ফলন  ভালো হয়।   
গতকাল বুধবার সরেজমিনে দেখা গেছে, মাঠের যে দিক চোখ যাচ্ছে হলুদের সমারোহ। যেন হলুদ রঙের গালিচা সাজিয়ে রেখেছে এক অপরূপ প্রকৃতি, মাঠে দুলছে সরিষা  ফুল। দেখলেই মনটা জুড়িয়ে যায়। অনেকে সরিষা ফুলের প্রকৃতিতে সেলফিতে ব্যস্ত। চারিদিকে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত পুরো দিগন্ত, যেন বিস্তীর্ণ হলুদের রাজ্য। ভালো ফলনের হাতছানিতে কৃষকের চোখেমুখে স্বস্তির অভিব্যক্তি। বাজারে সরিষার চাহিদা থাকায় চাষিদের আগ্রহ বেড়ে গেছে। কৃষিসমৃদ্ধ এলাকা হওয়ায় দুই ফসলি জমিতে চাষ হচ্ছে তিন ফসল। দেশি জাতের পরিবর্তে আবাদ করেছেন উচ্চফলনশীল বারি-১৪ জাতের সরিষা।
কৃষি অফিসের তথ্য মতে, উপজেলায় ১০ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ করছেন চাষিরা। ধান চাষের পর জমি পতিত থাকে। পতিত জমিতে এ মৌসুমে সরিষা আবাদে ৫০০ হেক্ট নির্ধারণ করা হলেও ৫৬৩ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করেছে কৃষকরা। গতবার ৪৩০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছিল। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি। সরিষা চাষে কৃষকদের উদ্ধুদ্ধ করতে দেয়া হয়েছে পরামর্শ ও সরকারিভাবে প্রণোদনায় বীজ-সার। 
মুশুদ্দি কামার পাড়া গ্রামের কৃষক আনছার আলী বলেন, ‘আগে একটি জমিতে শুধু ধান আবাদ করতাম। ধান আবাদ শেষে জমি পতিত থাকতো। ভোজ্য তেলের দাম বাড়ায় ধান আবাদের পাশাপাশি মাঝখানের সময়টা সরিষা চাষ হচ্ছে। সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে বারি ১৪ জাতের সরিষা চাষ করেছি।’ 
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘সরিষা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়াতে নানা পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। দুই ফসলি জমিতে এখন তিন ফসল আবাদ করছে কৃষকরা।’
দরিচন্দ্রবাড়ীর কৃষক আরিফুর রহমান বলেন, ‘সরিষায় ভালো ফলন আশা করছি। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া, পোকা-মাকড় ও রোগবালই আক্রমণ হয় নাই। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে ১১ বিঘা জমিতে উচ্চফলনশীল জাতের আবাদ করেছি। কোনো ধরণের ক্ষতি না হলে লাভবান হতে পারবো।’ 
কৃষি কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, ‘এ অঞ্চলের মাটি সরিষা চাষে উপযোগী। এতে করে এ এলাকায় আবাদ বাড়ছে। অন্য ফসলের তুলনায় বেশি লাভবান হওয়ায় কৃষদেরও আগ্রহী হচ্ছে। কৃষকদের নানাভাবে সহযোগীতা করা হচ্ছে। আগামী বছর আবাদ আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

Related Article