১৮ ডিসেম্বর, ২০২২
ছবি: শিম্পাঞ্জি
বিশ্বজুড়ে বিপন্ন প্রাণী হিসেবে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন)-এর লাল তালিকায় ইতিমধ্যেই চলে এসেছে শিম্পাঞ্জির নাম। ফলে শিম্পাঞ্জি সুরক্ষায় নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বিভিন্ন দেশ। এরই মধ্যে সুইডেনে চিড়িয়াখানায় খাঁচা থেকে পালিয়ে যাওয়া তিনটি শিম্পাঞ্জিকে গুলি করে হত্যা করায় ক্ষুব্ধ দেশটির সাধারণ মানুষ।
তাদের বক্তব্য, চেতনানাশক প্রয়োগ করে শিম্পাঞ্জিগুলোকে আটক করা যেত। যাদের কাছে এই বন্য প্রাণীগুলোর সবচেয়ে নিরাপদ থাকার কথা, তাদের হাতেই এহেন মৃত্যু কোনোভাবেই কাম্য নয়। বনের প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে এই প্রাণীগুলোকে চিড়িয়াখানায় রাখা হয়েছে মানুষের বিনোদনের জন্য। তারপর গুলি করে তাদের হত্যা করা হচ্ছে। এটা রীতিমতো অমানবিক।
গত বুধবার সেখানকার ফুরুভিক চিড়িয়াখানায় খাঁচা থেকে বের হয়ে যায় সাতটি শিম্পাঞ্জি। এরপর সেগুলো চিড়িয়াখানার ভেতরেই ঘোরাঘুরি করছিল। ক্রিসমাস মৌসুম বলে এ সময় চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীও তেমন ছিল না। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ সেগুলোর মধ্যে চারটিকে খুঁজে পায় এবং গুলি করে। বাকি তিনটিকে এখনো পাওয়া যায়নি।
ফুরুভিক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, জনসাধারণের কথা ভেবেই প্রাণীগুলোকে হত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন তারা। এগুলো পথচারীদের ওপর হামলা করতে পারত। তা ছাড়া যতটুকু দূর থেকে চেতনানাশক নিক্ষেপ করলে তা কাজে আসে, তার চেয়ে বেশি দূরে ছিল প্রাণীগুলো। তারা জানান, শিম্পাঞ্জি যথেষ্ট দ্রুতগতিসম্পন্ন ও শক্তিশালী প্রাণী। এ ছাড়া এদের ভয়-ডর কম। এ অবস্থায় এরা যে কারও ওপর হামলা চালাতে পারত।
তবে গবেষক মাথিয়াস অসভা বলছেন, তিনি গত কয়েক বছর ধরে শিম্পাঞ্জিগুলোর সংস্পর্শে এসেছেন। যতটুকু বুঝেছেন, তাতে এদের দ্বারা ক্ষতির আশঙ্কা আসলে খুবই কম ছিল।
‘হ্যাঁ, চলতি পথে হঠাৎ করে শিম্পাঞ্জিগুলো সামনে এসে পড়লে আমি হয়তো একটু ভয় পেয়ে যেতাম ঠিকই, তবে এরা আসলে বিপজ্জনক নয়। তারপরও এদের এভাবে মৃত্যুবরণ করতে হলো। বিষয়টা দুঃখজনক,’ মাথিয়াস বলেন।
ইং মারি পারসন শিম্পাঞ্জির তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কাজ করেছেন ৩০ বছর। বিবিসিকে তিনি বলেন, অপেশাদার আচরণের কারণে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই অভিযুক্ত করা উচিত।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, মৃত তিন শিম্পাঞ্জির নাম হলো লিন্ডা, টরস্টেন ও স্যান্টিনো। মান্ডা নামে আরেকটি শিম্পাঞ্জি এখন মুমূর্ষু অবস্থায় আছে।