০১ এপ্রিল, ২০২৩
ছবি: সংঘর্ষে আহত দুই ব্যাক্তি
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার পশ্চিম ধোপাপাড়া গ্রামে মসজিদের ইমামের বেতন বাড়ানোকে কেন্দ্র করে মুসল্লিদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার (৩১শে মার্চ) বাদ জুম্মা ওই ঘটনা সংঘটিত হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, উপজেলার পশ্চিম ধোপাপাড়া (মুচিপাড়া) গ্রামে বাদ জুম্মা স্থানীয় মসজিদের কমিটি ও মুসল্লিরা মিলে ইমামের বেতন বাড়ানো নিয়ে আলোচনা করেন। কেউ কেউ ইমামের বেতন বাড়ানোর পক্ষে, আবার কেউ কেউ ইমামের বেতন বাড়ানোর বিপক্ষে অবস্থান নেয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আজাদ আলী মসজিদ কমিটির সভাপতি তিনি ইমামের বেতন বাড়ানোর পক্ষে মত দেন। পরে মসজিদের সভাপতি আজাদ আলীর সাথে স্থানীয় আব্দুস সালাম ও তার ছেলে মুরসালিনের সাথে কথা কাটাকাটি হয়।
পরে স্থানীয়রা সভাপতি আজাদ আলী ও সালাম তার ছেলেকে সেখান থেকে বুঝিয়ে শুনিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেয় মুসল্লিরা। ওই দিনই সভাপতি ও মসজিদ কমিটির সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে এক হাজার টাকা ইমামের বেতন বাড়ানো হয়। স্থানীয় ওই মসজিদের ইমাম মোঃ আলমগীর হোসেন তার বেতন পূর্বে ছিল ৬০০০ টাকা, এবং ১০০০ বাড়িয়ে করা হয়েছে সাত হাজার টাকা।
পরে অভিযোগ উঠে মোঃ দোয়েল (২৫) পিতা ব্যবসায়ী আজাদ আলী ও ইসমাইল হোসেন (৪৫) পিতা মৃত রমজান আলী দুজনকে বাড়ির পাশে দিয়ে যাবার সময়, স্থানীয় আব্দুস সালাম (৪৫) পিতা জান মোহাম্মদ (জানু), মোরসালিন (২০) পিতা আব্দুস সালাম সহ আরো কয়েকজন মিলে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে, ধারালো চুরি ও চাপাতি দিয়ে, উপরোক্ত দুজনের মাথা ও হাতে কোপানো হয়। এবং বেধড়ক লাঠিপেটা করা হয়।
পরে মোহাম্মদ দোয়েল ও ইসমাইল হোসেনকে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে সেখান থেকে অবস্থার অবনতি দেখে তাদেরকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। এদের মধ্যে আহত ইসমাইল হোসেনের অবস্থা গুরুতর।
এ বিষয়ে স্থানীয় ওই মসজিদের ইমাম আলমগীর হোসেন বলেন, দুই বছর আগে আমি মসজিদে ৬০০০ টাকা বেতনে ইমাম হিসেবে নিয়োগ পায় সে সময় আমাকে বলা হয়েছিল দুই বছর পর আমার বেতন বাড়ানো হবে আজ বেতন বাড়ানোর বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় তারপর আমার এক হাজার টাকা বেতন বাড়িয়ে দেওয়া হয়।
সকল কিছুর দাম উর্ধ্বগতি সে কারণে সভাপতি আমার বেতন বাড়ানোর জন্য সুপারিশ করেন। এই বেতন বাড়ানোকে নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে তর্কাতর্কিও হয়েছিল। পরে তা ঠিকও হয়ে গিয়েছিল। নামাজ শেষে সভাপতি আজাদ আলীর ছেলের সাথে স্থানীয় আব্দুস সালামের কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে সবাই সবার বাসায় চলে যায়। তারপর শুনেছি দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়েছে।
গুরুতর আহত মোঃ দোয়েলের পিতা এবং ওই মসজিদ কমিটির সভাপতি আজাদ আলী বলেন, মসজিদের ইমামের বেতন বাড়ানোকে কেন্দ্র করে একটু তর্কাতর্কি হয়, পরে সালামের ছেলে মোরসালিন আমার ছেলে ও ইসমাইল এর উপর হামলা করে। অভাবী ছেলে মসজিদের ইমামের বেতনের টাকা দিতে পারেনা। ছেলেটাও খুব একটা ভালো না। আমি হজ্ব করেছি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। আমি কেন মিথ্যা কথা বলব।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সালামের ছেলে, মোরসালিন বলেন, আমরা কেউ ওদেরকে মারধর করিনি। ওরাই বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এসেছিল। সেগুলোর আঘাতেই তারা আহত হয়েছে। এছাড়াও ওদের সাথে আমাদের একটা জমা-জমি নিয়ে পূর্ব শত্রুতা ছিল। আমরা কোনভাবে তাদের উপর হামলা করিনি। তারাই আমাদেরকে মারধর করেছে।
এই বিষয়ে জানতে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে, পুঠিয়া থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল বারী “তারুণ্য ২৪”কে বলেন, সন্ধ্যা পর্যন্ত এ বিষয়ে থানায় কোন অভিযোগ বা কোন রকম জিডিও করা হয়নি। আমি নামাজে ছিলাম। তবে এরকম একটি বিষয় আমি শুনেছি। থানায় কোন অভিযোগ আসলে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।