১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
ছবি: সংগৃহীত
রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার ছোট কাচুপাড়া-বড় কাচুপাড়া এবং গোপাল পাড়ার মাঝখানে জোরপূর্বক পুকুর খননের অভিযোগ উঠেছে।
গত বৃহস্পতিবার ৯ই ফেব্রুয়ারি রাতের আঁধারে লুকিয়ে পুকুর খনন করে। এখানকার স্থানীয় গ্রামবাসীর সূত্রে জানা যায় যে, এখানকার গ্রামবাসীরা এই আবাদি জমি খনন করে পুকুর করার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং প্রতিবাদ জানান। তাদেরকে হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে পুকুর খননকারী মো: রবিউল ইসলাম এবং বাড়ি গিয়ে গিয়ে তাদেরকে ভয় এবং টাকার লোভ দেখানো হয়। কিন্তুু কেউই এই বিষয়ে সম্মতি দিতে রাজি নয়।
তাই পুকুর খননকারী মো: রবিউল ইসলাম রাতের আঁধারে লুকিয়ে পুকুর খনন করার চেষ্টা করে এবং রাতের আঁধারে লুকিয়ে পুকুর খননের কাজ চালিয়ে যায়। গ্রামবাসীদের মধ্যে কেউ কিছু বললে তাদের কোন কথাই পুকুর খননকারী কর্ণপাত করছেন না। উপরন্তু, গ্রামবাসীকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তুু এখানকার গ্রামবাসী সাহস করে তাদের বাঁধা দেয় এবং কিছু কথা কাটাকাটি হতেই ভেকুর ড্রাইভার ভেকু রেখে পালিয়ে যান সেই রাতে।
গ্রামবাসীরা বলেন, সুজলা-সুফলা ও শস্য-শ্যামলায় পরিপূর্ণ ছিল রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার এই অঞ্চল। পুঠিয়া উপজেলার আবাদি কৃষি জমি এবং জেলার সকল উপজেলার আবাদি কৃষি জমি ধ্বংস করে পুকুর খনন করার দৃশ্য চোখে পড়ার মতো। ফলে দুর্গাপুর, পুঠিয়া, মোহনপুর, বাগমারা, বাঘা, ও চারঘাট উপজেলায় আবাদি কৃষি জমি ক্রমেই কমতে শুরু করেছে। উপজেলা গুলোর মোট ভূমির সিংহভাগই কৃষি জমি। পুকুর খননকারীদের আগ্রাসনের কারণে উক্ত উপজেলার কৃষি উপযোগী আবাদি জমি রক্ষা করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। গ্রামীণ জনপদের মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড নির্ভর করে মূলত কৃষিভিত্তিক শিল্পের উপরে।
এখানকার বেশির ভাগ মানুষ কৃষি কাজ ও কৃষি সম্পর্কিত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত। এই জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কৃষি জমিতে পুকুর খননকারীদের আগ্রাসনে আবাদি কৃষি জমি এখন অস্তিত্ব সংকটে। দিন দিন জেলার সর্বত্র আশংকাজনক হারে কমছে আবাদি কৃষি জমি। এই জেলায় আবাদি কৃষি জমির পরিমাণ ব্যাপক হারে কমে যাওয়ায় কৃষকগণ চরম হতাশাগ্রস্থ ও চিন্তিত। ফলে দিন দিন কৃষকের সংখ্যাও ক্রমাগত কমে যাচ্ছে। এভাবে দিনের পর দিন জেলার সকল উপজেলায় আবাদি কৃষি জমি কমতে থাকলে অধিকাংশ মানুষের জীবন জীবিকা চরম হুমকির সম্মুখীন হবে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই অনেক মানুষ কৃষি কাজ ছেড়ে পেশা বদল করেছে। এবং জীবিকার তাগিদে কেউ কেউ শহরে পাড়ি জমাচ্ছে বিভিন্ন কর্মের সন্ধানে। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দেশের জনসংখ্যা। তাই এই জেলার কৃষকের প্রাণ উৎপাদনশীল আবাদি কৃষি জমি, তা রক্ষায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করা প্রয়োজন এবং জীব বৈচিত্র সংরক্ষণ ও রক্ষায় যেমন দেশের প্রচলিত আইন-কানুন, নিয়ম নীতি এবং সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়, তেমনি ভাবে কৃষি জমি রক্ষায় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা থেকে বের হয়ে জাতীয় ভূমি ব্যবহার নীতিমালা ও কৃষি নীতিমালা সহ কৃষি জমি সংরক্ষণ ও রক্ষায় সরকারের বিশেষ নির্দেশনা প্রতিপালনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন ।
পাশাপাশি স্থানীয় প্রতিনিধিদের কঠোর দায়িত্বশীল ভূমিকা থাকা দরকার। কারণ পুকুর খননকারীদের ধ্বংসাত্মক কাজে প্রতিবাদসহ তাদের বিরুদ্ধে আইন গত ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
তাই পুলিশ-প্রশাসনের কাছে গ্রামবাসীর দাবি, তারা যেন সরেজামিনে এসে এই কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করে, তা বন্ধের লক্ষ্যে এর বিরুদ্ধে সুষ্ঠু ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।