১৭ Jun ২০২৫
হোম স্বাস্থ্য সারাদেশ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি ও বাণিজ্য খেলাধুলা বিনোদন আন্তর্জাতিক ধর্ম ও জীবন লাইফ স্টাইল শিক্ষা প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান পরিবেশ চাকরি বা ক্যারিয়ার মতামত আইন-আদালত কৃষি ও প্রযুক্তি বিশেষ সংবাদ অপরাধ সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিশ্বকাপ ফুটবল
আন্তর্জাতিক

অলিম্পিকে বাকপ্রতিবন্ধি ওয়াক্কিয়ার স্বর্ণপদক জয়, আনন্দের জোয়ারে ভোলাহাট

০৮ Jul, ২০২৩

মোঃ শরিফুল ইসলাম (শরীফ),
ভোলাহাট উপজেলা (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি

ছবি: স্বর্ণপদক জয়ী বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধি ওয়াক্কিয়া।

জার্মানের রাজধানী বার্লিনে সাঁতারে স্বর্ণ জয় করে ওয়াক্কিয়া ২৯ জুন এসেছেন নিজ বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার বীরেশ্বরপুর গ্রামে। স্বর্ণপদক বিজয়ী স্বর্ণকন্যাকে দেখতে ছুটে আসছেন বিভিন্ন পেশার মানুষ। ওয়াক্কিয়া এখন ভোলাহাট উপজেলার গর্বিত স্বর্ণকন্যা। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আসমানিদের ছোট্ট বাড়ীর মত ওয়াক্কিয়ার বাবা মোঃ আজাদ আলীর বাড়ীতে স্বর্ণপদক বিজয়ী স্বর্ণকন্যাকে দেখতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসছেন বিভিন্ন পেশার মানুষ। ওয়াক্কিয়া এখন ভোলাহাট উপজেলার গর্বিত স্বর্ণকন্যা।


তাঁর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ভোলাহাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রভাষক মোঃ রাব্বুল হোসেন। অর্থমন্ত্রনালয়ের বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এর যুগ্ম পরিচালক ও মানবিক ফাউন্ডেশন ভোলাহাট এর চেয়ারম্যান মোঃ রশীদুল আলম জেম। এদিকে ভোলাহাট স্পর্স ঢাকা সংগঠনের পক্ষ থেকে বজরাটেক মহানন্দা নদীর তীরে ১জুলাই সংবর্ধনা দেয়া হয় এ স্বর্ণকন্যাকে। এ সময় তাঁর হাতে একটি সম্মাননা ক্রেস্ট ও নগদ দশ হাজার টাকা তুলে দেয়া হয়।


ওয়াক্কিয়ার বাবা মোঃ আজাদ আলী বলেন, আমার দুটি সন্তান। বড়টি ছেলে ওয়াক্কিয়া ছোট। আমার দু’সন্তানই বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধি। তিনি বলেন, আমি খেটে খাওয়া মানুষ। আমার মেয়ে উপজেলার প্রতিবন্ধী স্কুলে ৯ ম শ্রেনীতে পড়া-লেখা করে। আমি গর্বিত একজন বাবা। কারো অর্থ সম্পদ ও সুস্থ সন্তান থেকেও এ গৌরব অর্জন করতে পারে না। কিন্তু আমি বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধি সন্তানের বাবা হয়েও আল্লাহ আমার উপর রহমত বর্ষণ করেছেন। বিশ্ব জুড়ে আমার ওয়াক্কিয়ার নাম হয়েছে। আমার মেয়ে বাংলাদেশের সুনাম অর্জন করেছে। তিনি বলেন, আমার মেয়ে প্রথমে উপজেলায় খেলায় প্রথম হয়েছে পরে জেলা, বিভাগ ও ঢাকাতে প্রথম হয়ে জার্মানের বার্লিনে অলিম্পিক গেমসে স্বর্ণপদ জয় করেছে। আমার বাকপ্রতিবন্ধি মেয়ে ভাঙ্গা ঘরে আলো জ্বালিয়েছে আমি খুব আনন্দিত।


ওয়াক্কিয়ার কাছে স্বর্ণপদক জয়ের অনুভূতি জানতে চাইলে হাসি হাসি মুখে হাত পা নেড়ে উচ্ছাস প্রকাশ করেন। তিনি কি বললেন বুঝতে না পারলে তাঁর মা বুঝিয়ে বলেন, সে স্বর্ণপদক জয় করায় খুব খুশি হয়েছে। বিভিন্ন মানুষ তাঁকে দেখতে ভিড় করছেন। তাঁর মা বলেন, আমার মেয়ে কথা বলতে না পারলেও তাঁর সব কথা আমরা বুঝতে পারি। বাড়ীতে আমার মেয়ে সব সময় খুব হাসি খুশি থাকে বলে জানান। তিনি আরো বলেন, আমার মেয়ের ভালো প্রতিবন্ধী স্কুলে পড়ালেখা করার খুব ইচ্ছে। কেউ তাঁর পড়া লেখার দায়িত্ব নিলে খুব ভালো হতো বলে তিনি জানান। তিনি ওয়াক্কিয়ার কথা বুঝিয়ে বলেন ওয়াক্কিয়া নিজে একজন পুলিশ হতে চায়।


তাঁর দাদী, চাচা ও স্বজনেরা ওয়াক্কিয়ার স্বর্ণপদক জয়ে আনন্দের বন্যায় ভাসছেন। গ্রামবাসিরা জানান, বাকপ্রতিবন্ধি ওয়াক্কিয়া, বাবা মোঃ আজাদ আলীর মেয়ে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করায় আমরা উল্লাসিত। উল্লেখ্য জার্মানির বার্লিনে অনুষ্ঠিত ২০২৩ অলিম্পিকে টিম সাঁতার ও ২০০ মিটার দৌড়ে বাংলাদেশের হয়ে স্বর্ণপদক জয় করেন ওয়াক্কিয়া। স্বর্ণকন্যা ওয়াক্কিয়ার স্বর্ণপদক জয়ে আনন্দের জোয়ারে ভাসছে এখন ভোলাহাট। 

Related Article