১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২
কামরুল আরেফিন, 
ছবি:
মৃত্যুর মিছিল কি শুধুই দীর্ঘ হবে! মৃত্যুর মিছিল কেন এত দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে?
গত ১৫ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) দুপুরে ট্রাফিক জ্যামে রিকশার মধ্যে বসে আছি ফেনী শহরের দোয়েল চত্বরে। শহরের প্রাণকেন্দ্র ট্রাংক রোডে (জিরো পয়েন্টে'র) সামনে হেলমেট বিহীন মোটরসাইকেল চালকদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মত। মোটরসাইকেলে যাত্রা করতে হলে চালক ও আরেহী মাথায় হেলমেট ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক। বাংলাদেশের মটরযান আইনানুযায়ী মটরসাইকেল চালানোর সময় হেলমেট না থাকলে তিন মাসের কারাদণ্ড, দশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান আছে। দন্ড ও জরিমানা ঠেকাতে চালক ও আরোহী'রা যে হেলমেট ব্যবহার করেন তা অতি সাধারণ তথা নিম্নমানের। চালক ও আরোহীরা যে হেলমেট ব্যবহার করেন তা দ্রুতগতি মোটরসাইকেলে'র দুর্ঘটনা এড়াতে ও চালক ও আরোহীর সু্রক্ষা'র ক্ষেএে নিম্নমানের তথা মানহীন পাতলা এই হেলমেট কোন কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে না। শহরে দেখা যায় অল্পসংখ্যক চালক শুধুমাএ ট্রাফিক পুলিশের জরিমানা এড়াতে বা ঠেকাতে নিম্নমানের তথা মানহীন পাতলা হেলমেট ব্যবহার করছেন। শহরে মোটরসাইকেল চালকের মাথায় মানসম্মত হেলমেট দেখা যায় না বললে চলে। ভারত সীমান্তের পাশের জেলা শহর হওয়ার কারণে টানা মোটরসাইকেলের সংখ্যা অনেক বেশি ফলে ফেনী'তে প্রতিদিনই বাড়ছে মোটরসাইকেলে'র সংখ্যা ও আরোহীর সংখ্যা। ট্রাফিক জ্যাম এড়িয়ে দ্রুত গন্তব্যে যাবার জন্য অনেকেই বেছে নেন মোটরসাইকেল। মোটরসাইকেল চালাতে হেলমেট চালকের জীবন রক্ষায় বিরাট ভূমিকা পালন করে তা বেশির ভাগ চালক জানেন না। মোটরসাইকেল চালকের সচেতনতা'র অভাব; তাইতো মোটরসাইকেল চালাক'রা ঝুঁকি মাথায় নিয়ে হেলমেট বিহীন মটরসাইকেল দেদারছে চালাতে ব্যস্ত।
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মৃত্যু'র মিছিল দিন দিন লম্বা হচ্ছে। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা এড়াতে কারো কোন তদারকি নেই বললেই চলে!
আসুন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মোট মৃত্যুসহ যাবতীয় তথ্যাদি খুঁজে দেখে।
বাংলাদেশ রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২০২১ সালে মোট মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার সংখ্যা দু'ই হাজার ৭৮টি। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা'র কবলে পড়ে মৃত্যু বরণ করেন দু'ই হাজার ২১৪ জন।
সারা বাংলাদেশে সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনা যার মধ্যে মোটরসাইকেলে দুর্ঘটনা'র শিকার শতকরা হারে মোট মৃত্যুর পঁয়ত্রিশ শতাংশ।
বাংলাদেশ রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২১ সালে'র সংঘটিত দুর্ঘটনা'র মধ্যে শতকরা হারে প্রায় ঊনচল্লিশ শতাংশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। ২০২১ সালে আগের বছরের চেয়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা পঞ্চাশ শতাংশ ও এই দুর্ঘটনাগুলোতে মৃত্যুর সংখ্যা একান্ন শতাংশ বেড়েছে। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
বাংলাদেশের বিভাগীয় শহরের তুলনায় জেলা শহর ও মফস্বল শহরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি।
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা শতকরা হারে মোট পঁচাশি শতাংশ সংঘটিত হয় জাতীয় মহাসড়ক, আঞ্চলিক মহাসড়ক, মফস্বলের সড়ক ও গ্রামের সড়কে।
জেলার ট্রাফিক পুলিশের বিশেষ নজরদারি,সচেতন মহলের কর্মতৎপরতার মাধ্যমে; বাংলাদেশের ন্যায় ফেনীতে যেন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মৃত্যুর হার কমে এই প্রত্যাশা'য়।
