১৯ অক্টোবর, ২০২৩
ছবি: মৃত আল আমিন
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে সাবেক চেয়ারম্যানের নাতির ছুরির আঘাতে সিএনজি চালক আল আমিন নামে এক যুবক খুন হয়েছে।
এসময় ছুরির আঘাতে আহত আল আমিনের বন্ধু নাইম নামে এক যুবককে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। আল আমিন উপজেলার জামুর্কী ইউনিয়নের গুণটিয়া বেপারী পাড়ার বাদশা মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, বুধবার (১৮ অক্টোবর ) রাতে মির্জাপুর উপজেলার পাকুল্যা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় একই গ্রামের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মৃত আলতাফ হোসেনের নাতি আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে তুহিন ওরফে টফি তাদেরকে চাকু দিয়ে আঘাত করলে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
আল আমিনের বোন মীম ও মামাতো ভাই কামাল জানান, উপজেলার জামুর্কী ইউনিয়নের গুণটিয়া বেপারী পাড়ার বাদশা মিয়ার মেয়ে মীমের (আল আমিনের ছোট বোন) গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কুতুবদিয়া গ্রামের শামছুল হকের ছেলে জাহিদ হাসানের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না।
এ নিয়ে আলআমিন ,নাইম এবং তুহিন মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দুই পরিবার নিয়ে একাধিকবার সালিস বৈঠক করেন। পাঁচ লক্ষ্য টাকায় খোলা তালাকের সিদ্ধান্ত হয়। তুহিন ওরফে টফি মীমের টাকা দিবে বলে স্বামী জাহিদ হাসানের কাছ থেকে কয়েক কিস্তিতে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা নেন। টাকা গুলো মীমের পরিবারকে দেয়ার কথা থাকলেও টাকা দিচ্ছিল না তুহিন।
গত মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে পাকুল্যা এলাকায় আলআমিন ও তুহিনের টাকা নিয়ে মধ্যে ঝগড়া হয়। আল আমিন টাকার জন্য তুহিনকে চাপ দেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তুহিন বুধবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা রাতে তুহিন দাড়ালো ছুরি দিয়ে আল আমিন ও তার বন্ধু নাঈমকে পেটে আঘাত করলে গুরুত্বর আহত হন।
স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করলে রাত আটটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আল আমিনের মৃত্যু হয়। নাইমের অবস্থার অবনতি হতে থাকলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে।
মা জয়নব বেগম বলেন, আমার চার সন্তানের তিন জনই মেয়ে আল আমিন ছিল একমাত্র উপার্জনকারী সন্তান। আমার সংসার এখন কে চালবে। আমি আমার সন্তান হত্যাকারির ফাঁসি চাই।
আল আমিনের স্ত্রী ফাহিমা জানান, তাদের সংসারে আদিবা ৪ বছর ও আরাফ নামে ৬মাসের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। স্বামীকে হারিয়ে তিনি প্রায়ই সঙ্গাহীন হয়ে পরছিলেন। আল আমিনকে হারিয়ে পরিবার জুড়ে বয়ছে শোকের মাতম। ঘটনার পর থেকেই তুহিনের পরিবার গা ঢাকা দিয়েছে।
এদিকে আল আমিনের খুনির গ্রেফতার ও সর্বোচ্ছ শাস্তির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়ন ।
জামুর্কী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডিএ মতিন বলেন, আমি নিহতের বাড়ি গিয়েছিলাম। তারা যাতে ন্যায় বিচার পান সেবিষয়ে তাদের সর্বোচ্ছ সহযোগিতা করবো।
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নিহত যুবক আল আমিন ও তার বন্ধু নাঈমের সাথে আল আমিনের ছোট বোন মীমের দেনমোহরের টাকা নিয়ে টফির সাথে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল।
একারনে ক্ষুদ্ধ হয়ে আসামী তাদের ছুরিকাঘাত করে। আসামী ধরার জন্য অভিযান চলমান রয়েছে।