১০ নভেম্বর, ২০২২
ছবি: লাইজুর শতরঞ্জি কারখানায় কাজ করছেন নারীরা।
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের পারআমলাগাছী গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের স্ত্রী সফল উদ্যোক্তা লাইজু বেওয়া শতরঞ্জির কাজ করে জীবন পাল্টে ফেলেছেন।
তিনি প্রথমে ২০১৪ সালে পলাশবাড়ী বিআরডিবি অফিস থেকে ৬০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়ে তাদের দেওয়া ১৩ হাজার টাকা ও শতরঞ্জির সরঞ্জাম নিয়ে হাতের মাধ্যমে পাপোস, ওয়ালমেট, জায়নামাজ ও কার্পেট তৈরি করেন।
এরপর পলাশবাড়ী মহিলা অধিদপ্তরের আয়োজনে ৭ দিনের আইজিএ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং এখান থেকেও ৭ হাজার টাকা অনুদান পান। তারপর ২০১৯ সালে গ্রামের ১৫ জন মহিলা নিয়ে পলাশবাড়ী গণউন্নয়ন কেন্দ্রের মাধ্যমে দুই মাসের শিব প্রজেক্টে প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। প্রশিক্ষণ শেষে গণউন্নয়ন কেন্দ্র শতরঞ্জির মেশিনসহ ৫০ হাজার টাকার চেক প্রদান করেন। এরপর পাল্টে যায় সফল নারী উদ্যোক্তা লাইজুর জীবন ।
তিনি প্রতি ফিট পাপোস বিক্রি করেন ৫০ টাকায়। একটি মেশিন থেকে প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ টি পাপোস তৈরি করা যায়। তিনটি মেশিন থেকে গড়ে প্রতিদিন ১৭ থেকে ২০ টি পাপোস তৈরি হয়।
সফল নারী উদ্যোক্তা লাইজু জানান, আমার মেয়ের বয়স যখন সাড়ে তিন বছর তখন সড়ক দুর্ঘটনায় স্বামী মারা যান। স্বামীর বাড়ী থেকে মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলি আসি। শিশু সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে এসে হতাশায় পড়ি। কি করব ভেবে পাচ্ছিলাম না।
তারপর এলাকার একজনের মাধ্যমে ২০১৪ সালে পলাশবাড়ী বিআরডিবি অফিসে শতরঞ্জির উপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। তারা আমাকে শতরঞ্জির সরঞ্জামসহ ১৩ হাজার টাকা প্রদান করেন।
এরপর ২০১৯ সালে গ্রামের মহিলাদের নিয়ে গণউন্নয়ন কেন্দ্রের উৎপাদক দল গঠন করি। তাদের দেওয়া মেশিন, সুতা, সুতার মেশিন দিয়ে পাপোস, কুশন, জায়নামাজ, ওয়ালমেট তৈরি করে বাজারজাত করছি। এসব পণ্য কিনতে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ক্রেতারা কারখানা থেকে পাইকারি দরে কিনে নিয়ে যায়।
প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা উপার্জন করছি। বাকী সদস্যরাও প্রতি মাসে ৮-১০ হাজার টাকা উপার্জন করছে। আকারভেদে প্রতিটি পাপোস ১৮/২৪ ইঞ্চি দুইশ টাকা, ২০/৩০ ইঞ্চি তিনশ টাকা, পাটের পাপোস ৬শ টাকা, ওয়ালমেট ৫শ টাকা মেঝের কার্পেট প্রতি ফিট ডিজাইন অনুসারে ৯০ টাকা বিক্রি করি। পলাশবাড়ী, গোবিন্দগঞ্জ ও রংপুরে যায় পাশাপাশি কারখানা থেকেও বিক্রি হয়।
মন্টু মিয়ার স্ত্রী হাওয়া বেগম জানান বিআরডিবির শতরঞ্জি প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনিও সংসারে সচ্ছলতা এনেছেন।
মাহমুদা বেগম, রিক্তা ও উর্মিলা বিআরডিবির প্রশিক্ষণ নিয়ে লাইজুর শতরঞ্জি কারখানায় কাজ করছেন। তাঁদের দাবি বিআরডিবি থেকে যদি টেবিল ম্যাট প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তাহলে তাঁরা আরো বেশি সফল হতে পারবেন।
Good news
Good