৩০ এপ্রিল ২০২৫
হোম স্বাস্থ্য সারাদেশ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি ও বাণিজ্য খেলাধুলা বিনোদন আন্তর্জাতিক ধর্ম ও জীবন লাইফ স্টাইল শিক্ষা প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান পরিবেশ চাকরি বা ক্যারিয়ার মতামত আইন-আদালত কৃষি ও প্রযুক্তি বিশেষ সংবাদ অপরাধ সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিশ্বকাপ ফুটবল
সারাদেশ

কক্সবাজারের নামি-দামি রেস্তোরাঁয় পঁচা বাসি অস্বাস্থ্যকর খাবার বিক্রি

১৫ ডিসেম্বর, ২০২৩

কাজল কান্তি দে,
কক্সবাজার জেলা (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

ছবি: পর্যটন সেলের নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা অভিযান চলাকালে

# পর্যটন খাতে বিরূপ প্রভাব পড়ার আশংকা পর্যটক ও সচেতন মহলের 

কক্সবাজারের নামি-দামি রেস্তোঁরায় পঁচা বাঁসি খাবার বিক্রি হচ্ছে। কয়লা, আলগণি, শালিক, পউষি, বাসমতি রেস্টুরেন্ট, হান্ডি, গোল্ড ফিশ রেস্টুরেন্ট বা শর্মা কিংসহ আরও অনেক রেস্তোরাঁ এসেছে জরিমানার আওতায়। পঁচা- বাঁসি খাবার ও মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি করে স্থানীয় ও পর্যটকদের সাথে প্রতিনিয়ত প্রতারণা করছে রেস্তোরাঁগুলো। তাহলে কি কক্সবাজারে রেস্তোরাঁর খাবার নিরাপদ নয় ? এমন প্রশ্ন জনমনে। 

মানসম্মত খাবারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পঁচাবাসী খাবার বিক্রি করছে কক্সবাজারের অনেক নামীদামি রেস্তোরাঁ।

এসব খাবার খেয়ে পর্যটকরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়লেও রেস্তোরাঁ মালিকদের কিছু যায় আসে না। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ও পর্যটকরা। 

এক পর্যটক বলেন- "আমরা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আসি ভালো সময় কাটানোর জন্য। কক্সবাজার রেস্তোরাঁ গুলোতে খাবার খাই। কিন্তু যখন দেখি খাবারের মান ভালো না সেই সাথে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, তখন আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। আমরা আশা করি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাবার খাব, থাকব। এজন্য যারা স্থানীয় যারা প্রশাসনে আছেন তাদের তদারকি আরও বাড়াতে হবে বলে মনে করছি। "

আরেকজন পর্যটক বলেন -"বিষয়টি অত্যন্ত বিব্রতকর আমাদের জন্য। বাংলাদেশের একটি শ্রেষ্ঠ পর্যটন শহর কক্সবাজার। এখানে শুধু বাংলাদেশ না বিশ্বের যে কোন জায়গা থেকে  মানুষ আসেন। পচা বাঁসি খাবার শরীরের জন্য  ক্ষতিকর, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে কক্সবাজারের সম্মান নষ্ট হচ্ছে । যার নেতিবাচক অর্থনৈতিক প্রভাব এখানে পড়বে।   

২০২৩ সালে বিভিন্ন সময় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে বেশ কয়েকবার কক্সবাজারে মাঝারি ও নামি দামি রেস্টুরেন্ট কে সতর্কীকরণ ও জরিমানা করা হয।

সর্বশেষ ১২ ডিসেম্বর কক্সবাজারের দশটি প্রতিষ্ঠানকে করা হয় ৯৬ হাজার টাকা জরিমানা। পর্যটন সেলের  নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত সেনেটারী ইন্সপেক্টর ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক জহুর লাল পালকে সাথে নিয়ে ভোক্তা অধিকার আইনের বিভিন্ন আইন লঙ্ঘন করে পচা বাঁসি খাবার পরিবেশন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি, অননুমোদিত ও মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার বিক্রির অভিযোগে কয়লা রেস্তোরাঁকে ২০ হাজার,শর্মা কিং রেস্তোরাঁকে ১০ হাজার, আল আরব রেস্টুরেন্টকে ১০ হাজার, বাসমতি রেস্টুরেন্টকে ৭ হাজার, মা রেস্তোরাঁকে ১০ হাজার, গোল্ডেন ফিস রেস্টুরেন্টকে ১০ হাজার, ঝাউবন রেস্তোরাঁকে ১০ হাজার, ডায়মন্ড রেস্তোরাঁকে ১৫ হাজার, চিটাগং রেস্তোরাঁকে ২ হাজার ও মায়ের দোয়া ডিপার্টমেন্টাল স্টোর কে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।  

রেস্তোরাঁ গুলোর এরূপ কর্মকাণ্ড বিষয়ে কক্সবাজার প্রেসকাবের  সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল ইসলাম বলেন-"আমরা আশা করব ব্যবসায়ী যারা আছেন তারা যেন আমাদের যারা ভোক্তা শ্রেণী আছে বিশেষ করে পর্যটক তাদের  মানসম্মত খাবার পরিবেশন করেন। না হয় পর্যটন রাজধানী কক্সবাজারে আসা বিপুল সংখ্যক পর্যটকের মাধ্যমে খাবার নিয়ে একটি ভুল বার্তা পৌঁছাবে দেশে-বিদেশে । কক্সবাজারের স্বার্থে পর্যটন সংশ্লিষ্ট যারা আছেন তারা  বিষয়টিতে নজর রাখার জন্য আহ্বান করছি । 

রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষকে সচেতন ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বেশ কয়েকটি কর্মসূচী গ্রহণ করেছে বলে জানান জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার নাজমুল ইসলাম। তিনি বলেন - আমাদের যে মনিটরিং কার্যক্রম  সেটি চলমান রয়েছে।

স্ট্রীড ফুড  ব্যবসায়ী যারা আছেন তাদের মধ্য থেকে ১০০ জনকে আমরা হ্যান্ড গ্লাভস, অ্যাপ্রোন বিতরণ করেছি। এছাড়া আমাদের যে নমুনা সংগ্রহ কার্যক্রম রয়েছে সেটাও চলমান আছে। এবং আসন্ন পর্যটন মৌসুমে যে মনিটরিং কার্যক্রম সেটি আরো জোরদার করা হচ্ছে । 

পর্যটন সেলের নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা বলেন -কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের যথাযথ সেবা নিশ্চিত করতে কক্সবাজার জেলা প্রসাসন বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকেন। জরিমানার পরও যেসব রেস্তোরাঁ  আবারও পঁচা বাঁসি খাবার বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইনি নোটিশ পাঠানো হবে, তারপরও যদি উন্নতি না দেখি তাহলে অনতিবিলম্বে রেস্তোরাঁগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। 

সেই সাথে তিনি কক্সবাজারে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এরুপ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান।

স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ খাবার সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ। বারবার জরিমানা করা হলেও পচা বাঁসি খাবার বিক্রি বন্ধ হচ্ছে না কক্সবাজারের খাবার হোটেল গুলোতে।

এভাবে পঁচা বাঁসি অস্বাস্থ্যকর খাবার বিক্রি হলে কক্সবাজারে পর্যটক বিমুখ হয়ে পড়বে। দ্রুত এই সমস্যা থেকে উত্তরন করা না গেলে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে পর্যটন খাত। এমনটি বলছে পর্যটক এবং কক্সবাজারের সচেতন মহল।

Related Article
comment
মোঃ মনির হোসেন বকাউল
29-Sep-23 | 10:09

Good news

মোঃ মনির হোসেন বকাউল
10-Dec-23 | 04:12

Good