১৫ অগাস্ট, ২০২৪
ছবি: প্রতারক চক্র জনতার উপর হামলাকালে
কক্সবাজারের রামুতে এনজিও (ওয়ার্ল্ড ভিশন) এর নাম দিয়ে অসহায়-দুস্থ নারীদের কাছ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি সংজ্ঞবদ্ধ প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে।
এদিকে উপজেলা প্রশাসনে অভিযোগ দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ভুক্তভোগী নারীদের উপর হামলা চালায় প্রতারক চক্রের সদস্যরা।
এঘটনায় রামুর সচেতন মহলে তিব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে ঘটনার বিবরনে জানা যায়, ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের শ্রীকুল (৫ নম্বর ওয়ার্ড) এলাকার সেলিনা ও তার ছোট বোন ইসমত আরা একই এলাকার সাবের আহমদ ও শাহীন সরওয়ার বাবু এনজিও ওয়ার্ল্ড ভিশনের নাম দিয়ে খাদ্য সামগ্রী ও শিশুদের শিক্ষা সহায়তা দেয়ার কথা বলে রামুর বিভিন্ন এলাকায় অসহায় ও দুস্থ নারীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে আসছিল।
তারা খাদ্যসামগ্রীর কথা বলে জনপ্রতি ২ হাজার ৫শত ও শিশুর শিক্ষা সহায়তা বাবদ ২ হাজার ৫শত টাকা করে অর্থ আদায় করে। এভাবে রামুর বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই প্রতারক চক্রটি। এদিকে নানান আশ্বাসে অর্থ আদায়ের এক বছর অতিবাহিত হলেও ভুক্তভোগীর সাথে নানা তালবাহানার আশ্রয় নেন।
ইতিপূর্বে টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে উল্টো মারধরের শিকার হতে হয়েছে অনেক নারীকে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী শতাধিক নারী রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ৫ জনকে অভিযুক্ত করে লিখিত অভিযোগ করেন। তার প্রেক্ষিতে ইউএনও উভয়পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেন।
এদিকে বৈঠক শেষ করে ইউএনও'র কক্ষ থেকে বের হয়ে পরিষদের নীচ তলায় নামা মাত্রই সেলিনা, ইসমত আরা, সাবের আহমদ ও শাহীন সরওয়ার বাবু লাঠি দিয়ে ভূক্তভোগী নারীদেরকে শারিরীকভাবে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে।
প্রতারণা করে টাকা আদায়ের কথা স্বীকার করেছেন একাধিক ভুক্তভোগী নারী। তারা জানান, বেতন দেয়ার কথা বলে প্রতি এলাকায় কয়েকজন নারীকে টিম লিডার নির্বাচিত করা হয়।
এরপর তাদের মাধ্যমে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বিভিন্ন গ্রামের শতশত দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়।
তেচ্ছিপুল সিকদারপাড়া এলাকার ভুক্তভোগী আছমা খাতুন বলেন, ফতেখাঁরকুল, চাকমারকুল, লম্বরীপাড়া, পূর্ব রাজারকুল এসব এলাকার হতদরিদ্র ১৬৫ জন নারীর কাছ থেকে খাদ্য সামগ্রী ও ৮৫ জনের কাছ থেকে কিশোর-কিশোরী সহায়তা বাবদ সর্ব মোট ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা আদায় করা হয়।
চাকমারকুল ইউনিয়নের আরেক নারী জানান, ২৪৫ জনের কাছ থেকে সংগ্রহ করে ৬ লাখ ১২ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন। তেচ্ছিপুল এলাকার পারভীন আক্তার দিয়েছেন ১২০ জনের ৩ লাখ টাকা, জোয়ারিয়ানালা থেকে মুসলিমা আক্তার দিয়েছেন ৭০ জনের ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, কাউয়ারখোপ ফরেস্ট অফিস এলাকার জুহুরা বেগম দিয়েছেন ৩০ জনের ৭৫ হাজার টাকা ও আনোয়ারা দিয়েছেন ১২০ জনের ৩ লাখ টাকা জমা দিয়েছেন বলে জানান ভূক্তভোগী নারীগন।
ওয়ার্ল্ড ভিশন রামু উপজেলার কো-অর্ডিনেটর মিজানুর রহমান জানান, এনজিওর পরিচয় দেয়া ইসমত আরা সহ অন্যান্যরা তাদের কোন কর্মী নয়। রামু, উখিয়ার কোথাও তারা কখনো কর্মরত ছিলনা। ভুয়া আইডিকার্ড সৃজন করে প্রতারণা করছেন। ইতিমধ্যে ওয়ার্ল্ড ভিশন কর্তৃপক্ষ প্রতারকদের বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান জানান, ভূক্তভোগী নারীদের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে উভয় পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করা হলেও সমাধান সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ভূক্তভোগী নারীদের উপর বিবাদীদের হামলার একটি ভিডিও ফুটেজ ফেইসবুকে দেখতে পান বলে জানান।
এ ব্যাপারে প্রতারণা ও হামলার শিকার ভূক্তভোগী নারীগন তদন্তপূর্বক প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
Good news
Good