১৭ Jun ২০২৫
হোম স্বাস্থ্য সারাদেশ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি ও বাণিজ্য খেলাধুলা বিনোদন আন্তর্জাতিক ধর্ম ও জীবন লাইফ স্টাইল শিক্ষা প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান পরিবেশ চাকরি বা ক্যারিয়ার মতামত আইন-আদালত কৃষি ও প্রযুক্তি বিশেষ সংবাদ অপরাধ সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিশ্বকাপ ফুটবল
সারাদেশ / শিক্ষা / আইন-আদালত / অপরাধ

গফরগাঁওয়ে হুরমত উল্লাহ কলেজে ভুয়া সনদে চাকরি করছেন তিন শিক্ষক সহ ছয়জন

১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

আঃ হালিম সরদার,
গফরগাঁও উপজেলা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

ছবি: কলেজ ভবন

ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলাধ্বীন যশরা ইউনিয়নের শিবগঞ্জ এলাকায় হুরমত উল্লাহ কলেজ নামে  এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভুয়া সনদে চাকরিরত তিন  শিক্ষকসহ ছয়জনের তথ্য পাওয়া গেছে। 

স্থানীয় জনগণের অভিযোগ অনুযায়ী, অত্র প্রতিষ্ঠানে অস্বচ্ছ  নিয়োগ প্রক্রিয়া  এবং অর্থের বিনিময়ে প্রার্থী নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের সুযোগ সৃষ্টি করেছে তৎকালীন নিয়োগ কমিটি।  প্রশ্ন উঠেছে দীর্ঘদিন ধরে বেতন ভাতা সহ নানা সুবিধা ভোগ এবং আর্থিক অস্বংগতির ব্যপারেও।  এসব অভিযোগ বিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকাবাসীর মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।

এই বিষয়ে তদন্ত এবং সত্য উদ্ঘাটনের জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বিভাগ বা প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। ঘুষ ও অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন, যাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নৈতিকতা ও স্বচ্ছতা বজায় থাকে।

গত কিছুদিন যাবত শিবগঞ্জসহ আশপাশ  এলাকার নানা শ্রেনীর লোকদের কাছে এমন অভিযোগ পাওয়া গেলে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য স্থানীয় সাংবাদিক এবং শিক্ষা  বিষয়ক  সংস্থা “বাংলাদেশ শিক্ষা পর্যবেক্ষক সোসাইটির”  ময়মনসিংহ বিভাগীয় কো—অরডিনেটরের সমন্বয়ে একটি অনুসন্ধান করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে  হুরমত উল্লাহ কলেজের তিন শিক্ষকসহ মোট ছয়জনের শিক্ষাগত যোগ্যতার  সনদপত্রের  জটিলতার প্রমান পাওয়া  গেছে । 
অভিযুক্তরা হলেন হুরমত উল্লাহ কলেজের সহকারী শিক্ষক 
১. মাকসুদা আক্তার, 
২. ফাতেমা ফেরদৌসী,  
৩. কম্পিউটার অপারেটর আব্দুল আজিজ, 
অফিস সহকারী
৪. মুসা মিয়া, ৫. ফজলে রাব্বি, ৬. জসিম উদ্দিন।  

 বিগত (১০ ফেব্রুয়ারি) সোমবার ১২টার দিকে কলেজের  অফিস কক্ষে আলোচনার সময় কথা হয়েছে ফাতেমা ফেরদৌসী আক্তার  এবং আব্দুল আজিজের সাথে।  দীর্ঘক্ষনের আলাপচারিতা বেশ ঘুরিয়ে পেচিয়ে জবাব দেন আজিজ,  তবে মুল বক্তব্যে ফেরার আগেই  সকলের সামনে কলেজের অধ্যক্ষকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অকথ্য ভাষায় বৈঠক ত্যাগ করে চলে যায়  সে।   
অসুস্থতার জনিত কারনে অনুপস্থিত থাকায় পাওয়া যায়নি আরেক শিক্ষক মাকসুদা আক্তারকে। সাংবাদিকদের  উপস্থিতি দেখে কলেজ প্রাঙ্গন থেকে পালিয়ে গেছেন অফিস সহকারী  মুসা মিয়া এবং ফজলে রাব্বি।  বহু সময় খোজাখুজি করেও আর দেখা মিলেনি তাদের। তবে আরেক সহকারী   জসিম উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি কিছুই বলব না। তবে প্রথমে তাকে চিনতে না পারার কারনে আমাদের বলেন জসিম ওয়াসরুমে গেছেন।   বহুচেষ্টার পরেও ক্যমেরার সামনে আসেননি তিনি।  পরে জবাবের ভয়ে শিক্ষার্থীদের পিছনে গিয়ে লুকিয়ে থাকেন।

কথা বলে ফিরার সময় অফিস কক্ষে ফাতেমা ফেরদৌসী আক্তারকে কলেজ অধ্যক্ষ জিল্লুর রহমানের সাথে চেচামেচি করতে দেখা গেছে। পরে আমাদের প্রবেশের কারণে বেশ মনক্ষুন্ন হয়ে চলে যান তিনি ।

অনুসন্ধান আরো জানা গেছে, উপরোল্লিখিত অভিযুক্ত ছয়জন ২০০৪ সাল থেকে এই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন।  তাদের জন্মস্থান গফরগাঁও হলেও সনদপত্র ব্যবহার করেন উত্তরবঙ্গের  বগুড়ার একটি প্রতিষ্ঠানের নামে।  লোক মারফতে সনদ সংগ্রহ করে দীর্ঘদিন ধরে চাকরি করছেন তারা।

এব্যপারে বগুড়ার জাতীয় বহুবাসী সাঁটলিপি ও গবেষণা একাডেমিতে খোজ নিয়ে জানা গেছে সেখান থেকে অভিযুক্তদের মধ্যে  একজনের সনদের ব্যপারে অস্বীকৃতি জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।  পরে সেটি   জাল এবং ভুয়া সনদ (সনদ নং— ১৬০৩৩)  আখ্যায়িত করে স্বাক্ষরিত মতামত দেন  সেখানকার  জাতীয় বহুবাসী সাঁটলিপি ও গবেষণা একাডেমি উপপরিচালক মাহমুদুর রহমান।  পরে বিষয়টি ২০২৩ সালের ১০ জুলাই গফরগাঁও উপজেলা প্রশাসনে যাচাই বাছাইয়ের জন্য প্রেরন করা হলে এখনও পর্যন্ত মিলেনি কোন তথ্য।  ফলে  গফরগাঁও উপজেলা প্রশাসনের অস্বচ্ছতা প্রমানিত হয়েছে।

এটি একটি গুরুতর অভিযোগ, যা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় প্রশাসনের স্বচ্ছতা এবং দায়িত্বশীলতার প্রতি প্রশ্ন তোলেছে। তদন্ত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।

এব্যপারে স্থানীয় এলাকাবাসী এবং গনমান্য ব্যক্তিবর্গসহ কয়েকটি সমাজিক সংগঠনে বিশিষ্ট জনেরা ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনসহ  জেলা  শিক্ষা অফিস এবং শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করে মতপ্রকাশ করেছেন।

Related Article