৩১ ডিসেম্বর, ২০২২
ছবি: বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম কমান্ডার গোলাম রসুলের টিনের ঘরের ছবি।
ফেনীর সোনাগাজীতে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে হুমকি, নানাভাবে হয়রানি ও সরকারী বরাদ্দকৃত 'বীর নিবাস' নির্মাণ কাজে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের সাতবাড়ীয়া গ্রামের আবদুল আজিজ কেরানী বাড়ীর প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গোলাম রসুল। তাহার মুক্তিযোদ্ধা নং-০১৩০০০০২০১১, লাল মুক্তিবার্তা গেজেট নং-০২১১০৫১৮২।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গোলাম রসুলের পরিবারের বসবাসের জন্য তার বিধবা স্ত্রী ফেরদৌস আরা বেগমের নামে সরকারীভাবে বরাদ্দকৃত 'বীর নিবাস' স্হাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করে বাংলাদেশ সরকার। বরাদ্দকৃত ' বীর নিবাসের স্মারক যাহার নং-মুবিম/পিডি/অ,বী,মু,আ,নি,প্রম-০১২০২১/৬৩৮ নং বরাদ্দকৃত ঘরের ক্রমিক নং- ২৫।
মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম কমান্ডার গোলাম রসুলের মালিকানাধীন সাতবাড়ীয়া মৌজার ১০১ নং খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত উনার নিজ মালিকানাধীন ৮৫৩ দাগের বাড়ী ও ৯২১ দাগের ভিটি।
স্বাধীনতা সংগ্রামের পরবর্তী সময়ে তথা ২৫ মার্চ ১৯৭২ সালে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার উনার নিজ মালিকানাধীন ভিটাতে একটি টিনসেট ঘর নির্মাণ করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী দের সম্মানিত করার লক্ষ্য বাংলাদেশ সরকার অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মান প্রকল্পের আওতায় 'বীর নিবাস' নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়।
অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কমান্ডার গোলাম রসুলের টিনের ঘরকে ভেঙে সেখানে দালান ঘর নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেয় বাংলাদেশ সরকার।
গত ২৮ ডিসেম্বর (বুধবার) সকালে সোনাগাজী উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের সাতবাড়ীয়া গ্রামের আবদুল আজিজ কেরানী বাড়ীর জহির আব্বাস স্বপন, আনোয়ার শাহাদাৎ মঞ্জুর, নাসির আব্বাস রিপন ও মোকাদ্দেছ আব্বাস সিপন সহ তাদের লোকজন মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রসুলের নামে বরাদ্দকৃত 'বীর নিবাস' নির্মাণ কাজে বাঁধা সৃষ্টি করে।
মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রসুলের সন্তান রাইসুল কায়েস সানী জানান, ২০০১ সালের পর থেকে তারা নানাভাবে নির্যাতিত ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। ইতিমধ্যে প্রতিপক্ষরা হুমকি- ধামকি দেওয়া ও তার ঘরবাড়ী জবরদখল করার চেষ্টা ও 'বীর নিবাস' নির্মাণে বিঘ্ন সৃষ্টি করার কারণে সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। এছাড়া ও গত ৭ জুন ফেনীর পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। পরবর্তীতে সদর আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী'র নিকট গত ১৭ নভেম্বর লিখিতভাবে 'বীর নিবাস' নির্মাণ কাজে সহযোগিতা কামনার নিমিত্তে আবেদন জানাই।
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রাইসুল কায়েস সানী'র বিরুদ্ধে ঘর ভাঙ্গা ও জহির আব্বাস স্বপনের পরিবারের
সদস্যদের মারধোর করার অভিযোগে মামলা করবেন বলে জানান, প্রতিপক্ষ জহির আব্বাস স্বপন।
গত ২৮ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান রাইসুল কায়েস সানী'র অভিযোগের ভিত্তিতে সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. খালেদ হোসেনসহ পুলিশ সদস্যগণ সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
উক্ত ঘটনায় বাদীপক্ষ ও বিবাদীপক্ষকে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ দেন এবং তদন্ত পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান, সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. খালেদ হোসেন।