১৭ Jun ২০২৫
হোম স্বাস্থ্য সারাদেশ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি ও বাণিজ্য খেলাধুলা বিনোদন আন্তর্জাতিক ধর্ম ও জীবন লাইফ স্টাইল শিক্ষা প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান পরিবেশ চাকরি বা ক্যারিয়ার মতামত আইন-আদালত কৃষি ও প্রযুক্তি বিশেষ সংবাদ অপরাধ সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিশ্বকাপ ফুটবল
সারাদেশ

ছাতকে বীর মুক্তিযোদ্ধা তোতা মিয়ার কুল বাগানে ফলন হয়েছে বাম্পার

২৩ জানুয়ারী, ২০২৩

সাকির আমিন,
সুনামগঞ্জ জেলা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি

ছবি: ছাতকে তোতা মিয়ার কুল বাগানে ফলন হয়েছে বাম্পার।


ছাতকে কুল(বড়ই) চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন বিলাসী কৃষক বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক উপজেলা কমান্ডার আনোয়ার রহমান তোতা মিয়া। নিজের ভুমিতে বিভিন্ন উন্নত জাতের কুল চাষ করেন। তার বাগানে কুলের ভালো ফলন হওয়ায় এলাকাজুড়ে  রীতিমতো হৈ-চৈ শুরু হয়েছে।  কৃষি বিপ্লব ঘটিয়ে তিনি এ বাগান থেকে চলতি মৌসুমে ২৫-৩০ লক্ষ টাকার কুল বিক্রি করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তার নিজ বাড়ি উপজেলার ভাতগাঁও ইউনিয়নের হায়দরপুর গ্রামের কুল বাগান এখন সবার মুখে-মুখে। বাগানে প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন হায়দরপুর গ্রামে আসা-যাওয়া করছে কুল বাগান দেখতে। বাগানের প্রতিটি গাছে ধরা কাঁচা-পাকা থোকা-থোকা কুল যেন পুরো এলাকাকে এক নান্দনিক রূপে রূপায়িত করেছে।

সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের কৈতক পয়েন্ট থেকে  কামারগাঁও বাজার হয়ে কয়েক কিলোমিটার এগুলেই দেখা মিলবে হায়দরপুর গ্রামের বাহারি কুল বাগান। এটি সিলেট বিভাগের সর্ববৃহৎ কুল বাগান বলেও দাবী করছেন এলাকার লোকজন। গ্রামের বাসিন্দা যুক্তরাজ্য প্রবাসী, ভাতগাঁও ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান মৃত গিয়াস মিয়াকে ঘিরেই প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এ কুল বাগান। গিয়াস মিয়া ফ্রুটস এন্ড ফিস নামে এ কুল বাগান প্রতিষ্ঠা করা হয় ২০২১ সালে। গিয়াস মিয়ার স্মৃতিকে ধরে রাখতে তার ছোট ভাই যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিক হায়দারের পরিকল্পনায় এবং আরেক ভাই উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আনোয়ার রহমান তোতা মিয়ার তত্তাবধানে তাদের নিজস্ব প্রায় ২২ একর ভুমিতে চাষ করেছেন উন্নত জাতের কুল। বাগানে রোপন করা হয়েছে চারটি উন্নত জাতের সাড়ে ৩ হাজার কুল গাছ। অর্ধশতাধিক নারিকেল গাছ ছাড়াও বাগানে লাগানো হয়েছে লিচু, মাল্টা, লেবু, পেয়ারা, সাতকড়া, আম ও তেজপাতার গাছ। এ ছাড়া বাগানের ভেতরেই রয়েছে মাছ চাষের জন্য একটি বড় পুকুর।নতুন প্রযুক্তির  কুল বাগান ও বাগানে কুলের বাম্পার ফলন দেখে এলাকার ভুমি মালিক কৃষকগণ কুল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

গ্রামের অনেকইে তাদের পতিত জমিতে কুল সহ বিভিন্ন ফল চাষের উদ্যোগ গ্রহনের কথা বলেছেন। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আনোয়ার রহমান তোতা মিয়া জানান, এ বাগানে ফলানো হয়েছে আপেল কুল, বল সুন্দরী কুল, কাশ্মিরী কুল ও বাওকুল। প্রতি গাছে সর্বোচ্চ ১৫-২০ কেজি পর্যন্ত কুল ধরেছে। চলতি মৌসুমে বাগান থেকেই  ৮০-৯০ টাকা কেজি দরে কুল বিক্রি হচ্ছে। পাইকারী বিক্রেতা ছাড়াও খুচরা ব্যবসায়ীরা বাগান থেকে কুল ক্রয় করে স্থানীয় হাট-বাজারে বিক্রি করছেন। প্রথম দফায় প্রায় ৬ লাখ টাকার কুল বিক্রি হয়েছে। এখনো শতকরা ৮০ ভাগ কুল বিক্রির অপেক্ষায় রয়েছে।

বাগানের কুল গুলো দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও তেমন সু-মিষ্টি। স্থায়ী ৮ জন সহ এ ফ্রুটস প্রকল্পে ২০০ জন লোকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। গাছের পরিচর্যা সহ ফল ধরা ও বাজারজাত করা পর্যন্ত এ কৃষি প্রকল্পে বছরে প্রায় ৯ লক্ষ টাকা ব্যয় হচ্ছ। গত বছর বাগানের কুল বিক্রি করে তিনি আয় করেছেন ১৫ লক্ষ টাকা।  বাগানের পরিকল্পনাকারী রফিক হায়দার জানান, এদেশের মাটি চাষাবাদের জন্য খুবই উপযোগি। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ও সঠিক পরিচর্যা করলে আশানুরুপ ফলন পাওয়া সম্ভব। উন্নত জাতের কুল চাষ করে তিনি কুলের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী ফল পেয়েছেন বলে উল্লেখ করে বলেন, ভবিষ্যতে বানিজ্যিক ভাবে ড্রাগন ফলের চাষাবাদ করার জন্য এমনই একটি বৃহৎ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এ বাগানের কুল স্থানীয় চাহিদা পুরন করে দেশের বাইরেও রপ্তানী করার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে তার। ভবিষ্যতে হায়দরপুর গ্রামকে ফলের গ্রাম হিসেবে তিনি পরিচিত করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

ছাতক উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌফিক হোসেন খান জানান, হায়দরপুর গ্রামের কুল বাগান একটি কৃষি বিপ্লবের উদাহরণ। বাগান করতে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হয়েছে। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি প্রয়োগ ও সঠিক পরিচর্যা করায় কুলের ভালো ফলন হয়েছে। কুল পরিপক্ষ করে বাজারজাত করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। অন্যতায় কুলের প্রকৃত স্বাদ ও গন্ধ পাওয়া যাবে না। ##

Related Article
comment
মোঃ মনির হোসেন বকাউল
29-Sep-23 | 10:09

Good news

মোঃ মনির হোসেন বকাউল
10-Dec-23 | 04:12

Good