৩০ এপ্রিল ২০২৫
হোম স্বাস্থ্য সারাদেশ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি ও বাণিজ্য খেলাধুলা বিনোদন আন্তর্জাতিক ধর্ম ও জীবন লাইফ স্টাইল শিক্ষা প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান পরিবেশ চাকরি বা ক্যারিয়ার মতামত আইন-আদালত কৃষি ও প্রযুক্তি বিশেষ সংবাদ অপরাধ সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিশ্বকাপ ফুটবল
সাহিত্য ও সংস্কৃতি

বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও কিছু কথা

১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

সাইফুর রহমান বাদল,
হরিণাকুণ্ডু উপজেলা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি

ছবি: সংগীত ছবি

প্রতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসের ১৪ তারিখে যুবক যুবতীরা পালন করে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। নগ্নতার সর্বোচ্চ  শির্ষ পর্যায়ে পৌছায়ে পালন করে এই দিবস। যেটা মুসলিম সংস্কৃতিতে বৈধ নাই। মূলত দিবসটি রোমান পৌত্তলিক একটি ধর্মীয় দিবস বলে পরিচিত ছিল। অনেকটা ভারতের আর্যদের মতই ভূমি ও নারী উর্বরতা, নগ্ন ও অশ্লীল উৎসব পালন, নারীদের বিবাহ ও সন্তান কামনা প্রাচীন দেবদেবীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে লুপারকালিয়া নামে নগ্ন উৎসব পালন করতো ১লা ফাল্গুন। ভ্যালেন্টাইন ডে মূলত সেন্ট ভ্যালেন্টাইন বা সাধু ভ্যালেন্টাইন ডে ৫ম-৬ষ্ঠ খৃষ্টাব্দে লুপারকালিয়া উৎসব নামে এই দিবসটি পালন শুরু হয়। আর এই দিবসটা একান্তই খৃষ্টানদের ও পৌত্তলিকদের ধর্মীয়  দিবস। যেটা মুসলিমদের কোন প্রকার সম্পৃক্ত নেই। বর্তমানে এই দিবসটা সার্বজনীন ভাবে পালন করার জন্য উদ্বুদ্ধ করা অর্থ হলো মুসলিমদের বিরুদ্ধে একটা চক্রান্ত। দেবতা জুপিটার ও মার্কারির অস্তিত্ব অস্বীকার করেন ধর্মযাজক ও চিকিৎসক সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামে একজন রোমান ক্যাথলিক ২৭০ খ্রীষ্টাব্দে। রোমান শাসক তখন তাকে মৃত্যু দন্ড দেন। সেন্ট ভ্যালেনটাইন যখন কারাগারে যান দন্ড প্রাপ্ত হয়ে তখন কারা  তত্বাবধায়কের মেয়ের চিকিৎসা করে তার দৃষ্টি শক্তি ফিরিয়ে দেন। পরবর্তিতে তত্বাবধায়কের মেয়ের সাথে ভ্যালেন্টাইনের প্রেম হয়। love from your valentine চিঠিতে একথাটা প্রেমিকার উদ্দ্যেশ্যে লিখেছিলেন মৃত্যুর আগ মুহূর্তে। আর দিনটা স্মরণ রাখার জন্য প্রথম পোপ জেলুসিয়াস ১৪ফেব্রয়ারী ভ্যালেন্টাইন ডে ঘোষণা করেন। বর্তমানে মুসলিম যুবক যবতিরা এটা একটা কালচার হিসাবে নিয়েছে। যেটা ইসলাম ধর্মের পরিপন্থী। ধবংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে যুব সমাজকে। বিধর্মী, বিজাতি আর পশ্চিমা সংস্কৃতির উপর অভ্যাস্ত হওয়ার কারনে। ইসলাম বলছে তোমরা শালিনতা বজায় রাখ। আমরা এর বিপরীত করছি যেকারণে খুন, ধর্ষণ ছিনতাই, রাহাজানি এমনকি শিশু ধর্ষণ শিশু হত্যা একেবারেই মামুলি ব্যাপার হয়ে গিয়েছে। মানব জাতিকে টিকিয়ে রাখতে জৈবিক ভালোবাসা প্রদান করেছেন  আল্লহ তায়ালা মানুষের মধ্যে। আর ভালোবাসার আকর্ষনের কারনে মানুষ পরিবার গঠন, সন্তান গ্রহণ এবং পৃথিবী - সন্তানের জন্য শত কষ্ট স্বীকার করে শুধু ভালোবাসার জন্য। ইসলামের আইন ছাড়া যেটা করার জন্য চেষ্টা করা হবে সেটা পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র সংরক্ষণ করা অসম্ভব হয়ে যাবে। অশ্লীলতার কারনে জাতি ধবংসের দিকে ধাবিত হয়। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে ঘোষণা করেছেন  

সূরা আল আনআম (الانعام), আয়াত: ১৫১

وَلَا تَقْرَبُوا۟ ٱلْفَوَٰحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَط

নির্লজ্জতার কা  ছেও যেয়ো না, প্রকাশ্য হোক কিংবা অপ্রকাশ্য হোক।

সূরা বনী-ইসরাঈল (الإسرا), আয়াত: ৩২

وَلَا تَقْرَبُوا۟ ٱلزِّنَىٰٓ إِنَّهُۥ كَانَ فَٰحِشَةً وَسَآءَ سَبِيلًا

আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।

সূরা আল আরাফ (الأعراف), আয়াত: ৩৩

قُلْ إِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّىَ ٱلْفَوَٰحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَن

আপনি বলে দিনঃ আমার পালনকর্তা কেবলমাত্র অশ্লীল বিষয়সমূহ হারাম করেছেন যা প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য এবং হারাম করেছেন ।

সূরা আল আরাফ (الأعراف), আয়াত: ২৮

وَإِذَا فَعَلُوا۟ فَٰحِشَةً قَالُوا۟ وَجَدْنَا عَلَيْهَآ ءَابَآءَنَا وَٱللَّهُ أَمَرَنَا بِهَا قُلْ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَأْمُرُ بِٱلْفَحْشَآءِ أَتَقُولُونَ عَلَى ٱللَّهِ مَا لَا تَعْلَمُونَ

যখন কোন মন্দ কাজ করে, তখন বলে আমরা বাপ-দাদাকে এমনি করতে দেখেছি এবং আল্লাহও আমাদেরকে এ নির্দেশই দিয়েছেন। আল্লাহ মন্দকাজের আদেশ দেন না। এমন কথা আল্লাহর প্রতি কেন আরোপ কর, যা তোমরা জান না।

সূরা আন নূর (النّور), আয়াত: ৩০

قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا۟ مِنْ أَبْصَٰرِهِمْ وَيَحْفَظُوا۟ فُرُوجَهُمْ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ إِنَّ ٱللَّهَ خَبِيرٌۢ بِمَا يَصْنَعُونَ

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাbangl। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

সূরা আন নূর (النّور), আয়াত: ৩১

وَقُل لِّلْمُؤْمِنَٰتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَٰرِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ ءَابَآئِهِنَّ أَوْ ءَابَآءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَآئِهِنَّ أَوْ أَبْنَآءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَٰنِهِنَّ أَوْ بَنِىٓ إِخْوَٰنِهِنَّ أَوْ بَنِىٓ أَخَوَٰتِهِنَّ أَوْ نِسَآئِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَٰنُهُنَّ أَوِ ٱلتَّٰبِعِينَ غَيْرِ أُو۟لِى ٱلْإِرْبَةِ مِنَ ٱلرِّجَالِ أَوِ ٱلطِّفْلِ ٱلَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا۟ عَلَىٰ عَوْرَٰتِ ٱلنِّسَآءِ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ وَتُوبُوٓا۟ إِلَى ٱللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ ٱلْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ

অর্থঃ ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। 
রাসুল সঃ বলেছেন  - যখন কোন জাতির মধ্যে অশ্লীলতা এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ে যে তারা প্রকাশ্যে অশ্লীলতাই লিপ্ত হয়ে থাকে,  তখন তাদের মধ্যে এমন সব রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ে  যা তাদের পূর্ব পুরুষদের মধ্যে ছিলনা।  ইবনে মাজাহ, আস-সুনান ২/১৩৩২। অশ্লীলতা  আর নির্লজ্জতা সমাজে বড় একটা ব্যাধি হিসাবে রুপ ধারন করেছে যে কারনে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হচ্ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞান এখনও পর্যন্ত চিকিৎসা দিতে ব্যার্থ। অশ্লীলতা এবং বেহায়াপনাই মূল কারণ। ১৪ ফেব্রুয়ারী এই দিবসে ফুল হাতে করে ছেলে মেয়েরা দৌড়াদৌড়ি করছে আর এ কারনে ইভটিজিং আর ধর্ষণের স্বীকার হচ্ছে। উত্তেজিত হচ্ছে যুবক যুবতীরা। আমরা যারা মুসলিম  হিসাবে পরিচিত বা মুসলিম বলে দাবি করি আসুন আমাদের ছেলে মেয়েদের ভ্যালেন্টাইন ডে থেকে ফিরিয়ে রাখার জন্য ইসলামী ভাবধারায় তাদের গড়ে তুলি। খৃষ্টীয় ও পশ্চিমা কালচার বর্জন করি ইসলামী কালচার গ্রহণ  করি।
লেখকঃ কলামিষ্ট ও সাংবাদিক।

Related Article