১৭ Jun ২০২৫
হোম স্বাস্থ্য সারাদেশ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি ও বাণিজ্য খেলাধুলা বিনোদন আন্তর্জাতিক ধর্ম ও জীবন লাইফ স্টাইল শিক্ষা প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান পরিবেশ চাকরি বা ক্যারিয়ার মতামত আইন-আদালত কৃষি ও প্রযুক্তি বিশেষ সংবাদ অপরাধ সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিশ্বকাপ ফুটবল
সারাদেশ / জাতীয় / আইন-আদালত / অপরাধ

বগুড়ায় মধ্যযুগীয় কায়দায় প্রতিবন্ধী যুবককে চোর সন্দেহে দু’দফায় নির্যাতন

২৩ মে, ২০২৩

গোলাম আজম,
বগুড়া জেলা (বগুড়া ) প্রতিনিধি

ছবি: চোর সন্দেহে প্রতিবন্ধী যুবককে নির্যাতনের চিত্র।

বগুড়া সদর উপজেলার নিশিন্দারা ইউনিয়নের লাইলীপাড়া গ্রামে চোর সন্দেহে এক মানসিক ভারসাম্যহীন মো. সাব্বির হোসেন নামে এক যুবককে মারধর করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে৷

ভাইরাল হওয়া ৩ মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, লাঠি ও কাঠের বাটাম দিয়ে বেদম মারপিট করছে বারপুর লাইলীপাড়া গ্রামের স্থানীয় কয়কজন  প্রভাবশালী ব্যক্তি।
 

ওই ভিডিও চিত্রে আরও দেখা যায়, এক মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে প্রথমে টেনে হিচড়ে মাটিতে ফেলে দেয় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। তারপর তার শরীরে লাঠি ও কাঠের বাটাম দিয়ে শুরু করে বেদম মারপিট। মারধরের এক পর্যায়ে আহত যুবকের হাত দড়ি দিয়ে পিছমোড়া করে বাধা হয়, আর পা দুটি বেধে রাখা হয় পাশের গাছের সাথে। মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকটি বারবার তাদের কাছে হাতজোর করে মাফ চাইলেও থামেনা মারধরের পরিমাণ।

যুবকটি একসময় পানি খেতে চাইলে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তাকে পানি না দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এসময় সাব্বির নামের ওই যুবক তাদের পা ধরে মাফ চাওয়ার চেষ্টা করলে পুনরায় বেধড়ক প্রহার শুরু করে। একপর্যায়ে পাগলপ্রায় যুবকটি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যায়। কিন্তু তাকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। তখনো উপস্থিত অনেককেই অশ্লীল ভাষায় বন্দি যুবককে গালিগালাজ করতে শোনা যায়। সে অজ্ঞান হবার পরে আহত যুবকের মুখের উপর পানি ছিটিয়ে হুশ ফেরানোর চেষ্টা করে অভিযুক্ত সহ আরো অনেকে। বেশ কিছুক্ষণ পরে তার জ্ঞান ফিরলে দ্বিতীয় দফায় মারপিট করে ওই প্রভাবশালী মহল।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ছেলেটাকে অযথা মারধর করা হয়েছে। তার কাছে থেকে কোন চুরির মালামাল তো পাওয়ায় যায়নি। সে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি বলে অনেকেই জানে। তবুও কিছু ব্যক্তি তাদের ক্ষমতার জানান দিতে এইভাবে হাত পা বেধে নির্যাতন করলো। স্থানীয়ভাবে তারা প্রভাবশালী হওয়ায় এই ঘটনায় কেউ প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি। তবে এই মারপিটের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় সচেতন মহলে উঠেছে নিন্দা ও ক্ষোভের ঝড়।

সচেতন মহলের অনেকেরই প্রশ্ন, একজন মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের কি সুস্থভাবে স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার নেই?? সে যদি প্রকৃত অপরাধীও হয় তবুও কি এইভাবে নির্মম নির্যাতন করার অধিকার কথিত মাতব্বরের আছে? তারা কেন নিজের হাতে আইন তুলে নিলো? তার উপর এমন অকল্পনীয় নির্যাতনের ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তার সাথে হওয়া এমন জঘন্য অপরাধের সাথে যারা জড়িত সেইসব অপরাধীদের অতিদ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন বগুড়ার সুধী ও সচেতন মহল।

এ বিষয়ে জানতে নিশিন্দারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

Related Article