২৩ নভেম্বর, ২০২২
ছবি: বগুড়ার প্রধান কার্যালয়
নবগঠিত বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের কমিটি কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ এখন একে অন্যের মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। এর ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দলীয় কার্যালয়ে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। সেখানে বুধবার নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে কমিটি বাতিলের দাবিতে মাঠে ছাত্রলীগের কয়েক'শ নেতাকর্মী বুধবার দেখা গেলেও কমিটির নেতাদের দেখা মেলেনি।
জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ প্রেস রিলিজের মাধ্যমে জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষনার পর জেলা ছাত্রলীগের ২০টি ইউনিটের মধ্যে ১৫টি ইউনিট ক্ষুদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ মিছিল এবং দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এরপর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে কমিটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। এমন অবস্থায় জেলা ছাত্রলীগ বগুড়া সদর উপজেলা এবং সরকারি আজিজুল হক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করেছে।
গত মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহা ও সাধারণ সম্পাদক আল মাহিদুল জয় স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ ব্যাপারে জানানো হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, দুই ইউনিটের কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সংগঠনকে গতিশীল করতে নতুন কমিটি গঠনে পদ প্রত্যাশীদের আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে জীবনবৃত্তান্ত জমাদানের আহ্বান জানানো হয়।
এ পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে ছাত্রলীগ, বগুড়া জেলা শাখার সদ্য ঘোষিত অযোগ্য, অছাত্র, ব্যবসায়ী, মাদক মামলার আসামি, বহিরাগত, খুনিদের ও জেলা ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ত না থাকা ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে সাতমাথাস্থ ঐতিহাসিক মুজিব মঞ্চে ছাত্র-গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, তাকবির হত্যাকারীদের ছাত্রলীগে ঠাঁই হবে না। জেলা ছাত্র রাজনীতির সাথে সম্পর্ক নেই এমন ব্যক্তিদেরকে ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে মেনে নেয়া হবে না। ব্যবসায়ী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রাজনীতির সাথে সম্পর্কহীন ব্যক্তি মূল নেতৃত্বে আসতে পারে না। তৃণমূল নেতাকর্মীদের একটাই চাওয়া অবিলম্বে ঘোষিত অযোগ্য কমিটি বাতিল করে যোগ্যদের দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করা হোক। অন্যথায় বগুড়া রাজপথে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সদ্য বিলুপ্ত ছাত্রলীগ, বগুড়া সদর উপজেলা শাখার সভাপতি মো: ওবাইদুল্লাহ সরকার স্বপনের সভাপতিত্বে ও সরকারি আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন বুলবুলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন নিহত ছাত্র লীগ নেতা তাকবীর ইসলাম খানের মাতা আফরোজা বেগম, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেন, কাহালু উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৌগির আহমেদ রিতু, নন্দীগ্রাম উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শুভ আহম্মেদ, শাজাহানপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রঞ্জু, শেরপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা, শিবগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুম পারভেজ মুকুল, ধুনট উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাকারিয়া খন্দকার, শহর ছাত্রলীগের সভাপতি সুজিত কুমার দাস, সরকারি শাহ সুলতান কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক মো: আব্দুর রাব্বী স্বাধীন, গাবতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গফুর বিপ্লব, দুপচাঁচিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুর ইসলাম, সারিয়াকান্দি উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক দুলাল হোসেন, সোনাতলা নাজির আক্তার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মো: সুমন, সরকারি সান্তাহার ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাজন কুমার।
সমাবেশে সাবেক ছাত্রনেতারা দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন। সাবেক ছাত্রনেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহন, সাবেক সভাপতি শুভাশীষ পোদ্দার লিটন, সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম ডাবলু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাশরাফী হিরো, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার রায়, অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম দুলু, সাবেক ছাত্রনেতা মাইসুল তোফায়েল কয়েল, মাহমুদ ফেরদৌস সেলিম, উদয় কুমার বর্মন, মাফুজুল আলম জয়, শেখ এজাজুল হক ডনেল, রবিউল ইসলাম লিটন, জাকিউল আলম জনি প্রমুখ।