০৯ নভেম্বর, ২০২২
ছবি: হার না মানা পরিক্ষার্থী আয়শা খানন
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় সন্তান প্রসবের পরে বাবার মৃত্যুর পরদিন পরীক্ষায় বসেছে শোকে কাতর হার না মানা অদম্য শিক্ষার্থী আয়শা খানম। আয়শা উপজেলার পূর্ব পয়সা গ্রামের আনিচ বক্তিয়ারের মেয়ে এবং বাগধা স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার সকালে সরকারী শহীদ আব্দুর রব সেনিয়াবাত ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রের ৪০১নং কক্ষে বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা দিয়েছেন আয়শা। ওই কেন্দ্র কর্তব্যরত কর্মকর্তা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহম্মদ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শোকে কাতর ওই পরীক্ষার্থীর বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন সমাজে হার না মানা মনোবলের এমন মেয়ের নজির খুবই কম আছে। যেখানে ইচ্ছাকৃত ভাবে মেয়েরা বিয়ের পরে লেখাপড়া ছেড়ে দেয় সেখানে এই শিক্ষার্থী বিয়ের পরেও লেখাপড়া চালিয়ে গিয়ে সন্তান জন্ম দেয়ার একদিন পরে তার বাবার মৃত্যুর পরেও পরীক্ষায় বসেছেন শিক্ষার্থী আয়শা খানমের স্বামী পার্শবর্তি কোটালীপাড়া উপজেলার চিত্রাপাড়া গ্রামের বীর বিক্রম ফায়েদুজ্জামান শেখ এর ছেলে রাকিবুল ইসলাম জানান, তিনি পেশায় কোটালীপাড়ায় ফল ব্যবসায়ী। তাদের বিয়ে হয়েছে এক বছর তিন মাস। বিয়ের পরে তার স্ত্রী আয়শা খানমের অদম্য ইচ্ছার কারনে সংসারের কাজ কর্মের সাথে লেখাপড়াও চালিয়ে আসছিল। চিকিৎসকের তথ্য অনুযায়ি অনাগত সন্তানের ভুমিষ্ট হবার তারিখের মধ্যে চলতি এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শারীরিক মানসিক দুঃসময়ের মধ্যে তার স্ত্রী আয়শা পরীক্ষা শুরুর আগের দিন ৫ নভেম্বর শনিবার দুপুরে বাবার বাড়িতে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। ৬নভেম্বর রোববার সকালে তার বাবা আনিচ বক্তিয়ার বার্ধক্যজনিত কারণে ব্রেইন ষ্ট্রোক করে মারা যায়। সন্তান জন্ম দেয়ার একদিন পরে পিতার মৃত্যুর পর পরিবার থেকে আয়শাকে পরীক্ষা দেয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। কিন্তু সব বাধা ও আশংকা উপেক্ষা করে আয়শা পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা জানায় এবং সেই অনুযায়ী মঙ্গলবার বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেছে। পরীক্ষা শেষে আয়শা জানায়, তার পরীক্ষা মোটামুটি ভালই হয়েছে। শারীরিক ও মানসিক সমস্যার মধ্যেই সে নিজেকে শক্ত রেখে পরীক্ষায় অংশ নেয়। সমস্যা যতই হোক তা এক সময় কাটবেই কিন্তু এবছর পরীক্ষা দেয়ার সময় আর থাকবে না বলেই তিনি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। তিনি সকলের কাছে তার সন্তানের জন্য দোয়া চেয়েছেন।